Logo
Logo
×

ডাক্তার আছেন

শীত পড়তেই অসুস্থ বাড়ির বয়স্করা, শ্বাসকষ্ট থাকলে যা খাওয়াবেন

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:০২ পিএম

শীত পড়তেই অসুস্থ বাড়ির বয়স্করা, শ্বাসকষ্ট থাকলে যা খাওয়াবেন

বয়স ষাটের গণ্ডি পার হলেই শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা একটু একটু করে কমতে থাকে। সেই সুযোগেই হানা দেয় নানা রকম অসুখ-বিসুখ। আর শীতের দিনে বয়স্করা ঘন ঘন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তবে যারা নিয়ম মেনে খাওয়াদাওয়া ও শরীরচর্চায় নজর দেন, তাদের অসুখ-বিসুখ তেমন ধারেকাছে ঘেঁষে না। 

শীত পড়া মানেই নানা সংক্রামক অসুখের বাড়বাড়ন্ত। বাড়ির প্রবীণ সদস্যরাই অসুস্থ হয়ে পড়েন বেশি। তাই এ সময়ে খাওয়াদাওয়ায় বিশেষ নজর দেওয়া জরুরি। কেমন হবে বয়স্কদের শীতের ডায়েট? কারও হার্ট দুর্বল, আবার কারও হাঁপানির ধাত। সুগার-প্রেশার তো রয়েছেই। তাই শীতের দিনে সুস্থ থাকতে হলে কেবল মুঠো মুঠো ওষুধের ওপর ভরসা রাখলে চলবে না। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকাতেও নজর দিতে হবে। বাড়ির বয়স্কদের এমন রুটিন বেঁধে খাওয়ান, যাতে তাদের শরীর সুস্থ ও সতেজ থাকে। শ্বাসের রোগ, ডায়াবেটিস কিংবা হার্টের অসুখ থাকলেও বিপদের ঝুঁকি কমে যাবে।

বাড়ির অনেক প্রবীণ সংসার সামলে সবার খেয়াল রাখতে গিয়ে নিজের প্রতি উদাসীন হয়ে পড়েন। কখনো ওষুধ খেতে ভুলে যান, আবার কখনো কম খেয়ে কিংবা ঘন ঘন উপোস করেই কাটিয়ে দেন। একজন ষাটোর্ধ্ব পুরুষের বয়সকালে পৌঁছে ডায়েট মেনে চলার কথা মনে থাকে না। হয়তো সবার আড়ালেই তিনি দেদার মিষ্টি খেয়ে ফেলেন। আবার বাইরে বেরিয়ে শিঙাড়াও খেয়ে থাকেন। এর থেকেই বয়সকালে ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম তৈরি হয়। কেউ আবার ভোগেন কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায়। 

চিকিৎসকরা এ সমস্যাকে বলেন, ‘ইটিং ডিজঅর্ডার’, যা বয়সকালে বেশি হয়। এ কারণেই পেটের রোগ সারতে চায় না, গিঁটে গিঁটে ব্যথা আরও বেড়ে যায়। সামান্য কারণেই শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ে।

বয়সকালে হাড়ের সমস্যা, বাতের ব্যথার সমস্যা নিত্যসঙ্গী। তাই ক্যালসিয়ামও জরুরি। দুধ, ছানা, পনির, দই, পালংশাক থেকে যথেষ্ট পরিমাণে ক্যালশিয়াম পাওয়া যাবে। দুধ হজমে সমস্যা থাকলে ছানা খাওয়া যেতে পারে। ফাইবারসমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে আপেল, কলা, বেদানা, বিট, গাজর, ব্রকোলি খাওয়া যেতে পারে। ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় থাকা জরুরি। ছোট মাছ, সয়াবিন, আখরোট থেকে তা পেয়ে যাবেন।

প্রবীণদের খাবারে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট সঠিক মাত্রায় রাখতে হবে। প্রাতরাশ খেয়ে নিতে হবে সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে। সকালের জলখাবারে থাকতে পারে দুধ-কর্নফ্লেক্স ও যে কোনো একটি মৌসুমি ফল। দুধে অ্যালার্জি থাকলে ডালিয়ার খিচুড়ি সবজি দিয়ে বা ওটস। হাতে গড়া দুটি গরম রুটি আর এক বাটি সবজিও খেতে পারেন। রুটি খেতে সমস্যা হলে, গরম স্যুপ খাওয়া যেতে পারে। শীতের পালংশাক ও নানা রকম সবজি দিয়ে স্যুপ বানিয়ে দিতে পারেন।

দুপুরে ভাত, ডাল, সবজি, মাছ কিংবা মাংস খাওয়া যেতে পারে। বাইরের খাবারের বদলে বাড়িতে তৈরি কম তেলমসলাযুক্ত খাবার দেওয়া উচিত। যদি দাঁতের সমস্যা থাকে কিংবা চিবিয়ে খেতে না পারেন, তাহলে গলা ভাত, সেদ্ধ সবজি আর তরল জাতীয় খাবারই বেশি খেতে হবে। খাওয়ার পরে টক দই খেতে পারেন। বাড়িতে পাতা টক দই হলেই বেশি ভাল হয়। টক দই খুব ভাল প্রোবায়োটিক। দই অন্য খাবার হজম করায়।

রাতে শোবার অন্তত ঘণ্টা দুয়েক আগে খাওয়াদাওয়া সেরে নিতে হবে। রাতের খাওয়া হবে হালকা। ভাত খেলে এক কাপের মতো আর সঙ্গে যে কোনো একরকম সবজি। চিকেন স্যুপ খাওয়া যেতে পারে। না হলে দুটি রুটি, এক বাটি সবজি খেতে পারেন। তবে রাতে খুব বেশি পদ না খাওয়াই ভালো। খুব যদি ইচ্ছা হয়, তাহলে খেজুর খেতে পারেন। তবে সুগার থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম