সেই যমজ এবার একসঙ্গে হলেন চিকিৎসক
বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৯:১৪ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ওরা যমজ ভাই। তাদের বয়স যখন ৫ বছর, তখন তাদের বাবা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। মা আর বড় দুই ভাইয়ের অদম্য চেষ্টায় শিক্ষা জীবনের পথে ওরা বয়ে আনে বিস্ময়কর সাফল্য।
তাদের শিক্ষাজীবনের সেসব সাফল্য ছিল জোড়ায় জোড়ায়। এবার সেই যমজ ভাই একসঙ্গে হলেন চিকিৎসক।
সম্প্রতি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ থেকে দুই ভাই এমবিবিএস সম্পন্ন করেছেন।
ওদের একজন খালেদ মাহমুদ এবং অপরজন খালেদ আযম। তারা দুজনে নাটোরের বাগাতিপাড়ার মাছিমপুর গ্রামের মৃত উদ্দিনের ছেলে। চেহারায় দুজনে যেমন এক, তেমনি শৈশব থেকে সব শ্রেণিতে সাফল্যও একই রকম।
২০১৯ সালে মেডিকেল কলেজে, রুয়েটে এমনকি একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একই সঙ্গে দুই ভাই ভর্তির সুযোগ পেয়ে তাক লাগান। তাদের এমন জোড়ায় জোড়ায় সাফল্যে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। সেই সময় ওদের দুই ভাইয়ের কৃতিত্বে উপজেলার লক্ষণহাটী স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ সংবর্ধনা ও সম্মাননা ক্রেস্ট দেন।
এ নিয়ে যুগান্তরে ‘বাগাতিপাড়ায় যমজ ভাইয়ের সাফল্য’ শিরোনামে তাদের সাফল্যের গল্প তুলে ধরে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
দুই ভাই খালেদ মাহমুদ এবং খালেদ আযমের সঙ্গে কথা হলে তারা জানালেন তাদের সাফল্যের কাহিনী। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে দুজনই প্রাথমিক ও জুনিয়র বৃত্তি, এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ-৫সহ দুজনই শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত বৃত্তি লাভ করেন। এছাড়াও দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রত্যেক শ্রেণিতে দুই ভাই এক সমান নম্বর পেয়ে শ্রেণিতে একই অবস্থান অর্জন করতেন। এরপর একই সঙ্গে দুই ভাই মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। একই সময় রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট), ঢাকা, জগন্নাথ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় দুই ভাই একসাথে ভর্তির সুযোগ পান।
একদিকে সাফল্য যেমন যমজ আকারে তাদের ধরা দেয়, আবার ব্যর্থতাও তাদের জীবনে আসে যমজভাবে। সেই বছর শুধুমাত্র বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে দুজনের কেউই সুযোগ পাননি।
তারা আরও জানান, বাবার মৃত্যুর পর মা মেহেরনেকা তাদের কঠোর অধ্যবসায় মনোনিবেশ করান। আর বড় দুই ভাই তাদের পড়ালেখার আর্থিক খরচ জোগান দেন। বড় ভাই আরিফুল ইসলাম ব্র্যাকে এবং মেজো ভাই মিজানুর রহমান স্থানীয় একডালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত।
ভাই মিজানুর রহমান জানান, দুই ভাইয়ের যমজ সাফল্যে নিজেরাও বিস্মিত হই। স্থানীয়রা এ নিয়ে অবাক হতেন। শিক্ষাজীবনের শেষে একসঙ্গে দুইজনই এমবিবিএস শেষ করায় পরিবারের সবাই বেশ খুশি।
