আদমদীঘিতে ক্লিনিকে প্রসূতির মৃত্যু, তদন্ত কমিটি গঠন
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৫, ১০:৩৫ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহারে ফেমাস ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে টপি বেগম (৩২) নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের দাবি, ভুল ইঞ্জেকশনের কারণে টপির মৃত্যু হয়েছে। কর্তৃপক্ষের অবহেলায় তার মৃত্যুর অভিযোগে আত্মীয়-স্বজন ও স্থানীয়রা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।
শুক্রবার রাতে এ ঘটনার পর ক্লিনিকে তালা দিয়ে ও ফোন বন্ধ করে লোকজন পালিয়ে গেছেন। এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবকার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফজলে রাব্বি।
স্থানীয়রা জানান, মৃত টপি বেগম বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার পৌরসভার পৌঁওতা টিকড়ি গ্রামের আবদুল মান্নানের স্ত্রী। স্বজনরা অন্তঃস্বত্ত্বা টপি বেগমকে সন্তান প্রসবের জন্য শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে সান্তাহারে ফেমাস ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করেন।
সন্ধ্যার পর হঠাৎ করে প্রসূতি টপি বেগমের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। তখন ক্লিনিকের দায়িত্বরতরা বলেন, এখানে প্রসব হবে না। এরপর তাকে নওগাঁ জেলা সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। নওগাঁয় নেওয়ার পথে টপি বেগম মারা যান। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্লিনিকের সামনে এসে কর্তৃপক্ষের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন আত্মীয়-স্বজন ও স্থানীয়রা।
তারা বলেন, এখানে চিকিৎসা দেবেন না, তাহলে কেন দিনভর প্রসূতিকে রাখা হলো। মৃত টপি বেগমের প্রতিবেশি মোজাম্মেল হক বলেন, ক্লিনিকের দায়িত্বরতদের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। তারা বলেন, প্রসূতিকে একটি ইঞ্জেকশন দেওযার পরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের ধারণা, ভুল ইঞ্জেকশনের কারণে প্রসূতি টপির মৃত্যু হয়েছে।
খবর পেয়ে সান্তাহার পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এ সুযোগে ক্লিনিকের লোকজন দরজায় তালা দিয়ে কৌশলে পালিয়ে যান।
স্থানীয়রা জানান, কয়েক বছর আগেও এ ক্লিনিকে অবহেলায় এক রোগীর মৃত্যু হয়েছিল। কোনো কিছুর বিনিময়ে টপি বেগমের ঘটনাও মিমাংসা করা হবে।
শনিবার বিকালে আদমদীঘি থানার ওসি এসএম মোস্তাফিজুর রহমান ও সান্তাহার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর হাবিবুর রহমান বলেন, পরিবার থেকে কোনো অভিযোগ না দেওয়ায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই প্রসূতি টপি বেগমের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরিবার থেকে অভিযোগ দিলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আদমদীঘি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফজলে রাব্বি বলেন, ফেমাস ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বৈধ কাগজপত্র আছে। রেফার্ডের পর রোগীকে নওগাঁ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। কেউ অভিযোগ না করায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
