৭ অক্টোবরের ব্যর্থতার দায়ে যে কঠোর ব্যবস্থা নিলেন ইসরাইলি সেনাপ্রধান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ০২:৫৬ পিএম
ইসরাইলি সেনাপ্রধান ইয়াল জামির। ছবি: এএফপি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর চিফ অব স্টাফ রোববার (২২ নভেম্বর) ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলার ব্যর্থতার দায়ে বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছেন এবং কিছু কর্মকর্তাকে তিরস্কার করেছেন। গাজার দিক থেকে ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে ওই হামলার সময়কার প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়ায় বড় ধরনের ঘাটতি ছিল বলে সামরিক বাহিনীর তদন্তে উঠে এসেছে।
সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে জানানো হয়, একদল কর্মকর্তাকে রিজার্ভ ডিউটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং তারা আর সেনাবাহিনীতে কোনো দায়িত্ব পালন করবেন না। কয়েকজনকে আনুষ্ঠানিকভাবে তিরস্কার করা হয়েছে। একজনকে জানানো হয়েছে যে তার সামরিক ক্যারিয়ার এখনই শেষ; আরেকজন নিজ থেকেই পদত্যাগপত্র দিয়েছেন।
রিজার্ভ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে ছিলেন ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর গোয়েন্দা অধিদপ্তর, অপারেশনস অধিদপ্তর এবং গাজা-দায়িত্বপ্রাপ্ত সাউদার্ন কমান্ডের সাবেক প্রধানরা। তারা এর আগে সক্রিয় দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেও রিজার্ভ হিসাবে যুক্ত ছিলেন।
ইসরাইলি সামরিক প্রধান আইয়াল জমির বলেন, ৭ অক্টোবর আইডিএফ তার প্রধান দায়িত্ব—রাষ্ট্রের নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে—ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এটি ছিল গুরুতর, স্পষ্ট ও পদ্ধতিগত ব্যর্থতা। ঘটনার আগের সিদ্ধান্ত ও প্রস্তুতি থেকে শুরু করে ঘটনাকালীন আচরণ—সব ক্ষেত্রেই ঘাটতি ছিল। সেদিনের শিক্ষা বহু এবং তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভবিষ্যতে আইডিএফকে সেই শিক্ষা পথনির্দেশ দেবে।
৭ অক্টোবরের ব্যর্থতার জবাবদিহি নিয়ে ইসরাইলে চাপ ক্রমেই বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার এখনো ওই হামলার বিষয়ে জাতীয় তদন্ত কমিশন গঠন করেনি। শনিবার তেল আবিবে হাজারো বিক্ষোভকারী, যার সঙ্গে বিরোধী দলীয় নেতারাও যোগ দেন, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানান।
ইসরাইলি হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর হামলায় ইসরাইলে প্রায় ১,২০০ মানুষ নিহত হন এবং প্রায় ২৫০ জনকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর পরপরই ইসরাইল গাজায় স্থল ও বিমান অভিযান শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত গোটা উপত্যকাজুড়ে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের হিসাবে, এ পর্যন্ত সেখানে ৬৯ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপ সম্পন্ন হয়েছে, যা চলমান যুদ্ধ শেষ করার বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ।

