রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতনের সাড়ে ৪ মাস পর চিকিৎসাধীন নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নেতা অলিউজ্জামান ওরফে মন্টু (৬৮) মৃত্যুবরণ করেছেন। ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার বিকালে তিনি মারা যান।

তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভাতিজা আবু হানিফ সুজা।

মন্টু জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবদুল ওয়াদুদ দারার চাচাতো ভাই।

মন্টু পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন।

আবু হানিফ জানান, বিকাল ৪টার দিকে তার চাচার মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা থেকে লাশ নিয়ে তারা বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, তার চাচাকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতনের পর থেকে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। এই নির্যাতনের পর থেকেই তিনি গুরুতর অসুস্থ ছিলেন। প্রথমে তাকে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং সর্বশেষ ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

মন্টুর বাড়ি পুঠিয়া উপজেলার বিড়ালদহ গ্রামে। তার বিরুদ্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ ছিল। চাচাতো ভাই আবদুল ওয়াদুদ দারা রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। মন্টু ‘পুঠিয়া-দুর্গাপুরের শিক্ষামন্ত্রী’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে যান মন্টু। এরপর ২ জানুয়ারি রাতে তিনি বাড়িতে ফিরেছিলেন। ৪ জানুয়ারি সকাল ১০টার দিকে তিনি পাশের মাইপাড়া বাজারে চা পান করতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বিএনপির লোকজন তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে বিড়ালদহ বাজারের পাশে নন্দনপুর নিয়ে যান। সেখানে সড়কের পাশে একটি বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে তাকে পেটানো হয়। পিটিয়ে তার দুটি পা ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

পুঠিয়া থানার ওসি কবির হোসেন শুক্রবার রাতে বলেন, ওই ঘটনার পর পরিবারের কেউ মামলা করেনি।

মন্টুর মৃত্যুর বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, এখনো আমি এটা শুনিনি। দেখি, খোঁজখবর নিই।