সিগারেট খাওয়া ও বেচাকেনা হালাল নাকি হারাম? ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বাংলাদেশের জনপ্রিয় ইসলামি ব্যক্তিত্ব ও আলোচক শায়খ আহমাদুল্লাহ সম্প্রতি এক ওয়াজ মাহফিলে সিগারেট খাওয়া ও এর বেচাকেনা নিয়ে একটি স্পর্শকাতর প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, যে জিনিস খাওয়া, পান করা বা ব্যবহার করা হারাম, ইসলামের বিধান অনুযায়ী তার বেচাকেনাও হারাম।
তিনি স্পষ্ট করেছেন যে, ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হওয়ার পাশাপাশি এর বেচাকেনা কীভাবে একজন বিক্রেতার উপার্জনকে প্রভাবিত করে এবং কেন এই ব্যবসা থেকে বিরত থাকা জরুরি।
সিগারেট কেনা, খাওয়া ও বিক্রি হালাল?
শায়খ আহমাদুল্লাহ দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেন, ইসলামে যে জিনিস খাওয়া, পান করা, বা ব্যবহার করা নিষিদ্ধ, তা বেচাকেনাও নিষিদ্ধ।
"যে জিনিস খাওয়া, পান করা, ব্যবহার করা হারাম; তা বেচাকেনা করাও হারাম। ইসলামে যে জিনিস খাওয়া, পান করা, ব্যবহার নিষেধ—তা বেচাকেনা করাও নিষেধ।"
দোকানদারের উপার্জন কি হালাল হবে?
একজন দোকানদার যদি নিজে সিগারেট না খেয়েও কেবল বিক্রি করেন, তার উপার্জন হালাল হবে না।
বিক্রয়ের অংশ: সিগারেট বিক্রি করে যা উপার্জন হবে, শুধুমাত্র সেই অংশটুকুই হারাম বলে গণ্য হবে।
অন্যান্য দ্রব্য: তবে দোকানে চাল, ডাল, তেল বা অন্যান্য যেসব দ্রব্য বিক্রি হবে, সেই উপার্জন হালাল বলে বিবেচিত হবে।
আরও পড়ুন
হালাল উপার্জনের পথে সিগারেট বিক্রেতার ‘ত্যাগ’
দোকানদারদের প্রচলিত ধারণা, 'বিড়ি-সিগারেট ছাড়া দোকান চলে না'—এই প্রসঙ্গে শায়খ আহমাদুল্লাহ একে একটি ঈমানি চ্যালেঞ্জ হিসেবে তুলে ধরেন।
জান্নাতের সেক্রিফাইস: তিনি প্রশ্ন করেন, "আপনি আল্লাহর জন্য সেক্রিফাইসটা কী করলেন? কেয়ামতের ময়দানে আল্লাহর কাছে জান্নাত চাইবেন কোন মুখে?"
কম আয় ও বরকত: তিনি বলেন, সিগারেট বিক্রি বন্ধ করলে সাময়িকভাবে আয় কম হতে পারে, কিন্তু এসব হারাম উপার্জন ব্যক্তির আয়ের বরকত নষ্ট করে দিত। কম আয় হলেও, এই ত্যাগ জান্নাত পাওয়ার আশা তৈরি করে।
স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও বিক্রেতার দায়
সিগারেট বিক্রির ফলে সৃষ্ট স্বাস্থ্যঝুঁকির জন্য বিক্রেতাকে দায়ী করেন শায়খ আহমাদুল্লাহ:
ক্যানসারের কারণ: তিনি বলেন, ধূমপানের কারণে বাংলাদেশে ঘরে ঘরে ক্যানসার রোগীর সংখ্যা বাড়ছে এবং এর জন্য বিক্রেতাও বড় আসামি।
সর্বস্বান্ত হওয়ার কারণ: "যাকে বিক্রি করছেন, তিনি ক্যানসার আক্রান্ত হলেন। জমিজমা বিক্রি করে সর্বস্বান্ত হয়ে সন্তানদের অসহায় করে চলে গেলেন। এ কারণে আপনিও বড় আসামি।"
শায়খ আহমাদুল্লাহ সব দোকানদারকে সৎসাহস রেখে সিগারেট বিক্রি থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। তিনি মনে করেন, এই ত্যাগ একদিকে যেমন মনে শান্তি দেবে, তেমনি অন্যদিকে ক্যানসার আইটেম বিক্রি করে কাউকে সর্বস্বান্ত করার দায় থেকে মুক্ত রাখবে।
