সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলী মাজরুই রহমানের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কর্মস্থলে অনুপস্থিতি, দায়িত্বে অবহেলা, অব্যবস্থাপনা ও নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় সুজানগর পৌর শহরের পাবনা-নাজিরগঞ্জ সড়কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে ‘সচেতন নাগরিক’ ব্যানারে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

মানববন্ধনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন এবং বক্তব্য দেন রুবেল শেখ, রিপন মোল্লা, সন্টু শেখ প্রমুখ।

রুবেল শেখ বলেন, ডা. আলী মাজরুই রহমান সপ্তাহের বেশিরভাগ সময় কর্মস্থলে থাকেন না। তিনি রাজশাহীতে অবস্থান করেন অথচ নিয়মিত পুরো মাসের বেতন-ভাতা তুলে নিচ্ছেন। ফলে এই হাসপাতালের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

সন্টু শেখ বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার পিতা আওয়ামী লীগের শাসনামলে রাজশাহী-৫ আসনের এমপি ছিলেন। সে কারণে তিনি ক্ষমতার দাপটে দায়িত্বে অবহেলা করে যাচ্ছেন। আমরা তার অপসারণ চাই।

অভিযোগের বিষয়ে ডা. আলী মাজরুই রহমান বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়। এটি একটি মহলবিশেষের ষড়যন্ত্র। আমি সব সময় সাধ্যমতো রোগীদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করি।

এ বিষয়ে পাবনার সিভিল সার্জন ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, সরকারি পদে থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা ও বেতন-ভাতা নেওয়া সম্পূর্ণ বেআইনি। ডা. মাজরুই রহমানকে নিয়মিত উপস্থিত না থাকায় পরপর দুইবার কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

প্রসঙ্গত, সুজানগর উপজেলার একমাত্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ২০০২ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫১ শয্যায় উন্নীত করা হয়। প্রায় ৩ লাখ ৩২ হাজার মানুষের চিকিৎসাসেবার জন্য প্রতিষ্ঠিত এই হাসপাতালে বর্তমানে জনবল সংকট প্রকট।

হাসপাতালের ১০ জন জুনিয়র কনসালটেন্টের স্থলে মাত্র একজন খাতা-কলমে কর্মরত থাকলেও তিনিও ডেপুটেশনে রয়েছেন পাবনা সদর হাসপাতালে। মেডিকেল অফিসারের ৯টি পদের বিপরীতে মাত্র ৫ জন চিকিৎসক কর্মরত এবং ৫ জনই ডেপুটেশনে ঢাকায় কর্মরত আছেন। ফলে বহু রোগী চিকিৎসাসেবা না পেয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।

উল্লেখ্য, ডা. আলী মাজরুই রহমান গত বছরের নভেম্বর মাসে সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন।