|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বগুড়ায় বিএনপি নেতা এখলাস হোসেন মন্ডল বাহিনীর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে শাখারিয়া ইউনিয়নের চালিতাবাড়ি গ্রামের সাধারণ জনগণ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে পাঁচবাড়িয়া ও চালিতাবাড়ি গ্রামবাসীদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় এখলাস বাহিনী ৪-৫টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। সংঘর্ষে অন্তত আটজন আহত হয়েছেন। এ নিয়ে বুধবার সদর থানায় পালটাপালটি অভিযোগ করায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সংঘর্ষের পর যৌথ বাহিনী দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার ও কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে। আগামীকাল অনুষ্ঠেয় এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা নিয়ে এলাকার শতাধিক শিক্ষার্থী নিরাপত্তা শঙ্কায় রয়েছে।
অভিযোগে জানা গেছে, বগুড়া সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও শাখারিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি ও পাঁচবাড়িয়া গ্রামের এখলাস হোসেন মন্ডল দলের নাম ভেঙে পাশের চালিতাবাড়ি গ্রামে প্রতিনিয়ত প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, অসহায় মানুষকে হত্যার হুমকি, মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবি করছেন। আর এতে তাকে সহযোগিতা করছেন ভাতিজা সন্ত্রাসী সাগর, স্বপন, সোহেল, শিমুল, জয়, জিলহজ্জ ও গালকাটা শিহাব। এখলাস বাহিনীর বিরুদ্ধে থানায় একাধিক অভিযোগ করা হলেও প্রশাসন এ বিষয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছে। নির্যাতনের শিকার চালিতাবাড়ি গ্রামবাসী এখলাস ও তার বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতারের দাবিতে রোববার এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন। এতে রাতেই ওই বাহিনীর সদস্যরা মোটরসাইকেল বহর নিয়ে গ্রামবাসীদের হুমকি দিয়ে আসে। এর প্রতিবাদে সোমবার দুপুরে শহরের সাতমাথায় মানববন্ধন কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দেন গ্রামবাসী।
বগুড়া ডিবি পুলিশ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় এখলাস গ্রুপের লোকজন ও চালিতাবাড়ি গ্রামের লোকজনের মধ্যে ধাওয়া-পালটাধাওয়া ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এর আগে এখলাস বাহিনী মসজিদের মাইকে সংঘর্ষের ঘোষণা দেয়। তারা ৪-৫টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। আধা ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে চালিতাবাড়ি গ্রামের অন্তত আটজন আহত হন। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাতেই সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা যৌথ অভিযান চালিয়ে রামদা, চাপাতিসহ বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেন। এ সময় হামলায় জড়িত এখলাস পক্ষের মন্ডলধরন গ্রামের রহমান আলী, কুটুরবাড়ি গ্রামের রোকন মিয়া ও একই গ্রামের রকি মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিএনপি নেতা এখলাস তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, চালিতাবাড়ি গ্রামের লোকজন মাইকে ঘোষণা দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। এ সময় তিনি বা তার লোকজন কোনো ককটেল বিস্ফোরণ ঘটাননি। এখলাস দাবি করেন, শাখারিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে একবার ধানের শীষ প্রতীকের এবং দুবার স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। প্রতিপক্ষ পরিকল্পিতভাবে তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছেন।
বুধবার দুপুরে ওই বিএনপি নেতার পক্ষে প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন তার ভাতিজার স্ত্রী মারজিয়া খাতুন। তিনি দাবি করেন, এখলাসের নামে মিথ্যা অভিযোগ তুলে তাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তার সমর্থকদের বাসাবাড়িত হামলা চালানো হচ্ছে। মালয়েশিয়া প্রবাসী যুবদল নেতা মিনহাজ মন্ডলের গরুর খামার ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে।
বগুড়া পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আতোয়ার রহমান জানান, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ হয়। পরে যৌথ বাহিনীর অভিযানে ধারালো অস্ত্র জব্দ ও সংঘর্ষে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ওইসব গ্রামের পরীক্ষার্থীদের কোনো ভয় নেই।
