ইউরোপে ‘অন-কমান্ড’ হামলার জন্য হামাসের গোপন নেটওয়ার্ক তৈরি, দাবি মোসাদের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৫৬ পিএম
ছবি: এএফপি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ দাবি করেছে, হামাস ইউরোপজুড়ে গোপন সেল গড়ে তুলে একটি সক্রিয় নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে, যা নির্দেশ পেলেই হামলা চালানোর সক্ষমতা রাখে।
মোসাদ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সঙ্গে যৌথ সহযোগিতার মাধ্যমে এই নেটওয়ার্কের অস্ত্রভান্ডার, সংশ্লিষ্ট সন্দেহভাজনদের গ্রেফতার এবং বেশ কিছু পরিকল্পিত হামলা প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ইউরোপীয় অংশীদার দেশগুলো ইসরাইলি ও ইহুদি সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে হামলার পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। জার্মানি ও অস্ট্রিয়ার মতো দেশে যৌথ অভিযানে একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং উদ্ধার হয়েছে ‘অন-কমান্ড’ হামলায় ব্যবহারের জন্য রাখা অস্ত্রের মজুদ।
গত সেপ্টেম্বরে ভিয়েনায় পাওয়া একটি অস্ত্রগুদামকে তদন্তের বড় অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করেছে মোসাদ। অস্ট্রিয়ার নিরাপত্তা সংস্থা ডিএসএন (ডিএসএন) সেখান থেকে হ্যান্ডগান ও বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করে, যা পরে শনাক্ত হয় হামাসের জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য বাসেম নাঈমের ছেলে মোহাম্মদ নাঈমের সঙ্গে যুক্ত। বাসেম নাঈম হামাসের গাজা নেতৃত্বাধীন জ্যেষ্ঠ নেতা খালিল আল-হাইয়ার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।
মোসাদের অভিযোগ, হামাসের বিদেশি নেতারা নীরবে এসব নেটওয়ার্ক পরিচালনায় সহযোগিতা করছেন। বিবৃতিতে বলা হয়, সংগঠনের কাতারভিত্তিক নেতৃত্বের কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার সম্পৃক্ততা নতুন কিছু নয়। তারা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভাবমূর্তি রক্ষার জন্য প্রকাশ্যে এসব সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে যাচ্ছে।
মোসাদ আরও জানায়, গত সেপ্টেম্বরে মোহাম্মদ নাঈম ও তার পিতা বাসেম নাঈমের কাতারে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যা ইউরোপে হামাসের কর্মকাণ্ডে নেতৃত্বের আনুষ্ঠানিক সমর্থনের ইঙ্গিত বহন করতে পারে। সংস্থাটির মতে, হামাস নেতৃত্বের ধারাবাহিক অস্বীকার কখনো কখনো ‘রোগ অপারেটিভ’ বা নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা সদস্যদের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারানোর ইঙ্গিতও দিতে পারে।
তদন্তকারীরা আরও নজর রাখছেন তুরস্কভিত্তিক হামাস-সংযুক্ত ব্যক্তিদের ওপর। জার্মান কর্তৃপক্ষ নভেম্বর মাসে বুরহান আল-খাতিব নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে, যিনি আগে তুরস্কে সক্রিয় ছিলেন বলে জানা গেছে।
এদিকে ইউরোপীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো শুধুমাত্র নিরাপত্তা অভিযানেই নয়, বরং অর্থায়ন ও মতাদর্শ বিস্তারের সুযোগ নিয়ন্ত্রণেও মনোযোগ বাড়িয়েছে। বিশেষ করে জার্মানি বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ওপর কঠোর নজরদারি করছে, যেগুলোকে হামাসের অর্থ সংগ্রহ বা চরমপন্থা ছড়ানোর কেন্দ্র হিসেবে সন্দেহ করা হচ্ছে।
মোসাদ বলেছে, ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলার পর হামাস বিদেশে তাদের গোপন নেটওয়ার্ক দ্রুত সম্প্রসারণের চেষ্টা করছে। ইরান ও তার মিত্র গোষ্ঠীগুলোর মতো কৌশল অনুসরণ করে ইউরোপসহ বিভিন্ন অঞ্চলে সেল গড়ে তুলছে তারা। সংস্থাটির দাবি, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ‘ডজনখানেক’ হামলার পরিকল্পনা প্রতিহত করতে তারা কাজ করছে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইসরাইলি ও ইহুদি সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই তাদের প্রধান লক্ষ্য।
সূত্র: এনডিটিভি

