বগুড়ায় বালিকা বিদ্যালয়ের ছয় বস্তা বই বিক্রির চেষ্টা, নৈশপ্রহরীর পলায়ন
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৫, ০৯:৪৪ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বগুড়ার সোনাতলা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী মোনারুল ইসলাম মোনাইয়ের বিরুদ্ধে ছয় বস্তা বই বিক্রির চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার রাতে রিকশাভ্যানে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির নতুন বইগুলো নিয়ে যাওয়ার পথে পৌরসভার সামনে জনগণ টের পেয়ে থামালে নৈশপ্রহরী পালিয়ে যায়।
পরে সোনাতলা থানা পুলিশ বইগুলো জব্দ করে থানায় নিয়ে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোনাতলা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী মোনারুল ইসলাম মোনাই মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে প্রতিষ্ঠান থেকে ছয় বস্তা বই নিয়ে রিকশাভ্যানে তোলেন। এরপর বইগুলো তিনি বিক্রির জন্য অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। রিকশাভ্যান সোনাতলা পৌরসভা এলাকায় পৌঁছলে জনগণের সন্দেহ হয়। তারা ভ্যানটি থামিয়ে বস্তায় ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির নতুন পাঠ্যবই দেখতে পান। এ সময় কৌশলে নৈশপ্রহরী মোনারুল ইসলাম মোনাই পালিয়ে যান। পুলিশ এসে বইগুলো জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে ফোনে নৈশপ্রহরী মোনাই দাবি করেন- প্রধান শিক্ষক মনোয়ারুল ইসলাম শাহীনের নির্দেশে তিনি বইগুলো বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ ঘটনায় জনগণের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। সবাই অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের শাস্তি দাবি করেন।
এ প্রসঙ্গে সোনাতলা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোয়ারুল ইসলাম শাহীন জানান, তিনি শিবগঞ্জ উপজেলার দেউলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। গত ২০১৬ সালের ১৬ জুন স্কুলে যোগদান করেন। এরপর হতে তিনি কয়েকজন ভিন্ন রাজনৈতিক দলের সহকর্মীদের রোষানলে পড়েন। তার বাড়ি শিবগঞ্জে হলেও ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সোনাতলা থানায় তার বিরুদ্ধে দুটি নাশকতার মামলা দেওয়া হয়। এর একটি আওয়ামী লীগ নেতার ছেলের বাড়িতে আগুন ও তিনি স্কুলে যোগদানের দুই বছর আগে ২০১৪ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি বিএনপি অফিসে হামলা। দুটি মামলার কারণে তিনি ঠিকমতো স্কুলে যেতে পারছেন না। অথচ সহকারী শিক্ষক আবদুল হাইয়ের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষরা তাকে সবসময় হয়রানি করে যাচ্ছেন। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে নৈশপ্রহরীকে দিয়ে বই পাচারের চেষ্টা করা হয়। আর নৈশপ্রহরী তাদের নির্দেশমতো তাকে (প্রধান শিক্ষক) দায়ী করছেন।
তিনি আরও জানান, বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল ইসলামকে অবহিত করেছেন। তিনি ঢাকা থেকে ফিরলে বই চুরির ঘটনায় মামলা করবেন। এছাড়া জানার চেষ্টা করবেন, এ বই চুরির নেপথ্যে কে রয়েছেন।
বগুড়ার সোনাতলা থানার ওসি মিলাদুন্নবী জানান, ঘটনাস্থল থেকে ভ্যানে থাকা ছয় বস্তা বই জব্দ করেছেন। কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া বুধবার বিকাল পর্যন্ত এ ব্যাপারে মামলা হয়নি।
