|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রাজশাহীর দুর্গাপুরে হত্যা মামলার এক আসামিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। একই ঘটনায় কুপিয়ে জখম করা হয়েছে নিহতের স্ত্রী ও ছেলেকে। রোববার (১০ আগস্ট) উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়নের অনন্তহোজাকান্দি গ্রামের অনন্তকান্দি বিলে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের নাম ওয়াজেদ আলী (৬৮)।
তিনি ওই গ্রামের বাসিন্দা। আর আহতরা হলেন, নিহতের স্ত্রী লাইলী বেগম (৬০) ও
ছেলে মাসুম আলী (২৮)। তারা বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয়রা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকালে ওই গ্রামের একটি পান
বরজে ওয়াজেদ আলীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়।
পরে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বেরা সাড়ে
৩টার দিকে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এলাকাবাসী জানায়, হত্যা মামলায় জামিনে এসে ওয়াজেদ আলী অনেকদিন গ্রামে
ছিলেন না। প্রতিপক্ষের হামলার ভয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াতেন। শুক্রবার রাতে তিনি নিজ
বাড়িতে ফিরেছিলেন। কিন্তু প্রতিপক্ষরা পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক তাকে কুপিয়ে হত্যা করে।
দুর্গাপুর থানা পুলিশ জানায়, গত ১৪ মে ওই গ্রামে দুপক্ষের সংঘর্ষে হাসিবুর
রহমান (৪৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হন। এ ঘটনায় হওয়া মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন
ওয়াজেদ আলী ও তার ছেলে মাসুম। তবে তারা আদালত থেকে জামিনে ছিলেন। জামিনে আসার পর প্রাণের
ভয়ে পার্শ্ববর্তী গ্রামের এক আত্মীয় বাড়িতে থাকতেন। শুক্রবার রাতে তারা নিজ বাড়িতে
ফিরেছিলেন।
দুর্গাপুর থানার ওসি দুরুল হোদা জানান, রোববার সকালে ছেলে মাসুমকে সঙ্গে
নিয়ে ওয়াজেদ আলী বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে অনন্তকান্দি বিলে নিজের পান বরজ দেখতে যান।
এ সময় একই গ্রামের একরামুল, ফয়সাল, এমদাদুল, হান্নান ও মান্নানসহ ১০ থেকে ১২ জনের একটি
দল লোহাড় রড, রাম দা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে বাবা-ছেলের উপর অতর্কিত হামলা করে। এতে ওয়াজেদ
আলী গুরুতর রক্তাক্ত জখম হন। ছেলে মাসুম তার বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে হামলার শিকার হন।
খবর পেয়ে ওয়াজেদ আলীর স্ত্রী এগিয়ে গেলে তাকেও কুপিয়ে জখম করা হয়।
ওসি বলেন, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে রোববার রাতে থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে
পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।
নিহতের স্ত্রী লাইলী বেগম বলেন, ‘হাসিবুর হত্যায় আমরা জড়িত না। কিন্তু
গ্রাম্য দলাদলির কারণে তারা আমার স্বামী ও ছেলেকে হত্যা মামলার আসামি করেছিল। কিছুদিন
আগে তারা আদালত থেকে জামিনে আসেন। তবে প্রতিপক্ষের লোকেরা প্রকাশ্যে প্রাণনাশের হুমকি
দিয়ে আসছিল। এ কারণে আমরা পরিবারসহ গ্রামে থাকতে পারতাম না। আমরা কয়েকবারই পুলিশের
কাছে নিরাপত্তা চেয়েছি। কিন্তু পুলিশ কোনো পদক্ষেপই নেয়নি। ’
তিনি আরও বলেন, হামলাকারীরা সন্ত্রাসী, তাদের ভয়ে এলাকায় কেউ কথা বলতে
পারে না। পুলিশও তাদেরকে কিছু বলে না। রোববার সকালে পরিকল্পিতভাবে আমার স্বামীকে হত্যা
করেছে। আমার ছেলের অবস্থাও ভালো না। ’
