Logo
Logo
×

সুস্থ থাকুন

সহজে প্রোটিন পাওয়ার উপায়

Icon

আখতারুন নাহার আলো

প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সহজে প্রোটিন পাওয়ার উপায়

অপর্যাপ্ত প্রোটিন দেহকে দুর্বল করে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। শর্করা ও চর্বিযুক্ত খাবারের বিপাকে প্রোটিন অংশগ্রহণ করে থাকে। দেহে এন্টিবডি তৈরি করতেও প্রোটিনের প্রয়োজন। কীভাবে শরীর প্রোটিন পাবে?

* ডিম : ডিমে আছে পর্যাপ্ত এমাইনো অ্যাসিড। এ ছাড়া আছে লৌহ, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ‘এ’ এবং ভিটামিন ‘ডি’। ডিম রোগ প্রতিরোধে ভালো খাদ্য। ডিমের প্রোটিন বাড়াতে হলে এর সঙ্গে দুধ মিশিয়ে পুডিং, অমলেট করা যায়। এ ছাড়া ডালের সঙ্গে ডিম রান্না করলেও এর প্রোটিন বেড়ে যাবে। প্রতিদিন একটি ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত।

* বাদাম : বাদাম প্রোটিনের ভালো উৎস। এতে আছে মায়োসিন, নায়াসিন, প্যানটোথেনিক অ্যাসিড, রাইবোফ্লাভিন ও ম্যাগনেশিয়াম। বাদামে আছে উদ্ভিজ্জ চর্বি। এটি মুখের ঘা ও ত্বকের অ্যাকজিমা দূর করে। অবসাদ কমাতে শিশুর খাদ্য তৈরিতে বাদামের গুঁড়া ব্যবহার করলে অপুষ্টি দূর হয়। বাদাম সব বয়সে এবং যে কোনো সময় খাওয়া যায়। বাদামকে হৃদবান্ধব খাবারও বলা হয়। এতে ক্যালসিয়ামের পরিমাণও বেশি থাকে।

* মাছ : ছোট-বড় সব মাছই প্রোটিন ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। এতে আছে অসম্পৃক্ত চর্বি। দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহজনিত রোগে মাছ বেশ উপকারী। মাছের তেলে আছে পর্যাপ্ত ভিটামিন ‘ডি’। জিওল মাছ যেমন-শিং, মাগুর, শোল, টাকি ইত্যাদি মাছ খাবারে রুচি বাড়ায়। ছোট মাছ ও চিংড়ি মাছে লৌহ থাকে। অ্যাজমা রোগীদের জন্যও মাছ ভালো। কম তাপে মাছ রান্না করলে এর পুষ্টিগুণ বজায় থাকে।

* ডাল : সহজলভ্য প্রোটিনের উৎস হিসাবে ডাল অন্যতম। দুই-তিন ধরনের ডাল মিশিয়ে খেলে মাংসের অভাব অনেকখানি পূরণ হয়। মসুর ডালে সবচেয়ে বেশি প্রোটিন থাকে। ডাল রান্না ছাড়াও ডালের হালুয়া, ডালের বড়া, অথবা বেসন দিয়েও বিভিন্ন ধরনের নাশতা বানিয়ে খেলে প্রোটিন পাওয়া যাবে। এ ছাড়া ছোলা, মটরও কম উপকারী নয়। ছোলা কাঁচা, সিদ্ধ, ভাজা খাওয়া যায়। ছোলা ভাজা, বুটি ভাজা, ডাল ভাজা, চটপটি, পিঁয়াজু এগুলোও প্রোটিনের সহজলভ্য উৎস। মটর ও মসুর ডালে স্যাপোনিন নামক উপাদানের জন্য এটি রক্তের কোলেস্টেরল বাড়াতে দেয় না। শুধু ডাল-ভাত, ডাল-রুটি খেয়েও ভালো থাকা যায়।

* খিচুড়ি : চাল-ডাল-তেল দিয়ে তৈরি খিচুড়ি খুবই ক্যালরিবহুল, প্রোটিনসমৃদ্ধ ও পুষ্টিকর খাবার। এটা সব বয়সে খাওয়া যায়। খিচুড়ি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কারণ চাল-ডালের মিলিত এমাইনো অ্যাসিডই একে সমৃদ্ধ করে তোলে। খিচুড়িতে কিছু সবজি ও মাংস যোগ করলে আরও ভালো হয়।

* দুধ : দুধ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। যদি সম্ভব হয় প্রতিদিন এক কাপ দুধ অথবা দুধের তৈরি খাবার খেতে পারেন। বাচ্চাদের দেওয়া যাবে দুধ-সুজি, পায়েস, দুধ-সেমাই, দুধ-মুড়ি, দুধ-খই, দুধ-ভাত, দুধ-চিড়া ইত্যাদি। দুধে আছে ক্যাসিন ও ল্যাক্টোঅ্যালবুমিন। দুটিই প্রোটিন। দুধের পরিবর্তে দইও খাওয়া যায়। দই সহজপাচ্য। এর ব্যাকটেরিয়া শরীরে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘বি’ শোষণ করতে সাহায্য করে। যদি দুধ খেতে না পারেন, তাহলে সয়াবিন, ডালজাতীয় খাবার, শিমের বিচি, মিষ্টিকুমড়ার বিচি, সজনেপাতা, সরষে শাক খেতে পারেন।

* সবজি : সবজি হিসাবে বরবটি, ঢেঁড়স, সজনেপাতা, তেঁতুলপাতা, শিম, শিমের বিচি খেলে সহজেই প্রোটিন পাওয়া যাবে। ঢেঁড়সের বিচিতে আছে পর্যাপ্ত প্রোটিন। এ ছাড়া খাওয়া যাবে সজনেপাতা রান্না, ভাজি অথবা ভর্তা করে। এতেও প্রোটিন আছে। আবার তেঁতুলপাতায় আছে বেশ কয়েকটি এমাইনো অ্যাসিড। এজন্য তেঁতুলপাতার ভর্তাও কম উপকারী নয়।

লেখক : চিফ নিউট্রিশন অফিসার ও বিভাগীয় প্রধান (অব.), বারডেম। সভাপতি, ডায়াবেটিস নিউট্রিশনিস্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশ, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শ্যামলী ও অ্যাডভান্স হাসপাতাল, ঢাকা

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম