Logo
Logo
×

সারাদেশ

অবৈধ বাঁধে তলিয়ে গেল ৩ হাজার বিঘা জমির ধান

Icon

চাঁপাইনবাাবগঞ্জ (নাচোল) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ১২:১৯ এএম

অবৈধ বাঁধে তলিয়ে গেল ৩ হাজার বিঘা জমির ধান

ছবি : যুগান্তর

বিলে পানি ধরে রাখতে তিন বছর আগে বাঁধ নির্মাণ করে ইজারাদার। তবে, বিষয়টি সম্পর্কে পানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (পাউবো) কিছুই জানায়নি তিনি। এবার সেই বাঁধের জেরে তলিয়ে গেল বিলের আশপাশে থাকা তিন হাজার বিঘা জমির ধান। এমনকি, তলিয়ে যাওয়া ধানে গজাতে শুরু করেছে চারা। এতে বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা। ঘটনাটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের হাজারদিঘী খালের।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার তিন ইউনিয়নের পাঁচ মৌজার মধ্যে থাকা হাজারদিঘী বিলের পানি আটকে রাখতে বিশুক্ষেত্র এলাকায় পানি নিষ্কাশনের নালায় এ বাঁধ দেওয়া হয়। পাউবো চাঁপাইনবাবগঞ্জকে না জানিয়েই তিন বছর আগে অবৈধভাবে বাঁধটি নির্মাণ করে বিলের ইজারাদার নাসিম।  এর ফলে বৃষ্টির পানি নালা দিয়ে নামতে না পারায় ডুবেছে পাকা ধান।

সোমবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাজারদিঘীর বিলের আশপাশে হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমির পাকা ধান গাছ পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। পানির নিচে থাকা ধানে পচন ধরেছে। কয়েকজন কৃষককে কোমর পানির মধ্যে ধান কাঁটছেন।

স্থানীয় কৃষক আব্দুল কাদির বলেন, ‘আমার ২০ বিঘা জমির পাকা ধান তলিয়ে গেছে। আমাদের স্বপ্নগুলো এখন পানির নিচে। এর একমাত্র কারণ অবৈধভাবে নির্মিত বাঁধ। নালায় দেওয়া বাঁধের কারণে বৃষ্টির পানি নামতে পারছে না।’

স্থানীয় কৃষক বাইরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘হাজারদিঘী বিলে আমার ১০ বিঘা জমি রয়েছে। কিছুদিন আগে বৃষ্টির পানিতে আমার পাকা ধান গাছ তলিয়ে যায়। নালায় বাঁধ নির্মাণের কারণে পানি নামতে পারছে না। এ পাকা ধান কৃষক আর ঘরে তুলতে পারবে না। বাঁধের জন্য আমাদের হাজার হাজার কৃষকের স্বপ্ন ভেঙে গেছে।’

 

স্থানীয়রা জানান, নির্মাণের পরপরই বাঁধটি পরিদর্শনে আসেন নাচোল ও গোমস্তাপুরের ইউএনও। তখনই ইজারাদারকে বাঁধটি ভাঙার নির্দেশ দেন তিনি। তবে ইজারাদার তা এখন পর্যন্ত বাঁধ ভাঙেনি।

কৃষক আপন, রুবেল ও বাইরুল অশ্রুঝরা চোখে বলেন, ‘হাজারদিঘী বিলে আমাদের ১০০ বিঘা জমি রয়েছে। বর্তমানে সমস্ত ফসলি জমিতে থাকা পাকা ধান গাছ তলিয়ে আছে। স্থানীয় কৃষকদের বাধা উপেক্ষা করে তিন বছর আগে সরকারি নালায় অবৈধভাবে বাঁধ নির্মাণকাজ শুরু করে হাজারদিঘী বিলের ইজারাদার নাসিম। কয়েকশ কৃষক অনুরোধ করলেও তা শোনেননি ইজারাদার। এতে বিলের অতিরিক্ত পানি চলাচলে বাধা পেলে তলিয়ে যায়  হাজার হাজার বিঘার জমির ধান। আমরা চাই, অবৈধ এ বাঁধ ভেঙে বিলের অতিরিক্ত পানির অবাধ চলাচল নিশ্চিত করা হোক।’

অভিযোগের বিষয়ে হাজারদিঘী বিলের ইজারাদার নাসিম বলেন, ‘বিলের ইজারা বাবদ সরকারকে প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা রাজস্ব দিতে হচ্ছে। কিন্তু, বিলে পানি থাকছে না। পাানি না থাকার কারণে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নীলূফা সরকার বলেন, ‘বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম