সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে পাকিস্তানের ত্যাগকে স্বীকৃতি দিলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৫, ০৮:৩৯ এএম
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ২৫ জুলাই ওয়াশিংটনের স্টেট ডিপার্টমেন্টে বৈঠক করেন। — এএফপি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ওয়াশিংটন সফরে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের সঙ্গে বৈঠকে দেশটির সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে ‘অতুলনীয় ত্যাগের’ প্রশংসা করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। শুক্রবার (২৫ জুলাই) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নের নতুন দিগন্তের ইঙ্গিত মিলেছে।
এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে জিও নিউজ।
যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক শীতলতার পর সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সম্পর্কের বরফ গলছে। এর আগে হোয়াইট হাউসে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থার খবরে বলা হয়, ইসহাক দারকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে পৌঁছালে তাকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানানো হয়। বৈঠকে পাকিস্তানের যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রদূত রিজওয়ান সাঈদ শেখসহ উভয় দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ৪০ মিনিটব্যাপী এ বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা, আঞ্চলিক শান্তিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে উভয় পক্ষই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর ও স্থিতিশীল করতে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে। ইসহাক ডার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা প্রশমনে ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠায় তাঁর উদ্যোগ প্রশংসনীয়।
তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান চায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরও গভীর ও টেকসই সম্পর্ক। দুই দেশের বাণিজ্য আলোচনায় অগ্রগতির বিষয়টি তুলে ধরে ডার বলেন, আঞ্চলিক শান্তি নিয়ে উভয় দেশের দৃষ্টিভঙ্গি ও স্বার্থের মধ্যে ইতিবাচক সাযুজ্য তৈরি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত পাকিস্তানি প্রবাসীরা দুই দেশের মধ্যে সেতুবন্ধনের কাজ করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
চলতি বছরের মার্চে পাকিস্তানের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া আইএস-খোরাসান জঙ্গি শরিফুল্লাহকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের পর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরও পাকিস্তানের সঙ্গে সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরে।
এর আগে হোয়াইট হাউসে সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের সঙ্গে বৈঠকে ট্রাম্প বাণিজ্য, খনিজ সম্পদ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, শক্তি, ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং উদীয়মান প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা করেন। ওই বৈঠকের পরই পাকিস্তান-ভারতের মধ্যে সশস্ত্র সংঘর্ষের অবসান ঘটে। পাকিস্তান তখন ট্রাম্পকে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত করে।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প জানান, ফিল্ড মার্শাল মুনিরের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পাওয়া ছিল তাঁর জন্য ‘সম্মানের’। তিনি বলেন, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ থামানোর জন্য তিনি সেনাপ্রধানকে ধন্যবাদ জানাতে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
যদিও পাকিস্তান বারবার ট্রাম্পের উদ্যোগের প্রশংসা করলেও ভারত শুরু থেকেই এর বিরোধিতা করে আসছে এবং জানিয়ে আসছে যে যুদ্ধবিরতিতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা ছিল না। তবে ট্রাম্প তাঁর অবস্থান থেকে একচুলও সরেননি এবং একাধিকবার কাশ্মীর সমস্যায় মধ্যস্থতা করার প্রস্তাবও দিয়েছেন — যা মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরও নিশ্চিত করেছে।

