|
ফলো করুন |
|
|---|---|
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানব হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তার উম্মতও শ্রেষ্ঠ উম্মত। নবীজিরও ছিল- পরিবার, সন্তান-সন্ততি। আজকে নবীজির সন্তান-সন্ততি নিয়ে আলোচনা করব।
রাসুলের (সা.) তিন ছেলে ও চার মেয়ে জন্মগ্রহন করেন। তিন ছেলেই শৈশবে মৃত্যুবরণ করেন। রাসুলের (সা.) সব সন্তান হজরত খাদিজা (রা.) থেকে। শুধুমাত্র ইবরাহিম (রা.) মারিয়া কিবতিয়ার ঔরসে জন্মগ্রহণ করেন।
তিন ছেলে
কাসিম, যিনি নবুয়তের পূর্বে মক্কায় জন্ম গ্রহন করেন এক বছর ১৭ মাস বয়সে মক্কায় মৃত্যু বরণ করেন। কাসিমের নামেই রাসুলের (সা.) উপনাম আবুল কাসিম।
আব্দুল্লাহ, রাসুল (সা.) নবুয়ত প্রাপ্তির পর জন্ম গ্রহন করেন এবং শৈশব মৃত্যু বরণ করেন। তার উপাধি ছিল তাহির, তায়্যিব।
ইবরাহিম, মারিয়া কিবতিয়া থেকে, অষ্টম হিজরির জিলহজ মাসে মদিনায় তার জন্ম আর দশম হিজরিতে মৃত্যু। মৃত্যুর সময় বয়স ছিল আঠারো মাস।
কন্যারা
রাসুলের (সা.) বড় মেয়ে হজরত যয়নাব (রা.)। রাসুল (সা.) নবুয়ত প্রাপ্তির দশ বছর পূর্বে জন্ম গ্রহন করেন। নিজ খালাতো ভাই আবুল আস বিন রবির সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ইসলাম গ্রহণ করে তিনি মদিনায় হিজরত করেন। তার স্বামী হিজরতের ছয় বছর পর ইসলাম গ্রহণ করেন। ত্রিশ বছর বয়সে অষ্টম হিজরি সালে মৃত্যুবরণ করেন।
১২ হিজরি সালের জিলহজ মাসে তার স্বামীও ইন্তেকাল করেন। যয়নাবের দুই সন্তান,যথা– আলি বিন আবুল আস (রা.) ও উমামা বিন আবুল আস (রা.)। ফাতেমার মৃত্যুর পর উমর (রা.)-এর খেলাফত আমলে হজরত আলির (রা.) সঙ্গে উমামার বিয়ে হয়। (সিয়ারু আলামিন নুবালা)
রুকাইয়া বিনতু মুহাম্মদ (সা.)
হজরত খাদিজার (রা.) সঙ্গে রুকাইয়াও ইসলাম গ্রহণ করেন। নবুওয়াতের আগে উতবা বিন আবু লাহাবের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল। যখন সুরা লাহাব নাজিল হয়, তখন আবু লাহাব তার ছেলেকে বলল, ‘তুমি যদি মুহাম্মাদের মেয়েকে তালাক না দাও, তাহলে আমি তোমার পিতা নই এবং তুমিও আমার ছেলে নও।’ তখন সে নবী-কন্যা রুকাইয়ার সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটায়।
বিয়ে হলেও রুকাইয়ার সঙ্গে তার ঘর সংসার হয়নি। পরবর্তীতে উসমান (রা.)-এর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। স্বামীর সঙ্গে দুইবারই আবিসিনিয়া (ইথিওপিয়া) হিজরত করেন। রুকাইয়ার ছেলে আব্দুল্লাহ ছাড়া তার আর কোন সন্তান নেই। শৈশবে, দুই বছর বয়সে আবদুল্লাহ মারা যান। তার নামেই উসমান (রা.)-এর উপনাম আবু আব্দুল্লাহ। রুকাইয়া মদিনায় হিজরত করেন।
বদর যুদ্ধের পূর্বে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। আর এই অসুস্থতায় দ্বিতীয় হিজরি সালের রমযান মাসে মৃত্যু বরণ করেন। তখনো রাসুল (সা.) বদর যুদ্ধ থেকে মদিনায় ফেরেননি। (তাবকাত ইবনে সা'দ)
উম্মু কুলসুম (রা.)
উতাইবা বিন আবু লাহাবের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সুরা লাহাব নাজিল হলে আবু লাহাব পুত্র উতাইবাকে নবী-কন্যাকে তালাক দিতে বাধ্য করে। সংসার হওয়ার পূর্বেই তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে যায়। ইসলাম গ্রহণ করে তিনি মদিনায় হিজরত করেন। বোন রুকাইয়ার মৃত্যুর পর, তৃতীয় হিজরির রবিউল আউয়াল মাসে উসমান (রা.)-এর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তাঁর কোন সন্তান জন্ম হয়নি।
নবম হিজরি শাবান মাসে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। (সিয়ারু আলামিন নুবালা)
ফাতেমা (রা.)
নবুয়তের কিছুকাল পূর্বে তার জন্ম। বদর যুদ্ধের পর দ্বিতীয় হিজরির জিলকদ মাসে হজরত আলির (রা.) সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ফাতেমা (রা.)-এর তিন ছেলে ও দুই মেয়ে।
হাসান বিন আলি (রা.)
হুসাইন বিন আলি (রা.)
মুহসিন বিন আলি (রা.)
উম্মু কুলসুম বিনতু আলি (রা.)
যয়নাব বিনতু আলি (রা.)
রাসুল (সা.)-এর ইন্তেকালের ছয় মাস পর হিজরি ১১ সনের রমজান মাসে ফাতিমা (রা.) ইন্তেকাল করেন। (সিয়ারু আলামিন নুবালা)

