শরীয়তপুরে গণপূর্তের পিয়নের নামে ঘুস-বাণিজ্যের অভিযোগ
ভেদরগঞ্জ (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১ আগস্ট ২০২৫, ১২:৫৯ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
শরীয়তপুর গণপূর্ত বিভাগের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী (পিয়ন) জুলহাস প্যাদার বিরুদ্ধে শরীয়তপুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের স্থাপনা অধিগ্রহণের টাকা দ্বিগুণ করিয়ে দেওয়ার কথা বলে গ্রাহক থেকে কয়েক লাখ টাকার ঘুস-বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি নিয়ে শরীয়তপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী তাজির সরদার। ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে অভিযোগকারী তাজির সরদারকে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে জুলহাস সমঝোতার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর আঞ্চলিক মহাসড়ককে চারলেন সড়কে উন্নীত করার লক্ষ্যে সরকার জমি অধিগ্রহণ শুরু করে আরও আগে। এরই মধ্যে ৭ ধারার নোটিশ হয়ে গেছে অধিকাংশ স্থাপনার। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার পরিবর্তন হওয়ার পরে এখনো ৮ ধারার জন্য বরাদ্দ দেয়নি সরকার। কিন্তু ভেদরগঞ্জের চরগাজিপুর এলাকার চিত্র ভিন্ন। এখানে গণপূর্ত বিভাগের পিয়ন জুলহাস প্যাদাকে ১০% ঘুস দিলেই বিল হবে দ্বিগুণ এমনটাই প্রচলিত আছে।
অভিযোগপত্রে তাজির সরদার উল্লেখ করেন, তাকে স্থাপনার বিল দ্বিগুণ করে আট লাখ টাকা বাড়িয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমবার ১০% কমিশনের ৬০ হাজার টাকা ঘুস নেন জুলহাস প্যাদা। পরে তিন মাসের মধ্য ৮ ধারার নোটিশ পাইয়ে দেওয়ার কথা ছিল। তবে ৯ মাস পেরুলেও ৮ ধারার নোটিশ করাতে পারেননি জুলহাস। তবে ৮ ধারার নোটিশ করাতে না পরলেও তিনি আরও ২০ হাজার টাকা দাবি করছেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, চরকুমারিয়া ইউনিয়নের চরগাজিপুর এলাকায় অধিকাংশ মানুষ জুলহাস প্যাদাকে সড়কের অধিগ্রহণের স্থাপনার ক্ষতিপূরণের বিল দ্বিগুণ করার জন্য ১০% টাকা ঘুস দিয়েছেন। এছাড়া জুলহাস প্যাদা তার বাড়ির সামনে সরকারি খালের ওপর নতুন করে অবৈধভাবে স্থাপন নির্মাণ করে সরকারের টাকা তসরুপ করার পাঁয়তারা করছেন বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী তাজির সরদার বলেন, ‘সে (জুলহাস) আমাকে অধিগ্রহণের টাকা দ্বিগুণ করে দেবে বলে প্রথমে ৬০ হাজার টাকা নিয়ে কাজ না করেই এখন আরও ২০ হাজার দাবি করছে। বাকি টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় সে আমার কাজ করে দেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। তাই আমি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’
অভিযোগের বিষয়ে জুলহাস প্যাদা বলেন, ‘আমি তো ইঞ্জিনিয়ার না, আমি একজন পিয়ন। আমি কীভাবে বিল দ্বিগুণ করে দেব, আবার ঘুস নেব। আমার এলাকার শত্রুপক্ষ এগুলো করাচ্ছে। আমি নির্দোষ।’
শরীয়তপুর জেলা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শারমিন আক্তার বলেন, ‘জুলহাস প্যাদার বিরুদ্ধে তাজির সরদার নামে এক ব্যক্তি আমারা কাছে লিখত অভিযোগ দিয়েছেন। জুলহাসকে কারণ দর্শানো হবে। পরবর্তীতে অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে প্রকৃত অপরাধীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
