Logo
Logo
×

সারাদেশ

শুনানিতে হাতাহাতি, রুমিন-আতাউল্লাহ সমর্থকদের পালটাপালটি কর্মসূচি

Icon

বিজয়নগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৫, ০৯:৩৫ পিএম

শুনানিতে হাতাহাতি, রুমিন-আতাউল্লাহ সমর্থকদের পালটাপালটি কর্মসূচি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনের খসড়া সীমানা নিয়ে শুনানিতে হাতাহাতির বিষয় নিয়ে দুই নির্বাচনি এলাকায় উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে।

রোববার বিকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককের শাহবাজপুর এলাকায় ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার পক্ষে বিক্ষোভ করেন স্থানীয় ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা অনুসারী বিএনপির নেতাকর্মীরা। 

অপরদিকে সোমবার (২৫ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে বিজয়নগর উপজেলা নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ডাকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককের চান্দুরা ডাকবাংলো মোড়ে বিক্ষোভ করেন সমর্থকরা। এতে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক মো. আতাউল্লাহ, বিজয়নগর উপজেলার প্রধান সমন্বয়ক আমিনুল ইসলাম চৌধুরীসহ শতাধিক নেতাকর্মী।

এ কর্মসূচি থেকে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার গ্রেফতার এবং হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তারা। 

আসনের খসড়া সীমানা নিয়ে শুনানির প্রথম দিন ২৪ আগস্ট দুপুরে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে শুনানি হয়। শুনানিতে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা নির্বাচন কমিশনের খসড়া প্রস্তাবের পক্ষে বক্তব্য দেন।

অপরদিকে বিজয়নগর উপজেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অখণ্ড বিজয়নগর উপজেলার পক্ষে বক্তব্য দেন। একপর্যায়ে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার সমর্থক ও এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা মো. আতাউল্লাহর মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, অন্য নির্বাচন কমিশনারসহ সবার সামনে হাতাহাতি হয়। 

কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার জন্মস্থান বিজয়নগর উপজেলার বুধন্তী ইউনিয়ন ইসলামপুর গ্রামে। তাই তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা সরাইল আশুগঞ্জের বহিরাগত বলে বিভিন্ন সভা, সেমিনারে উপহাস করেন। তার বাবা ভাষাসৈনিক প্রয়াত অলি আহাদ ১৯৭৩ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) সংসদীয় আসন থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তখন বুধন্তী ও চান্দুরা ইউনিয়নসহ ওই আসনে সীমানা ছিল অনেক বড়। সেটার সূত্র ধরে ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচন থেকে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা পৈতৃক আসনে নির্বাচন করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা নির্বাচন কমিশন খসড়া শুনানিতে দাবি করেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) ৬ লাখ ২১ হাজার ৫৮৬ জন ভোটার অপরদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) ৪ লাখ ১০ হাজার ৭৩ জন ভোটারের আসন। ভোটারের ভারসাম্য আনতে ৩ ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে যুক্ত করা যৌক্তিক। 

তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরের মধ্যে ৪৩ বছর এই ৩ ইউনিয়ন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) এর সঙ্গে ছিল না। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) বা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) সঙ্গে যুক্ত ছিল।

কেন্দ্রীয় বিএনপির অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক, জেলা বিএনপির সভাপতি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) সংসদীয় আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল জানান, বিজয়নগর উপজেলার হরষপুর, চান্দুরা, বুধন্তী ইউনিয়নের মানুষ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে যেতে চাইছে না। বিভিন্ন ভুল তথ্যের ভিত্তিতে তিনটি ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ তিন ইউনিয়ন সামাজিক, রাজনৈতিক, প্রশাসনিকভাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ সদর আসনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাই এই তিন ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের সঙ্গে রাখার দাবি জানানো হয়েছে।

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলে যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক মো. আতাউল্লাহ বলেন, বিজয়নগর উপজেলার সন্তান হিসেবে এ উপজেলার জনগণ আমাকে বলেছেন- আপনি যেহেতু নেতৃত্বের জায়গায় রয়েছেন, সেহেতু জনগণের পক্ষে আপনাকে ভূমিকা নিতে হবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) থেকে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা আমাদের বিজয়নগর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে যুক্ত করেন। তাই আমার এলাকার দাবি অনুযায়ী আমি বিষয়টি আপিল করেছি। এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আমার এলাকায় প্রতিদিন আন্দোলন হচ্ছে। 

তিনি বলেন, আমাকে বারবার হুমকি দেওয়া হয়েছে, আমি যেন শুনানিতে অংশগ্রহণ না করি। রুমিন ফারহানা ও তার গুন্ডাবাহিনী বিভিন্নভাবে আমাকে সরে যেতে বলছেন। ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা যেহেতু ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) নিতে চেয়েছেন, তিনি নিবেনই। আমি তাদের কথা না শুনে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতে অংশগ্রহণ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে প্রধান কমিশনারসহ সবার সামনে আমাকে প্রথম ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। তারপর তার গুণ্ডাবাহিনী নির্বাচন কমিশনের হলরুমে সবার সামনেই আমাকে মারধর করে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম