‘স্বার্থপর’ দেখে আফসোস, যা বললেন তাসনিয়া ফারিণ
বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৪১ এএম
তাসনিয়া ফারিণ/ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ঢালিউড অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ এ মুহূর্তে কলকাতায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। টালিউড অভিনেত্রী কোয়েল মল্লিকের আমন্ত্রণে ‘স্বার্থপর’ সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনীতে কলকাতায় অভিনেত্রী। একটা সময় দেবের নায়িকা হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই সুযোগ হারিয়ে ফেলেন অভিনেত্রী। সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমের এক সাক্ষাৎকারে কোয়েল মল্লিকের ‘স্বার্থপর’ দেখে আফসোস করেন। কেন এ রকম সিনেমা বেশি বেশি তৈরি হয় না বলেও জানিয়েছেন তাসনিয়া ফারিণ।
তিনি বলেন, গত বছর কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে এসেছিলাম। অনেক দিন পর আসায় যেন বেশি ভালো লাগছে। সবার সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেছি। ঘুরছি এদিক-সেদিক। পছন্দের খাবারগুলোও খাওয়ার চেষ্টা করেছি।
কলকাতায় সবে কালীপূজা শেষ হয়েছে। ভাইফোঁটার উদযাপন চলছে।—এমন প্রশ্নের উত্তরে তাসনিয়া বলেন, হ্যাঁ, এয়ারপোর্ট থেকে আসার সময়েই চারদিকে দেখেছি আতসবাজি পুড়ছে। সারা শহর আলোয় সাজানো। কী যে ভালো লাগছিল!
এই শহরে কী কারণে? উত্তরে অভিনেত্রী বলেন, আরও আগেই আসার কথা ছিল। ভিসা পাচ্ছিলাম না। একটি সিনেমায় তো অভিনয় করাই হলো না (দেবের সিনেমায়)। এখন সেই সমস্যা মিটেছে। অনেক দিন ধরেই এখানে কাজের কথা চলছে। ফোনে সেসব কথা তো হয় না। তা ছাড়া ঘুরতেও এলাম। আসতে পারি না আপনাদের কাছে?
আপনি আর চঞ্চল চৌধুরী অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর আগামী সিনেমায় আছেন? তিনি বলেন, আগামী সিনেমা কিনা জানি না। তবে অনেক আগে থেকেই টোনিদার সঙ্গে কথা চলছে। ফলে ওর সঙ্গে কাজের জন্য মুখিয়ে আছি। আর চঞ্চলদা সেই কাজে থাকবেন কিনা এটিও জানি না।
বাংলাদেশের মানুষেরা যখন আমাদের কাছে আসেন, তখন আমরা জানতে চাই— ও পার বাংলা কেমন আছে?
তাসনিয়া ফারিণ বলেন, ভালো আছে বাংলাদেশ। ভালো ভালো কাজ হচ্ছে। আমিও কাজ করছি। এখন ওখানে সিনেমার বাজেট আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে। যদিও হল সংখ্যা নিয়ে এখনো প্রশ্ন আছে। সব মিলিয়ে ভালোই।
মাঝখানে ‘অন্ধকার সময়’ পেরিয়ে এসেছেন?—এমন প্রশ্নের উত্তরে অভিনেত্রী বলেন, দেখুন, আমি না একেবারেই রাজনীতিমনস্ক নই। বেশি কথা বলতেও ভালোবাসি না। এ বিষয়টি নিয়ে খুব বেশি বলতে পারব না। বলতে চাইও না।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সিরিজ ‘লেডিজ অ্যান্ড জেন্টলম্যান’ আপনাকে জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে। তাকে রাজনীতিতে দেখে খুশি? শিল্পীদের এই আঙিনায় পা রাখা উচিত? এ প্রসঙ্গে তাসনিয়া বলেন, আমার খুশি-অখুশি হওয়ার কিছু নেই। প্রত্যেকের স্বাধীন ইচ্ছা রয়েছে। আমি রাজনীতি বুঝি না। তাই আমি কোনো দিন এই ময়দানে পা রাখব না।
দেবের নায়িকা হওয়ার সুযোগ হারানো প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, আর বলবেন না! ওরা অনেক দিন পর্যন্ত আমার জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। আমিও আসার খুবই চেষ্টা করেছি। বেশ টানাপোড়েন গেছে তখন। শেষ পর্যন্ত ব্যাটে-বলে হলো না। এই তো, দিন দুই আগে ‘স্বার্থপর’ সিনেমার প্রিমিয়ারে দেখাও হলো দেবদার সঙ্গে। উনি বললেন...
দেব নিশ্চয়ই বললেন— সেই এলে, আমার বেলায় এলে না...। তাসনিয়া ফারিণ বলেন, না না, তা বলেননি। বললেন— যাক অবশেষে এলে। দেখা হলো আমাদের। এর আগে দেবদার সঙ্গে সব কথা ফোনে হয়েছিল। মুখোমুখি এই প্রথম।
নারীর উন্নতি দেখতে চান। অথচ ৫ বছর বয়সেই বিয়ে সেরে ফেললেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তার মানে আমি ব্যতিক্রমী। আপনারা হয়তো আগামী দিনে আমার উদাহরণ দেবেন। বলবেন— অল্প বয়সে বিয়ে করেও অভিনয় করে গেছে (হা হা হাসি)।
অভিনেত্রী বলেন, বিয়ের সঙ্গে অভিনয়ের সত্যিই বিরোধ নেই। একজন নায়িকা কত বছর বয়সে বিয়ে করবেন, সেটাই বা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে কেন? আমার সঠিক সময় কোনটা, সেটি আমি ঠিক করব। তিনি বলেন, আমি তো দেখছি, বিয়ের পর আমার কাজ বেড়েছে! ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, বিশ্ব এই ট্যাবু ভাঙতে পেরেছে।
তিনি বলেন, হলিউড থেকে আমাদের দেশ— নায়িকার বিয়ে নিয়ে আর কেউ মাথা ঘামান না! হয়তো আগে বিয়ের পর নায়িকারা সময় বের করতে পারতেন না, তাই বিয়ের বয়স নির্ধারণ করা হয়েছিল।
আপনিই তো বলেছিলেন— বিয়ের পর স্বামী-সংসারের জন্য অভিনয় ছাড়তে রাজি। উত্তেজিত কণ্ঠে তাসনিয়া বলেন, না, না, আমার সে বিষয়টি ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। স্বামীর গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে বলেছিলাম— স্বামীর আগে কিছুই না। তার মানে কাজ ছেড়ে দেব এ কথা বলিনি? আমার স্বামী কোনো দিন কাজ ছাড়ার কথা বলেননি।
তাহসান খানের সঙ্গে নাম জড়ানো প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, পুরোটাই ভুলভাল। আমি অনেক দিন প্রেমের কথা প্রকাশ্যে আনিনি। এদিকে আমার আর আমার প্রেমিকের (স্বামী) হাতের ছবি দিচ্ছি। লোকে কিছু না জেনে হঠাৎ করে তাহসানের নাম জড়িয়ে দিল। তারপরেই প্রেমিককে প্রকাশ্যে আনি। সবার ভুল ভাঙে।
দুই দেশের সংস্কৃতির আদান-প্রদান নিয়ে বলছিলেন। ধরুন, যদি কাঁটাতারের বেড়া না থাকত, ভিসা সমস্যা না থাকত, দুই দেশ যদি আবার আগের মতো একটাই দেশ হতো?
একটু থমকে তাসনিয়া ফারিণ বলেন, দেখুন, এটা খুব হাইপোথেটিক্যাল ভাবনা। কোনো দিন যা হওয়ার নয়। এ রকম চিন্তা করতেও চাই না। আমি আমার দেশ নিয়ে গর্বিত। তিনি বলেন, গর্ব করার কারণও আছে। আমার দেশের মুক্তিযুদ্ধ আমায় গর্বিত করে। অনেক কষ্টে স্বাধীন হয়েছি। মুক্তিযুদ্ধ তাই আমাদের রক্তে, আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্যে।
অভিনেত্রী বলেন, দেখুন, ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। আলাদা দুটো দেশ মানেই আমরা আলাদা নই। আমাদের দেশ আমাদের মেলামেশার সুযোগ করে দিয়েছে বলেই আমি আপনার দেশে বসে আপনার সঙ্গে কথা বলতে পারছি। সেই জায়গা থেকেই বলছি— আলাদা দেশে বাস করেও সুস্থ চিন্তা, দুই দেশের স্বার্থ রক্ষা করে স্বাভাবিক আদান-প্রদান সম্ভব। তাতে দুই দেশের অর্থনৈতিক পরিকাঠামো আরও জোরালো হবে। সে জন্য দুই দেশকে এক হতে হবে না।
