ধানখেতের আইলে মাহমুদুলের মাসিক আয় ৬ হাজার ৪শ টাকা
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:৫৯ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বগুড়ার সারিয়াকান্দির মাহমুদুল হাসান ধানখেতের আইলে পেঁপে চাষ করে সফল হয়েছেন। আইলে মাত্র ২৫টি গাছ থেকে নিজের পরিবারের চাহিদা মিটিয়েও প্রতি সপ্তাহে ১ হাজার ২শ টাকার পাকা পেঁপে বিক্রি করেন। কোনো গাছে এক মণেরও বেশি পরিমাণে পেঁপে ধরেছে। বলা চলে পতিত ধানক্ষেতের আইল থেকেও মাহমুদুলের মাসিক আয় ৬ হাজার ৪শ টাকা।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার সদর ইউনিয়নের পারতিতপরল গ্রামের গোলাম মোহাম্মদের ছেলে মাহমুদুল হাসান জানান, ফসলি জমির আইল পড়ে থাকে। এ আইল ফেলে না রেখে সেখানেও কিছু করা যায় কিনা- এ চিন্তা থেকেই মাত্র ১৫ শতাংশ একটি জমির চারপাশের আইলে পেঁপে গাছ রোপণের উদ্যোগ নেন। গত নভেম্বর মাসে তিনি তার জমির চারপাশে ১০০টির বেশি পেঁপে গাছ রোপণ করেন; কিন্তু বৃষ্টির কারণে তার জমির দুইপাশের আইলের পেঁপে গাছ মরে যায়।
তিনি বলেন, এখন বর্তমানে জমির দুই পাশের আইলে ২৫টি গাছ টিকে আছে। তবে এই ২৫টি গাছেই তার ভালো ফলন হয়েছে। প্রতিটি গাছে ২০ কেজি থেকে শুরু করে এক মণ পর্যন্ত পেঁপে হয়েছে। গত জুন মাস থেকেই তিনি পাকা পেঁপে বাজারে বিক্রি করা শুরু করেছেন। প্রতি সপ্তাহে তিনি ১৫ থেকে ২০ কেজি পাকা পেঁপে ৮০ টাকা কেজি পর্যন্ত বিক্রি করছেন; যা প্রতি সপ্তাহে ১২০০ টাকা থেকে ১৬০০ টাকা পর্যন্ত।
মাহমুদুল যখন জমির আইলে পেঁপে গাছ লাগান তখন জমিতে ভুট্টা ছিল। এখন ভুট্টা হারভেস্টিং করে তিনি জমিতে ধান চাষ করেছেন।
সারিয়াকান্দি কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের মতো এ বছরও উপজেলায় পাঁচ হেক্টর জমিতে পেঁপে চাষ হয়েছে। পেঁপে গাছের গড় ফলন হেক্টরপ্রতি ৩৫ টন। সাধারণত সারা বছরই পেঁপে চাষ হয়। তবে মাঘের শেষে বা ফাল্গুনের শুরুতে পেঁপে গাছ রোপণের উত্তম সময়। রোপণের সাধারণত তিন মাসের মধ্যেই ফল ধরে।
কৃষক মাহমুদুল হাসান বলেন, জমির আইল ফেলে না রেখে সেখানেও কিছু করা যায় কিনা, এ চিন্তা থেকেই জমির আইলে পেঁপে গাছ রোপণ করেছি। যে কয়টি গাছ বেঁচে আছে, সেখান থেকেও প্রতি সপ্তাহে প্রচুর পরিমাণে পাকা পেঁপে বাজারে বিক্রি করছেন। সবগুলো গাছ যদি বেঁচে থাকত তাহলে আরও অনেক বেশি লাভবান হতেন।
সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, পেঁপে কাঁচা এবং পাকা দুইভাবেই খাওয়া যায়। অফ সিজনে এটি গরিবের সবজির চাহিদার একটি ভালো জোগান। বাজারে সবজি আকারেও পেঁপের ভালো দাম রয়েছে। কাঁচা এবং পাকা উভয় প্রকার পেঁপের পুষ্টিগুণ খুবই বেশি। এটি কোনো কোনো রোগের চিকিৎসায় পথ্য হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। এ উপজেলায় কৃষকরা পেঁপে চাষ করে বাজারে ভালো দাম পেয়ে ধারাবাহিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের জমির একটি বিশাল আয়তনের সমপরিমাণ আইল পতিত থাকে। এসব আইল ফেলে না রেখে সেখানে পেঁপে চাষ করলে কৃষকরা ব্যাপকভাবে লাভবান হবেন।
