এখন কেন মাদকের বিস্তার
পরিস্থিতি সামাল দিন
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
প্রতীকী ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
গত সরকারের আমলে সারা দেশে ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজা-এসব মাদকের বিস্তার ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল। বর্তমান সরকারের আমলে এক্ষেত্রে একই প্রবণতা তৈরি হলে তা হবে দুঃখজনক। গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অবৈধ মাদক ও ভারতীয় পণ্য চোরাচালানের নিরাপদ রুটে পরিণত হয়েছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোল প্লাজা। অভিযোগ রয়েছে, পুলিশের সহযোগিতায় এবং মাসোহারার ভিত্তিতে নিয়মিত ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজাসহ অবৈধ পণ্য রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বাধাহীনভাবে পৌঁছে যাচ্ছে। জানা যায়, সম্প্রতি ১০ হাজার ইয়াবাসহ বিজয়নগরের দুই মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে আশুগঞ্জ থানা পুলিশ। পরে ৩শ ইয়াবা দিয়ে তাদের চালান দেওয়া হয়। বাকি ইয়াবা পুলিশের এক সোর্সের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়। প্রতিনিয়তই এমন ঘটনা ঘটছে। এসব কারণেই আশুগঞ্জে হাত বাড়ালেই মিলছে ইয়াবা, ফেনসিডিল ও গাঁজা। বস্তুত কেবল আশুগঞ্জে নয়, সারা দেশেই হাত বাড়ালে মিলছে এসব মাদক। মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কিছু সদস্যের সখ্যের কারণেই এ সমস্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, বিষয়টি বহুল আলোচিত। দেশের বিভিন্ন এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীকে আটক এবং মাদক উদ্ধারের খবর শুনে মানুষ এখন আর স্বস্তি পায় না। কারণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নানা তৎপরতার পরও সারা দেশে এ সমস্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
ইয়াবা-ফেনসিডিল-গাঁজা-সংক্রান্ত অপরাধের সঙ্গে পুলিশের কিছু সদস্যের সংশ্লিষ্টতা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। অপরাধ দমনের দায়িত্ব যাদের ওপর বর্তায়, তারাই যদি অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন, তাহলে অপরাধের মাত্রা বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক। আলোচিত মাদকগুলো অন্য দেশ থেকে আমাদের দেশে আনা হয়। দেশে এসব মাদকের বিস্তারের সঙ্গে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দক্ষতা, সততা ও আন্তরিকতার বিষয়টি সম্পর্কিত। গত সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সদস্যরা যে মানসিকতা নিয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন, বর্তমান সরকারের আমলেও তাদের কেউ যদি একই মানসিকতা নিয়ে দায়িত্ব পালন করেন, তা হবে দুঃখজনক। সারা দেশে আলোচিত মাদকগুলোর ভয়াবহ বিস্তারের পেছনে কেবল পুলিশের কিছু সদস্য এবং মাদক ব্যবসায়ীরা দায়ী, এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। এ অপরাধের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষাভাবে আরও অনেকে জড়িত। কাজেই এক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত সুফল পেতে হলে দায়ী সবাইকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। একইসঙ্গে মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন অব্যাহত রাখতে হবে।
