Logo
Logo
×

শেষ পাতা

উদ্দেশ্য মূল্য স্বাভাবিক রাখা

পেঁয়াজ আমদানির সুপারিশ ট্যারিফ কমিশনের

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পেঁয়াজ আমদানির সুপারিশ ট্যারিফ কমিশনের

খুচরা বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ায় সীমিত পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানির সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি)। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন সরকারের বিবেচনার জন্য বাণিজ্য সচিব ও কৃষি সচিবকে পাঠানো হয়েছে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিবছর অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাসে পেঁয়াজের দাম বাড়ে। এক কেজি পেঁয়াজের দাম সর্বোচ্চ ১১০ টাকা ওঠায় দ্রুত আমদানির অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। শুক্রবারও রাজধানীর বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তাই সীমিত পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানির জন্য দ্রুত অনুমতি দিতে কমিশনের পক্ষ থেকে সুপারিশ করা হয়েছে।

জানতে চাইলে ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মইনুল খান যুগান্তরকে বলেন, কিছু মধ্যস্বত্বভোগী কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাজার অস্থির করার পাঁয়তারা করছে। তিনি জানান, এ সময় প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম ৯০ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। অথচ বাজারে তা ১১৫ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। বিপরীতে পার্শ্ববর্তী দেশে একই পেঁয়াজের দাম বর্তমানে প্রায় ৩০ টাকার মধ্যে। তিনি আরও বলেন, অভ্যন্তরীণ বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে সীমিত পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দ্রুত দেওয়ার জন্য কমিশনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে সুপারিশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেঁয়াজের উচ্চ দামের সুবিধা কৃষক পাচ্ছেন না। সুবিধা নিচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। তাই পেঁয়াজ আমদানির সুযোগ দিলে বাজারে মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রভাব কমে যাবে। ভোক্তারা যৌক্তিক মূল্যে পেঁয়াজ কিনতে পারবেন। এছাড়া গত অর্থবছরে দেশে ৪৪ লাখ ৪৮ হাজার টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। সংরক্ষণ সমস্যাসহ নানা কারণে পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গত অর্থবছরে ৩৩ লাখ টনের মতো পেঁয়াজ বাজারে এসেছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের পেঁয়াজ আমদানি প্রধান উৎস দেশ ভারত। মোট আমদানির ৯৯ শতাংশই করা হয় ভারত থেকে। এছাড়া তুরস্ক, পাকিস্তান, মিয়ানমার, চীন ও মিসর থেকেও পেঁয়াজ আমদানি হয়। গত অর্থবছরে মোট ৪ লাখ ৮৩ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। বর্তমানে পেঁয়াজের ওপর মোট ১০ শতাংশ শুল্ককর প্রযোজ্য আছে। গত চার বছরে পেঁয়াজের উৎপাদন বেড়েছে। সে হিসাবে ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ৩৬ লাখ ৪০ হাজার টন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে উৎপাদন হয়েছে ৩৪ লাখ ৫৬ হাজার টন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেড়ে উৎপাদন হয় ৩৯ লাখ ১১ হাজার টন। আর ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে উৎপাদন হয় ৪৪ লাখ ৪৮ হাজার টন।

ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ২ থেকে ৩ মাসে পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল থাকলেও বিগত এক সপ্তাহে পণ্যটির মূল্য প্রায় ৩৭-৪২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিবছর অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাসে মূল্য বৃদ্ধির প্রবণতা থাকলেও এবার এক সপ্তাহে অস্বাভাবিকভাবে মূল্য বেড়েছে। যা বাজার ব্যবস্থাপনা ও মধ্যস্বত্বভোগীদের কারসাজির ইঙ্গিত দেয়।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন বলেন, ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে মধ্যস্বত্বভোগীদের কারসাজির কথা বলা হয়েছে। পেঁয়াজ আমদানি করলে দেশে দাম কমবে তা ঠিক। তখন কারসাজির সঙ্গে যারা জড়িত তারা মূল্য বৃদ্ধি করতে পারবে না। তবে কিছুদিন পর দেশের বাজারে কৃষকের আবাদ করা নতুন পেঁয়া আসতে শুরু করবে। এখন আমদানি করলে কৃষকের ক্ষতি হবে। মূল্য কমাতে আগে অসাধুদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা দরকার। তাতে দাম কমতে পারে। যদি এরপরও দাম না কমে, সেক্ষেত্রে সীমিত পরিমাণে আমদানি করা যেতে পারে। তবে কৃষকের কথাও মাথায় রাখতে হবে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম