Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

লালু যাদবকে নিয়ে মেয়ে রোহিনীর বিস্ফোরক পোস্ট, বাপ-ভাইকে ত্যাগ

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:২৯ পিএম

লালু যাদবকে নিয়ে মেয়ে রোহিনীর বিস্ফোরক পোস্ট, বাপ-ভাইকে ত্যাগ

রোহিনী আচার্য, লালু প্রসাদ যাদব (মাঝে) ও তেজস্বী যাদব। ছবি: সংগৃহীত

বিহারের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও আরজেডি প্রতিষ্ঠাতা লালু প্রসাদ যাদবের মেয়ে রোহিনী আচার্য পরিবার থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করার পাশাপাশি রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। রোববার (১৬ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে তিনি জানান, তাকে অপমান করা হয়েছে, গালাগাল দেওয়া হয়েছে এবং এমনকি তাকে মারতে স্যান্ডেল পর্যন্ত তোলা হয়েছিল।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানায়, রোহিনী আরজেডির সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির জন্য তেজস্বী যাদবের দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগী—সঞ্জয় যাদব ও রমিজকে দায়ী করেছেন। তাদের ‘চাপ’ ও ‘চালচিত্রের’ কারণেই পরিবার ও রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।

পোস্টে রোহিনী লেখেন, ‘গতকাল এক মেয়ে, এক বোন, এক মা–কে জঘন্যভাবে অপমান করা হয়েছে। আমাকে গালাগাল করা হয়েছে, স্যান্ডেল তোলা হয়েছে মারতে। আমি সত্যের সঙ্গে আপস করিনি, আত্মসম্মান ছাড়িনি—তাই আমাকে সহ্য করতে হয়েছে এই অপমান।’

তিনি আরও লিখেন, ‘আমাকে আমার পৈতৃক ভিটা থেকে পাশাপাশি পরিবার থেকেও বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে… আমাকে অনাথ বানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

দ্বিতীয় পোস্টে রোহিনী অভিযোগ করেন, তাকে বলা হয়েছে—তিনি বাবাকে (লালু প্রসাদ যাদব) কিডনি দান করার বিনিময়ে কোটি কোটি টাকা নিয়েছেন, এমনকি ওই কিডনি দানের সূত্রে লোকসভা নির্বাচনের টিকিটও পেয়েছেন। তাঁর ভাষায়, ‘গতকাল আমাকে অভিশাপ দেওয়া হয়েছে, ‘নোংরা’ বলা হয়েছে, বাবাকে কিডনি দান করে কোটি টাকা নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। কিডনির বিনিময়ে লোকসভার টিকিট কিনেছি—এসব বাজে কথা শুনতে হয়েছে।’

৪৬ বছর বয়সি চিকিৎসক রোহিনী বর্তমানে চিকিৎসা পেশা ছেড়ে গৃহিণীর ভূমিকায় নিজেকে সীমাবদ্ধ করেছেন এবং সিঙ্গাপুরে স্বামীর সঙ্গে স্থায়ী হয়েছেন। তবে তিনি গত বছর বিহারের সারণ আসন থেকে লোকসভা নির্বাচন করে হেরে যান। শনিবার রাজনৈতিক জীবন ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমি রাজনীতি ছাড়ছি এবং পরিবারকে ত্যাগ করছি। সঞ্জয় যাদব ও রমিজই আমাকে এটা করতে বলেছে, আর আমিই সব দোষ নিজের ওপর নিচ্ছি।’

সঞ্জয় আরজেডি থেকে নির্বাচিত এমপি। রমিজ উত্তর প্রদেশের একটি রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য হলেও খুব বেশি পরিচিত নন। দুজনেই তেজস্বী যাদবের ঘনিষ্ঠ। তাঁরা এই ঘটনা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

পরে গণমাধ্যমকে রোহিনী বলেন, ‘আমার কোনো পরিবার নেই। পরিবার সম্পর্কে জানতে চাইলে তেজস্বী যাদব, সঞ্জয় যাদব আর রমিজের কাছে যান। ওরাই আমাকে পরিবার থেকে বের করে দিয়েছে। তারা কোনো দায় নেয় না। পুরো দেশ জানতে চাইছে দল এত খারাপ করল কেন। আর আপনি যদি সঞ্জয় যাদব বা রমিজের নাম নেন, আপনাকে অপমান করা হয়, দল থেকে বের করে দেওয়া হয়, গালাগাল করা হয়।’

জল্পনা আছে—এ বছর মে মাসে লালু প্রসাদের বড় ছেলে তেজ প্রতাপ যাদবকে দল থেকে বহিষ্কারের ঘটনায় রোহিনীর মধ্যে ক্ষোভ জমেছিল। তবে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে তাকে তেজস্বী যাদবের পক্ষে সক্রিয় দেখা গেছে। বিহার বিধানসভা নির্বাচনে আরজেডির অবস্থান অত্যন্ত শোচনীয়। দলের আসন ৭৫ থেকে নেমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২৪-এ, এবং মহাগাঠবন্ধন জোট মিলেও মোটে ৩৫টি আসন পেয়েছে।

এদিকে রোহিনীর এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে বিজেপি আরজেডি এবং লালু যাদবকে আক্রমণ করে বলেছে, এটি লালুর ‘পিতৃতান্ত্রিক ও নারীবিদ্বেষী মানসিকতার’ প্রতিফলন। বিজেপি নেতা অমিত মালব্য অভিযোগ করেছেন, বাবাকে কিডনি দান করা সত্ত্বেও রোহিনীকে পাশে না রেখে তেজস্বীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

বিজেপি এমপি নিশিকান্ত দুবে তেজস্বীকে ব্যঙ্গ করে আওরঙ্গজেবের সঙ্গে তুলনা করেছেন, যে নাকি ক্ষমতা দখলের জন্য নিজের বাবা শাহজাহানকে বন্দী করেছিল এবং বড় ভাই দারা শিকোকে সরিয়ে দিয়েছিল।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম