দুই খাদ্য কর্মকর্তাকে হেনস্তা: শাফিকে বিএনপি থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত
রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২৫, ০২:০৩ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (টিসিএফ) নবী নওয়াজেস আমিন ও খাদ্য পরিদর্শক আমিরুল ইসলামকে হেনস্তা ছাড়াও কর্তব্যরত এক সাংবাদিকের মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার ঘটনায় আউচপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান ডিএম শাফিকুল ইসলাম শাফিকে দল থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ মঙ্গলবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা ও পরামর্শক্রমে ডিএম শাফিকে তার পদ থেকে অব্যাহতি ও দল থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হবে।
এদিকে ডিএম শাফির বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা ছাড়াও সাংবাদিকদের কাজে বাধাদানের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় জেলা বিএনপি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান তিনি। দলীয় সিদ্ধান্তটি ডিএম শাফিসহ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিকেও জানানো হয়েছে।
এছাড়া দুজন সরকারি কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত ও হেনস্তার অভিযোগে বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা ডিএম শাফিসহ তার ক্যাডারদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে খাদ্য বিভাগ।
জানা গেছে, ডিএম শাফি বাগমারা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক ডিএম জিয়াউর রহমানের ভাই। এলাকাবাসীর অভিযোগ ডিএম শাফির বিরুদ্ধে এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি, চাঁদাবাজিসহ ক্যাডার লালন পালনের অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগে জানা গেছে, গত ১৮ আগস্ট দুপুরে ডিএম শাফি ও ২০ থেকে ২৫ জন ক্যাডার নিয়ে বাগমারা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসে গিয়ে তাদের দেওয়া দলীয় তালিকা অনুযায়ী খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগের জন্য চাপ দেন। ক্যাডাররা এক পর্যায়ে টিসিএফ নবী নওয়াজেস আমিনকে টানাহেঁচড়া শুরু করে। ডিলার নিয়োগে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার কথা বলা হলেও শাফির ক্যাডাররা কাগজে খাদ্য নিয়ন্ত্রকের সই নেওয়ার চেষ্টা করে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে খাদ্য নিয়ন্ত্রক একই তলায় অবস্থিত উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিসে ঢুকে পড়েন। ক্যাডাররা তার পিছু নিয়ে পিআইও অফিসে যায়। এ সময় বিএনপি নেতা ডিএম শাফি এসে খাদ্য কর্মকর্তাকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করেন। খাদ্য নিয়ন্ত্রককে রক্ষা করতে গিয়ে খাদ্য পরিদর্শক আমিরুল ইসলামও হেনস্তার শিকার হন। এ সময় ঘটনার ভিডিও করার সময় প্রথম আলোর বাগমারা প্রতিনিধি মামুর অর রশিদের মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে যায় শাফির ক্যাডাররা। ঘটনার খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুল ইসলাম খাদ্য কর্মকর্তাকে উদ্ধার করেন। পরে সাংবাদিক মামুন অর রশিদের মোবাইল ফোনটি ফেরত দিয়ে শাফি ও তার ক্যাডাররা উপজেলা পরিষদ ত্যাগ করেন।
এদিকে বিএনপি নেতা ডিএম শাফি দুই খাদ্য কর্মকর্তাকে হেনস্তার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তার দাবি, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগের প্রতিবাদ করতে তারা সেখানে গিয়েছিলেন।
