ঝড়ো বাতাসে উত্তাল মেঘনা-সাগর মোহনা, ১৩ জেলেসহ ট্রলার ডুবি
ভোলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৫, ০৫:২৯ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
নিম্নচাপের প্রভাব ও তীব্র ঝড়ো দমকা বাতাসে উত্তাল হয়ে পড়েছে মেঘনা নদী ও সাগর মোহনা। ভোলায় শুক্রবার ভোর থেকে ঝড়ো বাতাসের কারণে একের পর এক উত্তাল ঢেউ আছড়ে পড়ছে। এতে ইলিশা ফেরি ও লঞ্চঘাটের পন্টুন বিধ্বস্ত হয়।
শুক্রবার দুপুর ৩টায় ফেরির দায়িত্বে থাকা ম্যানেজার কাওসার হোসেন জানান, এমন ঢেউয়ের কারণে ঘাট রক্ষা করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছেন।
এদিকে রাজাপুর ইউনিয়নের জনতা বাজারের পাশে মিজি বাজারের কামাল চৌকিদার (কামাল সরদার) মাঝির ট্রলার ১৩ যাত্রীসহ হাতিয়ার কাছাকাছি টেঙ্গার চর এলাকায় ডুবে গেছে। এতে ১২ জেলে উদ্ধার হলেও জেলে মো. জসিম উদ্দিন নিখোঁজ রয়েছেন।
জসিম ইলিশা কন্দবপুর ৩নং ওয়ার্ডের মহিন দেওয়ানের ছেলে।
ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির সভাপতি মো. এরশাদ ও সংগঠনের সম্পাদক শেখ মামুন জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মাছ ধরে কামাল মাঝির ট্রলার ফিরছিল। এ সময় বাতাসের তোড়ে ট্রলারটি ডুবে যায়।
এদিকে বৈরী পরিবেশের কারণে সকাল থেকে ভোলা-লক্ষ্মীপুর, ভোলা (মির্জাকালু)-মনপুরা, মনপুরা-ঢাকা, মির্জাকালু-আলেকজান্ডার, বেতুয়া-ঢাকা রুটসহ আভ্যন্তরীণ ১০টি গুরুত্বপূর্ণ রুটে লঞ্চ, সি-ট্রাক ও ফেরি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ।
বিআইডব্লিউটিএর সহকারী পরিচালক মো. রিয়াদ হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে সাগরে ৩ নম্বর সর্তক সংকেত জারি করে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ওই নির্দেশের পর শুক্রবার লঞ্চ, সি-ট্রাক ও ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
লঞ্চ ও ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ভোলার ইলিশা ঘাটে আটকা পড়েছেন বহু যাত্রী। সকাল থেকে ১০টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে অনেক যাত্রী বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হয়। বাতাসের তোড়ে যাত্রীরা ঘাট এলাকায় অপেক্ষা করতেও পারছিল না। ঝড় বাতাসের কারণে মেঘনা নদীর পানি ফুলে-ফেঁপে ওঠে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানান, দৌলতখান মেঘনা নদীর চ্যানেলে জোয়ারের পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগের দিন ১২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
এদিকে ক্ষণে ক্ষণে দমকা বাতাসের কারণে বহুস্থানে রাস্তার পাশের ঘাঠ ভেঙে পড়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা যাচ্ছে না। ফলে ভোররাত থেকে জেলা সদরসহ উপজেলা পর্যায়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে আরও জনদুর্ভোগ বেড়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বে থাকা ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইউছুফ জানান, খেয়াঘাট সড়ক, তুলাতুলি, শিবপুর এলাকায় গাছ ভেঙে পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইন বিচ্ছিন্ন হয়। একই অবস্থা জেলার ৭ উপজেলায়।
এদিকে জেলা প্রশাসক জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের এমন হঠাৎ ঝড়ো বাতাসে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে নজর রাখতে বলা হয়েছে।
এদিকে পানির চাপ বাড়ায় ও অমাবস্যার জো থাকায় বেশ কিছু চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান।
