Logo
Logo
×

সারাদেশ

এসপিসহ ৪ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

Icon

রাজশাহী ব্যুরো

প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২৫, ১১:৫৭ এএম

এসপিসহ ৪ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

আটকের পর পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি)সহ চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেছেন এক বিএনপি নেতা। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) শাহনাজ খাতুন নামে বিএনপির এক নেত্রী চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিচারিক আদালতে এ মামলার আবেদন করেছেন।

নির্যাতনের অভিযোগে হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট বিচারিক আদালতে মামলার আবেদন করেছেন। বাদীর আবেদন গ্রহণ করে আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট উজ্জ্বল মাহমুদ বুধবার বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে পরবর্তীতে আদেশ দেবেন বলে জানা গেছে।

মামলার বাদী শাহনাজ খাতুন ভোলাহাট উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এবং ওই উপজেলার সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। বিএনপি নেত্রীর আইনজীবী শফিকুল হক বুলু এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বাদীর আইনজীবী আরও জানান, আসামিরা প্রভাবশালী পুলিশ কর্মকর্তা হওয়ায় আমরা জুডিশিয়াল তদন্তের আবেদন করেছি।

মামলায় যাদের আসামি করার আবেদন করা হয়েছে তারা হলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার রেজাউল করিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইয়াসির আরাফাত, ভোলাহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মতিউর রহমান রওশন।

বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম বুলু আরও বলেন, আটকের পর বিএনপি নেত্রী ও ভোলাহাট উপজেলার সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের শাহনাজ খাতুনের ওপর অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছে। আদালতে তিনি নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছেন। আমরা নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন, ২০১৩-এর ৫ ধারায় মামলা নিতে আবেদন করেছি বিজ্ঞ আদালতে। বাদী ও সাক্ষীদের জবানবন্দি গ্রহণের পর বিজ্ঞ আদালত এ বিষয়ে আদেশ দেবেন।

মামলার আবেদন ও অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) এএনএম ওয়াসিম ফিরোজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জানান, একটি মামলার আসামি হিসেবে বিএনপি নেত্রী শাহনাজ খাতুনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। আইনের সব বিধি অনুসরণ করে এবং নারী পুলিশের সহায়তায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২৮ জুন রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে বাদী শাহনাজ খাতুন তার ব্যক্তিগত কাজে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে পথিমধ্যে আসামিরা তার পথরোধ করেন। সে সময় পথরোধের কারণ জানতে চাইলে তার বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে বলে জানায়। বাদী গ্রেফতারী পরোয়ানার কাগজ দেখতে চাইলে মামলার প্রধান আসামি তাকে ভর্ৎসনা করে বলেন, ‘তোকে গ্রেফতার করতে ওয়ারেন্টের কাগজ দেখাতে হবে, তুই খুব বড় চেয়ারম্যান হয়েছিস না। ’ পরে অন্যান্য আসামিরা নারী পুলিশ ছাড়াই তাকে জোরপূর্বক চ্যাংদোলা করে পুলিশের একটি গাড়িতে তুলে নেন। তাকে নিয়মানুযায়ী ভোলাহাট থানায় না নিয়ে জেলা সদরে নেওয়ার জন্য শিবগঞ্জের পথে রওনা হয়। পথিমধ্যে গাড়ি থেকে নামিয়ে অজ্ঞাত স্থানে একটি আম বাগানের মধ্যে নিয়ে তাকে বিবস্ত্র করে শ্লীলতাহানি ঘটানো হয়। একপর্যায়ে বেত্রাঘাত করা ছাড়াও অন্য আসামিরা তাকে এলোপাথাড়ি কিল ঘুসি ও লাথি মারতে থাকে। এ সময়ে তার প্রতি অশালীন ও কূরুচিপূর্ণ কথাবার্তা বলা হয়। তার কাছে থাকা ৭৫ হাজার টাকা কেড়ে নেওয়া হয়।

এজাহারে আরও বলা হয়, তাকে কোনো প্রকার চিকিৎসা না দিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে তাকে একটি পরিত্যক্ত ঘরে আটকে রাখা হয়। ভোর আনুমানিক ৪টার দিকে চোখ বেঁধে এবং হাত পিঠমোড়া করে বেঁধে ব্যাপক শারিরীক নির্যাতন করে আসামিরা। পরদিন বিকেল ৪টার দিকে তাকে আদালতে তোলা হয়। এর আগে তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম