ভিডিওতে কান ধরে ওঠবস নেতার
পশ্চিমবঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতিতে বিপাকে তৃণমূল
কলকাতা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:১৮ পিএম
ভিডিওতে কান ধরে ওঠবস করেন তৃণমূল নেতা মাইতি। সংগৃহীত ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি ফের তোলপাড়। স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে জমছে আলোচনা-সমালোচনা। তমলুক পৌরসভার কাউন্সিলর এবং তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সহ-সভাপতি পার্থসারথি মাইতি হঠাৎ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন।
সেখানে দেখা গেছে, তিনি কান ধরে ওঠবস করছেন এবং মানুষের কাছে ক্ষমা চাইছেন। কারণ হিসেবে বলেছেন, রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগে যে দুর্নীতি হয়েছে তাতে জেলার এবং রাজ্যের অনেক নেতা জড়িত ছিলেন অথচ তারা মুখ খোলেননি।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ সরকার ১৮০৪ জন অযোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকার তালিকা প্রকাশ করেছে। সেই তালিকায় উঠে এসেছে শাসক দলের একাধিক নেতা। তাদের আত্মীয়-স্বজনের নাম।
অভিযোগ উঠেছে ঘুষ নিয়ে চাকরি দেওয়ার। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই পার্থসারথি মাইতি বলেন, দলের অনেকেই টাকা নিয়ে নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত থেকেও এখন চুপ করে আছেন। এমনকি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ। তার অভিযোগ, ২০১৫-১৬ সালে যখন এই নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে তখন শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল কংগ্রেসে ছিলেন এবং দলীয় প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। সুতরাং তিনি নিজেকে সম্পূর্ণ দায়মুক্ত করতে পারেন না। কিন্তু আজ তিনি বিজেপিতে গিয়ে যেন নির্দোষ সাজছেন।
নিজের দলের এই ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে তিনি সাধারণ মানুষের কাছে মাথা নত করলেন এবং কান ধরে ওঠবস করে প্রতীকী শাস্তি নিলেন।
ভিডিওটি প্রকাশ পেতেই রাজ্যজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন পড়ে যায়। বিরোধীরা বলছে, এটি কেবল নাটক।
রাজনীতির বিশ্লেষকেরা বলছেন, মাইতির এই পদক্ষেপ তৃণমূল কংগ্রেসকে আরও অস্বস্তিতে ফেলেছে। কারণ একদিকে বিরোধীরা শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে লাগাতার আক্রমণ করছে। অন্যদিকে শাসক দলেরই একজন কাউন্সিলর প্রকাশ্যে নিজের দলের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলছেন। এর ফলে সাধারণ মানুষের কাছে বার্তা যাচ্ছে যে অভিযোগগুলো অমূলক নয়। বরং সত্যিই শাসক দলের ভেতরে সমস্যা আছে। শুভেন্দু অধিকারীর নাম উল্লেখ করে মাইতি আসলে বোঝাতে চেয়েছেন, তিনি বিজেপিতে গিয়ে নির্দোষ সাজার চেষ্টা করলেও অতীতে এই নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে তিনি কোনো না কোনোভাবে যুক্ত ছিলেন। অর্থাৎ তৃণমূল ও বিজেপি উভয় দলকেই এই দুর্নীতির দায় এড়িয়ে যাওয়া কঠিন হবে।
