Logo
Logo
×

বিনোদন

রবীন্দ্রনাথের নৃত্যনাট্যে হিন্দি গান

Icon

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৫, ১১:৫০ এএম

রবীন্দ্রনাথের নৃত্যনাট্যে হিন্দি গান

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি নৃত্যনাট্যে হিন্দি সিনেমার গান জুড়ে দেওয়ার ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে নেটিজেনদের মাঝে আলোচনা-সমালোচনা ঝড় বইছে।

গত রোববার (১৩ জুলাই) টিভিতে সম্প্রচারিত হয়েছে ‘ড্যান্স বাংলা ড্যান্স’-এর একটি বিশেষ পর্ব। সেখানে রবীন্দ্রনাথের লেখা নৃত্যনাট্য ‘চণ্ডালিকা’র সঙ্গে সত্তর দশকের বিখ্যাত হিন্দি ছবির একটি গানের প্রয়োগ এবং তার উপস্থাপনা ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। 

ওই অনুষ্ঠানের প্রতিযোগী আনুশকা চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘চণ্ডালিকা’র একটি বিশেষ পর্বে নৃত্যপরিবেশন করেন অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত। নৃত্যনাট্যে গৌতম বুদ্ধের প্রিয় শিষ্য একজন বৌদ্ধ সন্ন্যাসী ঠিক যেমন দেখতে হয়, সেভাবেই ক্যামেরার সামনে ধরা দেন অভিনেত্রী। মাথা ন্যাড়া ও পরনে গেরুয়া বস্ত্র।

অভিনেত্রী প্রথমে যখন এই ‘লুক’ সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেছিলেন, তখনই দর্শকমনে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়। কিন্তু উপস্থাপনা দেখে হতাশ হন দর্শকরা। যার মধ্যে রয়েছেন টালিপাড়ার একাংশও। 

রোববার রাত থেকে আলোচনা-সমালোচনা চোখ এড়ায়নি দেবলীনারও। এর আগেও মঞ্চে ‘চণ্ডালিকা’ পরিবেশনা করেছেন অভিনেত্রী। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কোরিওগ্রাফি নিয়ে নানাজনের নানা মন্তব্য পড়ে ও শুনে দেবলীনা প্রশ্ন তুললেন—আদৌ কি ‘চণ্ডালিকা’ নৃত্যনাট্য বা রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে পড়াশোনা করেছেন তারা?

অভিনেত্রী আরও বলেন, এর আগে আমি তিনবার চণ্ডালিকার ‘প্রকৃতি’-কে মঞ্চস্থ করেছি। ঠাকুরের এই লেখা আমার সবচেয়ে প্রিয়। তাই ‘চণ্ডালিকা’ নিয়ে আমি অনেক পড়াশোনা করেছি। তার ভিত্তিতে বলছি— প্রকৃতির আনন্দের প্রতি প্রেম ছিল বললে খুব কম বলা হবে। চণ্ডালিকার আনন্দের প্রতি যে পাগলের মতো ভালোবাসা সেটাই নিজের লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন ঠাকুর।

এর আগে যখন রবীন্দ্রনাথের লেখা কোনো গান অন্যভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন কোনো সংগীতশিল্পী, তা নিয়ে বিস্তর সমালোচনার মন্তব্য সহ্য করতে হয়েছে তাকে। তবে দেবলীনার পরিবেশনায় এই ‘চণ্ডালিকা’ দেখে এক নেটিজেন লিখেছেন—না, মানে এটা ঠিক কী। ‘চণ্ডালিকা’র সঙ্গে গুলজার পরিচালিত ‘আঁধি’ সিনেমার জনপ্রিয় গানের মিশেল অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। 

এ প্রসঙ্গে নৃত্যশিল্পী তথা অভিনেত্রী মালবিকা সেন বলেন,  নতুন প্রজন্মের সঙ্গে কথা বলাই এখন আমাদের অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরাও অনেক সময় ফিউশন নাচ করি। বিশ্বজুড়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ আমাদের মননে মিশে আছেন। সেখান থেকে সরে গিয়ে এই হিন্দি গান জুড়ে দেওয়া— আমি তীব্র আপত্তি জানাচ্ছি।

দীর্ঘ দিন ধরে নাচের এ অনুষ্ঠান টিভির পর্দায় দেখছেন দর্শকরা। অভিনেত্রী-পরিচালক মানসী সিংহের মেয়ে এ অনুষ্ঠানের ভক্ত। কিন্তু সেদিন মঞ্চস্থ হওয়া এ পরিবেশনা তারও ভালো লাগেনি। নিজের সামাজিক মাধ্যমের পাতায় মতামত জানিয়েছেন অভিনেত্রী। মানসী বলেন, সব জগাখিচুড়ি হয়ে যাচ্ছে। আর বাঙালি নিজেদের ঐতিহ্য ভুলে গেলে যা হয় সেটাই হচ্ছে। 

অনেকেই এদের মধ্যে চণ্ডালিকা পড়েননি। ফিউশন করতেই পারে। কিন্তু মানেটা ভুলে গেলে কি চলে? আনন্দকে প্রেমিক হিসাবে চেয়েছিল চণ্ডালিকা, না কি মুক্তির অবলম্বন হিসাবে চেয়েছিল? সেটাই আগে জানা উচিত। শিখতে হয়। এটা দেখে যারা ভালো বলছেন, তাদের শতকোটি প্রণাম। আমি আর দেখব না এ অনুষ্ঠান।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম