Logo
Logo
×

বিনোদন

জিয়াউর রহমানের চরিত্রে অভিনয় করবেন কিনা, যা জানালেন শুভ

Icon

বিনোদন প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৫, ১০:৪৯ পিএম

জিয়াউর রহমানের চরিত্রে অভিনয় করবেন কিনা, যা জানালেন শুভ

আরিফিন শুভ। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকাই সিনেমার অভিনেতা আরিফিন শুভ কাজ করেছেন বেশ কিছু সিনেমায়।  ঢালিউডের পাশাপাশি কাজ করেছেন ওপার বাংলার সিনেমাতেও। এবারের ঈদে মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে তার নতুন ছবি ‘নীলচক্র’। পাশাপাশি ভারতের ওটিটি প্ল্যাটফর্ম সনি লিভ-এর জন্য নির্মিত বলিউড প্রজেক্ট ‘জ্যাজ সিটি’তেও অভিনয় করেছেন তিনি।

তবে সম্প্রতি সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীভিত্তিক সিনেমা ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’-এ প্রধান চরিত্রে অভিনয় করে। সিনেমাটি মুক্তির পর থেকেই তাকে ঘিরে নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। বিশেষ করে, শেখ মুজিবের চরিত্রে অভিনয়, এক টাকায় পারিশ্রমিক গ্রহণ, তার নামে বরাদ্দকৃত প্লট বাতিল— এসব বিষয় তাকে রাখে বিতর্কের কেন্দ্রে।

সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেন শুভ। নিজের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েও দেন স্পষ্ট ব্যাখ্যা। তিনি বলেন, তিনি শুধুমাত্র একজন অভিনেতা, কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শ থেকে নয়, চরিত্রের প্রয়োজনেই কাজ করেন।

শুভ জানিয়েছেন, তিনি একজন অভিনেতা। অভিনেতার কাজ অভিনয় করা এবং যেকোনও চরিত্রকে যথাযথভাবে পর্দায় তুলে আনা। তিনি সেটিই করেছেন। শেখ মুজিবের চরিত্রে তাকে উপযুক্ত মনে করা হয়েছে, কাস্ট করা হয়েছে, তিনি শুধু অভিনয় করেছেন। এমনকি তাকে যদি জিয়াউর রহমানের চরিত্রেও অভিনয় করতে বলা হয়, তিনি সেটি করবেন।

এ সময় নিজেকে রাজনীতির একেবারেই বাইরের একজন মানুষ দাবি করেন শুভ।

এ বিষয়ে শুভ বলেন, ‘নির্বাচনে যেতে চাইলে তো মনোনয়নপত্র কিনতে হতো। আমি কি সেটা করেছি? নির্বাচনে দাঁড়াতে হলে তো রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশ নিতে হয়। আপনি আমাকে কখনো দেখেছেন তেমন কিছু করতে? যখনই ‘মুজিব’ করলাম, তখন থেকেই নানা গুঞ্জন আমি নাকি এমপি হচ্ছি, এক টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছি সুবিধা পাওয়ার জন্য। অথচ বাস্তবে এমন কিছু ঘটেছে কি? ‘মুজিব’ করে আমি যদি কোনো বিশেষ সুবিধা নিয়ে থাকি, আপনি অনুসন্ধান করে প্রমাণসহ সবাইকে জানান। আর এই ছবি করার অনেক আগেই স্পষ্ট করে বলেছি, আমি কখনও রাজনীতিতে জড়াবো না। এটি আমার সচেতন এবং ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। কেউ চাইলে সেই বক্তব্যের রেকর্ডও খুঁজে পাবেন। রাজনীতি আমার পথ নয়, আমি শুধু অভিনয়টা বুঝি, আর সেটা নিয়েই থাকতে চাই।’


আগামীতে যদি আপনাকে যদি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বায়োপিকে অভিনয় করতে বলা হয়, করবেন? এমন প্রশ্নে আরিফিন শুভ বলছেন, ‘বেন কিংসলে মহাত্মা গান্ধীর চরিত্র করেছেন, মরগান ফ্রিম্যান আর ইদ্রিস এলবা নেলসন ম্যান্ডেলার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। তার মানে কি তারা ওই গোষ্ঠীর প্রতিনিধি হয়ে গেছেন? তাহলে আমার ক্ষেত্রে এ প্রশ্নটাই বা আসে কেন? আমি একজন অভিনেতা। আমার কাজ চরিত্রে ঢুকে সেই চরিত্রকে সত্য করে তোলা। আমাকে যেকোনও চরিত্রে পরিচালক যোগ্য মনে করলে, আমি বরাবরই প্রস্তুত।’

‘মুজিব’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য এক টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছেন তিনি। তা নিয়েও আছে সমালোচনা।

এ প্রসঙ্গে আরিফিন শুভ বলেন, ‘শ্রমের মূল্য একজন মানুষ নিজেই নির্ধারণ করেন। এটাই কি স্বাভাবিক নয়? আপনি কি আপনার বেতন নিজে ঠিক করেন না? বলেন তো, এত টাকার কম হলে আমি এখানে জয়েন করবো না, সেটা কি অপরাধ? আমি যদি ১০০ টাকায় সিনেমা করি, আর ‘মুজিব’ করতে ১০ হাজার টাকা নিই- তাহলে সমালোচনার জায়গা ছিল। তখনই সমালোচনা করতে পারতেন। কিন্তু আমি তো উল্টোটা করেছি। পারিশ্রমিক নিইনি। টাকা না নিয়ে চুরি-ডাকাতি করিনি, দেশের ক্ষতি করিনি। আর হ্যাঁ, এটা প্রথম না। কাজের ক্ষেত্রে টাকাকে আমি কখনও সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিইনি। আমার কাছে গুরুত্ব পায় টিম, গল্প এসবই। সবশেষ ‘উনিশ ২০’র কথাই ধরুন, যে অঙ্কে চুক্তি হয়েছিল, পুরোটা নেইনি। কেন নেইনি, সেটা চাইলে প্রযোজকের কাছে জিজ্ঞেস করে জেনে নিতে পারেন।’


আরিফিন শুভ পূর্বাচলে রাজউকের জমি পেয়েছিলেন। পরে সেই প্লট বাতিল করা হয়। এ বিষয়ে শুভ বলেন, ‘এক টাকার পারিশ্রমিক আর পূর্বাচলের জমি এই দুটোকে এক সুতায় গেঁথে যে গল্পটা ছড়ানো হয়েছে, সেটা যতটা মুখরোচক, বাস্তবতা থেকে তা ঠিক ততটাই দূরে। ফেসবুকে তো যেকোনও কিছু বলা যায়, সেখানে প্রমাণ লাগে না, দায় নিতে হয় না। কিন্তু বাস্তবে তো জবাবদিহি আছে। আমি কি প্রথম শিল্পী, যে রাজউকের জমি পেয়েছি? ‘শিল্পী’ কোটায় আগেও ১৫১ জন প্লট পেয়েছেন। তাদের মধ্যে তো কেউ ‘মুজিব’-এ ছিলেন না, কেউ এক টাকা পারিশ্রমিক নেননি। তাহলে তারা কীভাবে পেলেন? আমি যেভাবে নিয়ম মেনে আবেদন করেছি, সরকার নির্ধারিত অর্থ জমা দিয়েছি, বাকিরাও ঠিক একইভাবে পেয়েছেন। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে গল্পটা আলাদা করে বলা হচ্ছে, যেন এই দুটি ঘটনা (সিনেমা আর জমি) একে অন্যের বিনিময়। আসলে যারা এ ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্য তথ্যভিত্তিক প্রশ্ন তোলা নয়, জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করা। আর আমরা জানি, বিভ্রান্তি তৈরির জন্য সত্যের চেয়ে মুখরোচক গল্পই বেশি কাজে দেয়।’

ঈদুল আজহায় মুক্তি পাচ্ছে আরিফিন শুভ অভিনীত ‘নীলচক্র’। এছাড়া মুক্তির অপেক্ষায় আছে তার ‘নূর’, ‘লহু’, ‘জ্যাজ সিটি’ ও ‘ঠিকানা বাংলাদেশ’।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম