অফিস শেষে প্রশিক্ষণ, ঘাম ঝরিয়ে গড়ে তোলা এক স্বপ্নের গল্প—যেখানে বয়স নয়, জয়ের মাপকাঠি ইচ্ছাশক্তি। পেশাগত জীবনে তিনি একজন ব্যাংকার—মো. ফারুক হোসেন, কর্মরত আছেন একটি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের আইটি ডিভিশনে। দৈনন্দিন চাকরি, পারিবারিক দায়িত্ব ও সামাজিক ব্যস্ততা সামলে তিনি গড়ে তুলেছেন এক ভিন্ন পরিচয়—একজন ট্রায়াথলেট হিসেবে।

গত ১ নভেম্বর, মালয়েশিয়ার লাংকাউইতে অনুষ্ঠিত ‘আয়রনম্যান মালয়েশিয়া ২০২৫’ ইভেন্টে অংশ নিয়ে তিনি ১১ ঘণ্টা ৫৮ মিনিটে সফলভাবে প্রতিযোগিতা শেষ করেন। এ ইভেন্টকে বলা হয় পৃথিবীর অন্যতম কঠিন একদিনের সহনশীলতা পরীক্ষা—যেখানে অংশগ্রহণকারীকে ১৭ ঘণ্টার মধ্যে সম্পন্ন করতে হয় ৩ দশমিক ৮ কিলোমিটার সাঁতার, ১৮০ কিলোমিটার সাইক্লিং এবং ৪২ কিলোমিটার দৌড় (একটি পূর্ণ ম্যারাথনের সমান)।

এ প্রতিযোগিতায় ফারুক হোসেন নিজের বয়সভিত্তিক (৪০–৪৪ বছর) ক্যাটাগরিতে ৪০তম এবং সব প্রতিযোগীর মধ্যে ১৫২তম স্থান অর্জন করেন— যা একজন পেশাদার ব্যাংক কর্মকর্তার জন্য অনন্য অর্জন।

এর আগেও তিনি মালয়েশিয়ার পুত্রজায়ায় অনুষ্ঠিত ‘পাওয়ারম্যান ক্লাসিক’ প্রতিযোগিতায় সফলভাবে অংশ নেন। ২০২৩ সালে থাইল্যান্ডের ফুকেটে অনুষ্ঠিত ‘ওয়াটারম্যান ওয়ার্ল্ড চেম্পিয়ানশিপ’-এ ১০ কিলোমিটার সাঁতার সম্পন্ন করে অর্জন করেন ওয়াটারম্যান খেতাব। এছাড়া, ২০২২ ও ২০২৩ সালে তিনি বাংলাদেশের টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত ১৬ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্রপথ (‘বাংলা চ্যানেল’) দুইবার সাঁতরে সফলভাবে অতিক্রম করেন।

তার লক্ষ্য শুধু নিজের সীমা ছাড়ানো নয়, বরং তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া। নিজের সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ার কোনো বয়স নেই। বুধবার ৫ নভেম্বর রাজধানী কুয়ালালামপুরে কথা হয় ফারুক হোসেনের সঙ্গে। তিনি জানান, বয়স কেবল একটি সংখ্যা। দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি থাকলে যে কোনো কঠিন চ্যালেঞ্জ জয় করা সম্ভব। ফারুক হোসেনের এ যাত্রা আজ তরুণ প্রজন্মসহ কর্মজীবী মানুষের কাছে এক অনুপ্রেরণার প্রতীক হয়ে উঠেছে।

সৌরভ সমাদ্দার

তিনি একটি ব্যাংকের এসপিও ও ব্যবস্থাপক এবং সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন পৃথিবীর অন্যতম কঠিন একদিনের প্রতিযোগিতা—‘আয়রনম্যান মালয়েশিয়া ২০২৫’। গত ১ নভেম্বর মালয়েশিয়ার লাংকাউই দ্বীপে অনুষ্ঠিত এ প্রতিযোগিতায় তিনি ১৪ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট সময়ে রেস শেষ করে বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছেন আন্তর্জাতিক মঞ্চে। এর আগেও তিনি ২০২৩ সালে বাংলাদেশের টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত ১৬ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্রপথ, যা ‘বাংলা চ্যানেল’ নামে পরিচিত, সাঁতরে সফলভাবে অতিক্রম করেন। এছাড়া গত বছর তিনি ‘আয়রনম্যান মালয়েশিয়া ৭০ দশমিক ৩’ (আয়রনম্যানের অর্ধ দূরত্ব) সফলভাবে সম্পন্ন করেন এবং দেশে ৩০টিরও বেশি অফিসিয়াল ম্যারাথন ও হাফ ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করেছেন। তার এই যাত্রা শুধুমাত্র ব্যক্তিগত অর্জন নয়; এটি বাংলাদেশের ব্যাংকিং পেশাজীবীদের মধ্যে এক নতুন অনুপ্রেরণার প্রতীক হয়ে উঠেছে।

সৌরভ সমাদ্দার জানান, দৃঢ় মনোবল ও নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে কর্মব্যস্ত জীবনেও অর্জন করা যায়,   আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সাফল্য।