Logo
Logo
×

ইসলাম ও জীবন

জুলাই বিপ্লবে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও আলেমদের অবিস্মরণীয় অবদান

Icon

নূর আহমাদ

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

জুলাই বিপ্লবে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও আলেমদের অবিস্মরণীয় অবদান

তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার (টঙ্গী শাখা) আলিম প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন হাফেজ নাসির ইসলাম। স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হবেন। মাদ্রাসার পরীক্ষায় ভালো ফলাফলও করছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত নাসিরের স্বপ্ন অপূর্ণই থেকে গেছে।

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণের বিচার দাবিতে ২০ জুলাই মাদ্রাসার সামনে বিক্ষোভ করেছিলেন তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার ছাত্ররা। ওই বিক্ষোভে অংশ নেন নাসির ইসলাম। বেলা ৩টার দিকে বিক্ষোভে গুলি চালায় পুলিশ। একটি গুলি এসে নাসিরের বুকে লাগে এবং শরীর ভেদ করে বেরিয়ে যায়। আহত নাসিরকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই কিছু সময় পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নাসির ইসলামের পিতা মো. আশরাফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিকাল ৪টার দিকে নাসিরের মোবাইল থেকে এক ব্যক্তি আমাকে ফোন দিয়ে জানান, নাসিরকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু আমরা সেখানে গিয়ে ছেলেকে আর জীবিত অবস্থায় পাইনি। হাসপাতালের লোকজন বলছিল তাকে সঠিক চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। চিকিৎসা দিলে হয়তো বাঁচানো যেত।’

জুলাই আন্দোলনে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সক্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের। ওই সময় যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, গাজীপুর, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদ্রাসাছাত্রদের বড় ভূমিকা ছিল। বিশেষত ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে মাদ্রাসাছাত্রদের প্রতিরোধ আলোচিত ঘটনা ছিল। মাদ্রাসাছাত্ররা ১৭ জুলাই থেকে যাত্রাবাড়ীতে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ওইদিন রাত থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত তাদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।

এ ছাড়া ৩ থেকে ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী এলাকায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী-জনতা ও পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। ১৭ জুলাই সকালে যাত্রাবাড়ীতে বিক্ষোভ শুরু করেন স্থানীয় স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা। বিকালের দিকে শনির আখড়া এলাকায় আন্দোলনকারীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে উঠতে গেলে পুলিশ গুলি ছুড়তে শুরু করে।

এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের কয়েক দফা পালটা ধাওয়া হয়। একপর্যায়ে পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়লে আন্দোলনকারীসহ বেশ কয়েকজন পথচারীও আহত হন। এদিন আহতদের মধ্যে ছিল দুবছরের এক শিশুও। সংঘর্ষের একপর্যায়ে হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজাসহ সড়কের বিভিন্ন স্থানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ১৮ ও ১৯ জুলাই এ এলাকায় বিক্ষোভ আরও ব্যাপক আকার ধারণ করে। ২০ জুলাই থেকে কারফিউয়ের কারণে ঢাকাসহ দেশের অনেক স্থানে আন্দোলন কিছুটা শিথিল হয়ে আসে। কিন্তু ব্যতিক্রম ছিল যাত্রাবাড়ী।

২২ জুলাই পর্যন্ত এখানে পুলিশ-আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ চলে। এ সময় পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাসের শেল, গুলি ব্যবহার করেও আন্দোলনকারীদের সড়ক থেকে সরাতে ব্যর্থ হয়। এরপর ২৩ জুলাই যাত্রাবাড়ী এলাকা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে নেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ৩ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ মিছিল এবং ৪ আগস্ট থেকে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হলে যাত্রাবাড়ী এলাকায় আবারও প্রতিরোধ গড়ে তোলেন আন্দোলনকারীরা। ৩ থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত এ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও জনতার দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।

আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের তথ্য অনুযায়ী জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে যাত্রাবাড়ী এলাকায় পুলিশের গুলিতে শতাধিক নিহত এবং সহস্রাধিক আহত হয়েছেন। জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের শহীদদের তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আন্দোলনে যাত্রাবাড়ীতে নিহত হন অন্তত ১১৫ জন।

আবুল কালাম মিয়া নামে যাত্রাবাড়ীর স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘যাত্রাবাড়ীতে পুলিশ গুলি চালানোর পর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমরা সাধারণ মানুষও অংশগ্রহণ করি। ১৯ ও ২০ জুলাই চোখের সামনেই আমি তিনজনকে গুলিবিদ্ধ হতে দেখি, যাদের মধ্যে একজন মাদ্রাসাছাত্র ছিল। সে পরে বেঁচেছিল কিনা জানি না। এরপর আন্দোলন যখন একটু থিতিয়ে আসে তখন শুরু হয় পুলিশি হয়রানি। একদিন আমার একটু সামনে থেকে দুজন মাদ্রাসাছাত্রকে ধরে নেয়। এ ঘটনার পর আমি আমার এক আত্মীয়ের বাড়ি চলে যাই।’

জুলাই অভ্যুত্থান সফলতার পেছনে সাধারণ ছাত্র-জনতার পাশাপাশি কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের অবদানও ছিল চোখে পড়ার মতো। অভ্যুত্থানের সঙ্গে কওমি অঙ্গনের সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত গভীর।

এ অঙ্গন থেকে যারা আন্দোলনের মাঠে সরাসরি অংশ নিয়েছেন এবং অসীম সাহসিকতা ও দূরদর্শিতার সঙ্গে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদেরই একজন রাজধানীর জামিয়া আরাবিয়্যা দারুল উলূমের মুহাদ্দিস ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ওয়ালি উল্লাহ আরমান। আন্দোলনের দিনগুলোর অভিজ্ঞতা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জুলাইয়ের ১৫ তারিখের পর থেকে ছাত্র জনতার সংগ্রাম অগ্নিগর্ভ রূপ ধারণ করে। আমি রামপুরা ওয়াপদা রোড এলাকায় জনতার বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিই। রামপুরা-বাড্ডা রাজধানীর প্রতিবাদ-প্রতিরোধের অন্যতম প্রধান স্পট হওয়ার ফলে ওখানটায় মারণাস্ত্রধারী বাহিনীর উপস্থিতি এবং রুদ্র মূর্তি ছিল প্রচণ্ড। ১৭ তারিখে ওয়াপদা রোডের একটি মিছিলে বিজিবি কিংবা অন্য কোনো বাহিনীর গুলিতে আমাদের পার্শ্ববর্তী মাদ্রাসার একটি ছাত্র গুলিবিদ্ধ হয়, গুলিটি তার শরীরের একদিক দিয়ে ঢুকে অন্যদিক দিয়ে বের হয়ে যায়। ওই মিছিলে আমিও ছিলাম। রামপুরা বউবাজার এলাকায় তিন দিন আন্দোলনকারী ছাত্রজনতাকে খাবার এবং পানি দিয়ে পাশে দাঁড়ানোর সৌভাগ্য হয়েছিল। আন্দোলনের শেষ তিন দিন (৩-৫ আগস্ট) প্রতিদিন শাহবাগ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, জাতীয় প্রেস ক্লাব ও পল্টনে প্রতিবাদ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছি। আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে সংগ্রামীদের হাতে সাধ্যমতো পানির বোতল তুলে দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, দেশের নানা প্রান্তে সরকারি বাহিনীর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ১৯ জুলাই জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সর্বদলীয় প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। ওই সভায় আমরা অংশগ্রহণ করি। এর আগে সভাস্থলে যাওয়ার জন্য জুমার পর আমরা সেগুনবাগিচা হয়ে প্রেস ক্লাবের দিকে অগ্রসর হলেই প্রথমে সশস্ত্র আর্মড পুলিশের বাধার সম্মুখীন হই। তাদের বাধা ডিঙিয়ে প্রেস ক্লাবের বিপরীতে মূল সড়কে পৌঁছে তিন দিক থেকে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ি। হাইকোর্টের দিক থেকে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড এবং টিয়ারশেল ছুড়ে এগিয়ে আসতে থাকে। প্রেস ক্লাবের প্রবেশপথে বিজিবি রাইফেল উঁচিয়ে তেড়ে আসে। ওদিকে পল্টন মোড় থেকে পুলিশের ছত্রছায়ায় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা অবৈধ অস্ত্র নিয়ে আমাদের লক্ষ্য করে ছুটে আসে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমি প্রেস ক্লাবের পূর্ব পাশ দিয়ে রিকশায় চড়ে সচিবালয় মসজিদের সামনে থেকে জিপিএ মোড় হয়ে বায়তুল মোকাররম চলে যাই।

সেখানে তখন ইসলামি আন্দোলনের প্রতিবাদ সমাবেশ পুলিশি বেষ্টনীতে পড়ে গেছে। দ্রুত পল্টন কালভার্ট রোডে চলে যাই। সেখানে অন্যান্য সংগঠনের দায়িত্বশীলদের নেতৃত্বে তুমুল প্রতিরোধ শুরু হয়েছে। আমরা সেগুনবাগিচা হয়ে প্রেস ক্লাবের দিকে যাওয়ার জন্য পল্টন টাওয়ারের সামনে সংগঠিত হয়ে বিজয়নগর পানির ট্যাংকির দিকে এগোতে থাকি। ইতোমধ্যে রক্তপিপাসু পুলিশের বড়োসড়ো একটি দল গুলি ছুড়তে ছুড়তে আমাদের দিকে এগিয়ে আসে। বাধ্য হয়ে আমাদের কালভার্ট রোডের দিকে পিছু হটতে হয়। পুলিশের গুলিতে পল্টন টাওয়ারের সামনে অন্তত তিনজন আন্দোলনকারী শহীদ হন। তাদের মাথার খুলি উড়ে যায়। আমাদের পক্ষে কালভার্ট রোডের আশপাশে টিকে থাকা সম্ভব হয়নি। কালভার্ট রোডের প্রতিরোধে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিনও ছিলেন। অতঃপর পুলিশ এবং সশস্ত্র আওয়ামী সন্ত্রাসীদের চোখ এড়িয়ে নানাপথ ঘুরে রামপুরায় আমার মাদ্রাসায় ফিরে আসি।

জুলাই আন্দোলেনে মাঠে ছিলেন দেশ বরেণ্য মুফাসসিরে কুরআন মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ আইয়ূবী। তার অংশগ্রহণ সম্পর্কে তিনি বলেন, শুরুতে এ আন্দোলন যে দাবিতে গড়ে উঠেছিল, তার সঙ্গে কওমি মাদ্রাসা সংশ্লিষ্টদের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। কারণ, সরকারি চাকরিতে কোটা থাকা না থাকায় কওমি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু যখন জুলাইয়ের মাঝামাঝিতে সরকারি বাহিনী এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আন্দোলনকারীদের নৃশংস কায়দায় হত্যা এবং নারী শিক্ষার্থীদের ওপর নজিরবিহীন সন্ত্রাসী হামলা চালায়, তখন এই আন্দোলন আর শুধু স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইস্যু থাকে না; বরং জাতীয় ইস্যুতে পরিণত হয়। মাদ্রাসা ছাত্ররা স্ব-উদ্যোগে, যে যেভাবে পেরেছে ঢাকাসহ সারা দেশে প্রশাসন ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়। প্রতিবাদ প্রতিরোধে বিভিন্ন সংগঠন এবং সংগঠনের বাইরে থাকা তরুণরা অংশগ্রহণ করে।

অভ্যুত্থানে কওমি অঙ্গনে শহীদদের স্মরণে ও সম্মানে কী পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিন্তু সত্যিকারার্থে বললে এর কোনো রকম মূল্যায়ন কওমি ছাত্র-শিক্ষকরা পেয়েছে বলা যাবে না। বিচ্ছিন্নভাবে কেউ কেউ হয়তো স্বীকৃতি দিচ্ছেন, কিন্তু মূল্যায়ন অথবা নথিভুক্ত করার ব্যাপারে বরাবরের মতো এবারও কওমি সংশ্লিষ্টদের ঐতিহাসিক ভূমিকা এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে। এটা রাষ্ট্রীয়ভাবে যেমন হচ্ছে, বিভিন্ন সংগঠনও পাশ কাটানোর চেষ্টা করছে। দুর্ভাগ্যক্রমে এক্ষেত্রে আমাদের ব্যর্থতাও কম নয়। আমাদের অঙ্গনে সক্রিয় বিভিন্ন সংগঠন, শিক্ষাবোর্ড অথবা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে কার্যকর কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি।

জুলাই আন্দোলেনের পটভূমি তৈরির ক্ষেত্রে যারা ভূমিাকা রেখেছেন তাদের মধ্যে জামালী তালিমুল কুরআন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শাইখ মুহাম্মাদ জামাল উদ্দীন অন্যতম। তিনি আওয়ামী ফ্যাসিবাদীর বিরুদ্ধে মাঠে ময়দানে বক্তৃতা দিয়ে বেড়াতেন। এ প্রসেঙ্গ তিনি বলেন, গত ১৮ বছর প্রতিটি দিনই আমরা সব সময় সোচ্চার ছিলাম। মাঠে ময়দানে যেখানেই ওয়াজে গিয়েছি, স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠে বয়ান রেখেছি। এরপর যখন গত বছরের জুলাই মাসে ছাত্র-জনতা আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসে তখন আমি, আমার মুসল্লিদের নিয়ে রাস্তায় নেমে আসি। আমরা যাত্রাবাড়ী এলাকায় প্রতিরোধ গড়ে তুলি।

যাত্রাবাড়ীর আন্দোলনের অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সক্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও আলেম উলামাদের। ওই সময় যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, গাজীপুর, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদ্রাসাছাত্রদের বড় ভূমিকা ছিল। বিশেষত ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে মাদ্রাসাছাত্রদের প্রতিরোধ আলোচিত ঘটনা ছিল।

মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের অবদান ও স্বীকৃতির বিষয়ে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, আমরা লক্ষ করেছি জুলাই বিপ্লবে আলিয়া ও কওমি নির্বিশেষে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। এ বিপ্লবে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা আহত হয়েছেন, অনেকে প্রাণ দিয়েছেন আগামী দিনেও বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকবে।

শুধু জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নয়, মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে এ দেশের মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের ভূমিকা স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। এ দেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে মাদ্রাসার ছাত্ররা দেশের কৃষক, শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মুক্তির জন্য, জনগণের অধিকারের জন্য পরিশ্রম করেছেন। তারা প্রাণ দিয়েছেন, জেল খেটেছেন, মামলা-হামলার শিকার হয়েছেন। এ দেশকে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকবেন। আমরা আশাহত হব না। আমরা সাহস হারাব না, হীনমন্যতায় ভুগব না। আমরা বাংলাদেশকে একটি আদর্শিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে গড়ে তুলতে চাই। মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা অতীতেও জনগণের পাশে ছিল, আগামীতেও থাকবে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম