Logo
Logo
×

ইসলাম ও জীবন

মানব সেবা ছিল নবীদের বিশেষ গুণ

আরাফাত বিন শাহ আলম

আরাফাত বিন শাহ আলম

প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৫৫ এএম

মানব সেবা ছিল নবীদের বিশেষ গুণ

সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব মানুষের সেবা করা ছিল নবী-রাসুলদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য।

সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব মানুষের সেবা করা ছিল নবী-রাসুলদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য। যারা নবীদের পথে চলতে চায় তারা যেন মানব উপকারকে দায়িত্ব মনে করে নবীদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে। পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি মানুষের উপকার করেছেন নবীরা।

তাওহিদ ছাড়া  দুনিয়া ও আখেরাতে সফলতা ও শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করা সম্ভব নয়। আর নবীরা তাওহিদের দাওয়াতের মাধ্যমে মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর পথ দেখিয়েছেন। সঠিক পথের দিশা দিয়েছেন।

নবীরা শুধু মানুষের পরকালীন উপকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলেন না। বরং তারা মানুষের পার্থিব জীবনেও কল্যানের পথ দেখিয়েছেন।

মিশরের দুর্দিনে, খাদ্য সংকট ও দুর্ভিক্ষের সময় ইউসুফ (আ.) খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন। মানুষের উপকার করেছেন। চরম দূর্দশা থেকে মানুষকে কল্যানের দিকে নিয়ে এসেছেন।

ইউসুফ বলল, আপনি আমাকে দেশের অর্থ-সম্পদের (ব্যবস্থাপনা) কার্যে নিযুক্ত করুন। নিশ্চিত থাকুন আমি রক্ষণাবেক্ষণ বেশ ভালো পারি এবং আমি (এ কাজের) পূর্ণ জ্ঞান রাখি। (সুরা ইউসুফ-৫৫)

যখন মুসা (আ.) ফেরাউনি সম্রাজ্য থেকে মাদইয়ানের কূপের কাছে পৌঁছল, সেখানে দেখল, দু’জন নারী ছাড়া অন্য সকল মানুষ তাদের পশুদের পানি পান করাচ্ছে। কূপের পাথর সরিয়ে তিনি তাদের পানির ব্যবস্থা করলেন। ছাগল সমূহেরও পিপাসা নিবারণ হল।

আমাদের প্রিয় নবীকে (সা.) উদ্দেশ্য করে খাদিজা (রা.) বললেন, আল্লাহর কসম, কখনই নয়। আল্লাহ আপনাকে কখনো লাঞ্ছিত করবেন না।  আপনি তো আত্মীয়–স্বজনের সঙ্গে সদাচরণ করেন, অসহায় দুস্থদের দায়িত্ব বহন করেন, নিঃস্বকে সহযোগিতা করেন, মেহমানের আপ্যায়ন করেন এবং হক পথের দুর্দশাগ্রস্থকে সাহায্য করেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ০৩)

সাহাবি ও পূর্বসূরীরাও ছিলেন এ পথের অনুসারী

হজরত আবু বকর (রা.) তিনিও ছিলেন তার প্রিয় বন্ধু রাসুল (সা.) এর পূর্ণ অনুসারী। আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করতেন। অভাবী ও দরিদ্রদের সাহায্য করতেন। যখন আবু বকরের কওম তাঁকে বের করে দিতে উদ্যত হলো ইবনু দাগিনা বলল, আপনার মতো লোক বেরিয়ে যেতে পারে না এবং আপনার মতো লোককে বহিষ্কার করাও চলে না। কেননা আপনি নিঃস্বকে সাহায্য করেন, আত্মীয়তার বন্ধনকে রক্ষা করেন, অক্ষমের বোঝা নিজে বহন করেন, মেহমানদারী করেন এবং দুর্যোগের সময় মানুষকে সাহায্য করেন।  (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২১৭৫)

ওমর (রা.) বিধবাদের দেখাশুনা করতেন। রাতে তাদের পানির ব্যবস্থা করাতেন।

আলি বিন হুসাইন (রহ.) রাতের আঁধারে অসহায়দের বাড়ীতে রুটি (খাবার) পৌঁছে দিতেন। তার মৃত্যুর পর এটি বন্ধ হয়ে যায়।

ইবনু ইসহাক বলেন, অসহায় মদিনাবাসীর অজান্তেই রাতে তাদের বাসায় খাবার পৌঁছে যেত। আলি বিন হুসাইন মারা গেলে এমনটি আর দেখা যায়নি। (সিয়ারু আলামিন নুবালা ৪/৩৯৩)

আমরা যাদের উত্তরসূরী দাবি করি, তারা মানব সেবার সূযোগকে পেলে আনন্দিত হয়ে যেতেন। মানব সেবাকে জীবনের মূল্যবান কাজ মনে করতেন।

সুফিয়ান সাওরি (রহ.) তার বাড়ীর দরজায় কখনো কোন ভিক্ষুক দেখলে আনন্দিত হয়ে বলতেন, স্বাগতম আপনাকে, এসেছেন আমার গুনাহ ধুতে।

ফুদাইল ইবনু ইয়াদ (রহ.) বলতেন, ভিক্ষুকরা কতইনা উত্তম, বিনা পারিশ্রমিকে আমাদের আখিরাতের পাথেয়সমূহ মিজানের পাল্লায় রেখে আসে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম