ফ্রান্স প্রবাসীদের পোস্টাল ভোটে ব্যাপক সাড়া
হাসান ইলিয়াছ তানিম, প্যারিস (ফ্রান্স) থেকে
প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৫, ১০:১৭ এএম
ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপ চালুর পর ফ্রান্সে বসবাসরত বাংলাদেশিদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে।
২৬ নভেম্বর রেজিস্ট্রেশন শুরু হওয়ার পর থেকেই ফ্রান্সের বিভিন্ন শহরে প্রবাসীরা দলবদ্ধভাবে নিবন্ধন করছেন।
শুরুর দিকে ওটিপি পাওয়া ও ছবি আপলোড নিয়ে কিছু প্রযুক্তিগত জটিলতা সৃষ্টি হলেও বর্তমানে প্রক্রিয়াটি অনেক সহজ হয়েছে বলে জানান ব্যবহারকারীরা। সবচেয়ে বড় স্বস্তির বিষয় রিফিউজি স্ট্যাটাসে থাকা অনেক প্রবাসীর পাসপোর্ট না থাকলেও কেবল জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিয়েই রেজিস্ট্রেশন করা যাচ্ছে। এতে একটা বড় সংখ্যক প্রবাসী জনগোষ্ঠী নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় যুক্ত হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।
প্রবাসী সংগঠনগুলো বলছে- এ উদ্যোগ দেশের গণতন্ত্রকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক করবে। ব্যালট ডাকযোগে পাঠানো ও ফেরত পাঠানোর পুরো প্রক্রিয়া সরকারিভাবে নির্ধারিত হওয়ায় ভোটারদের কোনো অতিরিক্ত খরচও করতে হবে না।
চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের ভোটার সোহেল উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত হওয়া আমাদের জন্য ঐতিহাসিক ঘটনা। প্রবাসে থেকেও নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারব এটি আমাদের দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত অধিকার।
কুমিল্লা-৯ (লাকসাম–মনোহরগঞ্জ) আসনের প্রবাসী ভোটার মোহাম্মদ আবুল হোসেন পাটোয়ারী বলেন, ফ্রান্স প্রবাসীদের ৫৪ বছরের ন্যায্য দাবি পূরণ হয়েছে। পোস্টাল ব্যালট চালুর জন্য আমরা সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ।
ফ্রান্স প্রবাসী সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট নিয়াজ মাহমুদ মনে করেন, প্রবাসীরা শুধু দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি নন এখন তারা গণতন্ত্রের সঙ্গেও সমানভাবে যুক্ত হচ্ছেন। পোস্টাল ভোট কোনো সাধারণ প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নয়; এটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা। দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে থাকা কোটি বাংলাদেশির যে স্বপ্ন ছিল, এ উদ্যোগ সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিচ্ছে।
রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া
১. গুগল প্লে স্টোর থেকে ‘Postal Vote BD’ অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে।
২. ভাষা নির্বাচন করে মোবাইল নম্বর দিলে ওটিপি পাওয়া যাবে।
৩. ওটিপি দিয়ে অ্যাকাউন্ট তৈরি করে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য ও ছবি আপলোড করতে হবে।
৪. নির্দেশনা অনুযায়ী সেলফি তুলে ফ্রান্সের বর্তমান ঠিকানা প্রদান করতে হবে।
৫. ব্যালট সেই ঠিকানায় ডাকযোগে পৌঁছে যাবে। ভোট প্রদান শেষে ফেরত খামে ব্যালট ভরে নিকটস্থ ‘La Poste’ অফিসে জমা দিলেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন।
ফ্রান্সে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আশা, এই উদ্যোগ ভবিষ্যতেও স্থায়ী এবং আরও উন্নত রূপ পাবে, যাতে বিশ্বের যে দেশেই বাংলাদেশিরা থাকুন না কেন, সবাই সমানভাবে সাংবিধানিক ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পান।

