Logo
Logo
×

আন্তর্জাতিক

জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে কঠোর অভিবাসননীতি আয়ারল্যান্ডের

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:১৪ পিএম

জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে কঠোর অভিবাসননীতি আয়ারল্যান্ডের

চলতি বছরের এপ্রিলে আয়ারল্যান্ডের জনসংখ্যা প্রায় ৫৪ লাখ ৬০ হাজারে পৌঁছেছে। ছবি: সংগৃহীত

অভিবাসন ও আশ্রয়নীতি আরও কঠোর করতে নতুন কিছু পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে আয়ারল্যান্ড। দেশটির মন্ত্রীরা বলেছেন, দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান আশ্রয়প্রার্থী আবাসন ও সরকারি পরিষেবা খাতকে ব্যাপক চাপে ফেলেছে।

আয়ারল্যান্ডের বিচারমন্ত্রী জিম ও’কালাহান গতকাল বুধবার এ সংস্কারের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, উদ্বেগজনক হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান আশ্রয়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের এ পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি ছিল।

জিম ও’কালাহান আরও বলেন, ‘গত বছর আমাদের দেশের জনসংখ্যা ১ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের গড় বৃদ্ধির তুলনায় সাত গুণ। জনসংখ্যা বৃদ্ধি ইতিবাচক। তবে যে হারে বাড়ছে, তা উদ্বেগজনক।’

চলতি বছরের এপ্রিলে আয়ারল্যান্ডের জনসংখ্যা প্রায় ৫৪ লাখ ৬০ হাজারে পৌঁছেছে।

আয়ারল্যান্ডের অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২২ সালের পর থেকে দেশটিতে নিট অভিবাসন প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। অর্থাৎ বছরে গড়ে ৭২ হাজার অভিবাসী এসেছেন। অভিবাসীর সংখ্যা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছেন কর্মসংস্থান ভিসা ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পুনর্মিলনের ভিসায় আসা ব্যক্তি এবং ইউক্রেন থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীরা।

আয়ারল্যান্ডে আশ্রয়ের আবেদনও নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। ২০২৪ সালে প্রায় ১৮ হাজার ৬৫১ জন দেশটির কাছে আশ্রয় চেয়েছেন। এটি রেকর্ড সর্বোচ্চ। এর আগের বছর ১৩ হাজার ২৭৬ জন আশ্রয় চেয়েছিলেন।

আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি সাম্প্রতিক বছরগুলোয় আয়ারল্যান্ডে বিক্ষোভ ও দাঙ্গা উসকে দিয়েছে।

গত মাসেই দক্ষিণ-পশ্চিম ডাবলিনে অন্তত এক হাজার অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভকারীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। আশ্রয়প্রার্থীদের থাকার জন্য ব্যবহৃত একটি হোটেলে এক শিশুর ওপর যৌন নিপীড়নের খবর প্রকাশ হওয়ার পর এ বিক্ষোভ হয়।


গতকাল মন্ত্রিসভার অনুমোদন পাওয়া নতুন নিয়মগুলোকে আয়ারল্যান্ডে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় অভিবাসন-সংস্কার হিসেবে দেখা হচ্ছে।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, যেসব আশ্রয়প্রার্থী চাকরিতে নিয়োজিত, তাঁদের এখন থেকে রাষ্ট্রীয় আবাসন ব্যয়ের অংশ হিসেবে নিজেদের সাপ্তাহিক আয় থেকে সরকারকে ১০ থেকে ৪০ শতাংশ দিতে হবে। বিচারমন্ত্রী ও’কালাহান বলেন, প্রায় ৭ হাজার ৫০০ আশ্রয়প্রার্থী এ নিয়মের আওতায় আসবেন।

পরিবার সঙ্গে পুনর্মিলনের নিয়মেও কঠোরতা আনা হয়েছে। কেউ যদি ইউরোপীয় অর্থনৈতিক এলাকাবহির্ভূত দেশ থেকে কোনো আত্মীয়কে আয়ারল্যান্ড আনতে চান, তবে তাকে বছরে ৪৪ হাজার ইউরোর বেশি আয় করতে হবে এবং যথাযথ আবাসনের প্রমাণ দিতে হবে।


এদিকে শরণার্থীদের নাগরিকত্ব পাওয়ার নিয়মও কঠোর হচ্ছে। নাগরিকত্বের জন্য এত দিন তিন বছর আয়ারল্যান্ডে থাকতে হতো। এখন তা বাড়িয়ে ৫ বছর করা হচ্ছে। যারা দীর্ঘ সময় ধরে নির্দিষ্ট সামাজিক কল্যাণ ভাতা নিচ্ছেন, তারা নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য হবেন না।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ালে বা গুরুতর অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলে সরকার তাঁর আশ্রয়ের মর্যাদা বাতিল করতে পারবে। বিচারমন্ত্রী বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা বিরল হলেও আইনে এ ক্ষমতা থাকা জরুরি।’

জিম ও’কালাহান বলেন, কিছু শিক্ষা কর্মসূচিকে দীর্ঘমেয়াদি বসবাসের উদ্দেশ্যে অপব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে শিক্ষার্থী ভিসায়ও কড়াকড়ি আরোপের চিন্তা করছে সরকার।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম