Logo
Logo
×

ইসলাম ও জীবন

হজরত মুহাম্মাদ (সা.) ও আহলে বাইতের জীবনী

Icon

ইসলাম ও জীবন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

হজরত মুহাম্মাদ (সা.) ও আহলে বাইতের জীবনী

ছবি: যুগান্তর

মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনে ঘোষণা করেন-‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি জগতসমূহের প্রভু’ আর তাঁর শ্রেষ্ঠতম বন্ধু হজরত রাসূল (সা.) সম্পর্কে বলেন-‘হে রাসূল! আমি আপনাকে জগৎসমূহের রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছি।’ সহজ করে বললে বিষয়টি দাঁড়ায় এরূপ, মহান আল্লাহ্ বলতে চেয়েছেন-যতটুকু রাজত্বের জন্য আমি প্রভু, হে রাসূল! ততটুকু রাজত্বের জন্য আপনি রহমত। সুবহানাল্লাহ্! প্রকৃতপক্ষে, হজরত রাসূল (সা.) সেই পবিত্র সত্তা, যার ওপর আল্লাহ্ নিজে এবং তার ফেরেশতারা দরুদ পাঠ করেন। আল্লাহ্তায়ালা নিজেই পবিত্র কুরআনে তাঁর প্রিয়তম বন্ধু হজরত রাসূল (সা.)-এর স্মরণকে উচ্চ মর্যাদা দিয়েছেন। সুতরাং চির প্রশংসিত এ মহামানবের জীবনের প্রকৃত স্বরূপ কেমন ছিল, তা জানার আগ্রহ চিরকালের। পৃথিবীতে এ মহামানবের জীবনীগ্রন্থ যত বেশি রচিত হয়েছে, এরচেয়ে অধিক জীবনীগ্রন্থ আর কারও রচিত হয়েছে কি না, তা আমাদের জানা নেই।

এরই ধারাবাহিকতায় দি পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ এ. এফ. এম. মঞ্জুর-এ-খোদা সুদীর্ঘ প্রায় ১০ বছরের অক্লান্ত গবেষণার দ্বারা অত্যন্ত সহজ, সাবলীল, সুখপাঠ্য আর হৃদয়নিংড়ানো ভাষায় হজরত মুহাম্মাদ (সা.) ও তার প্রিয় আহলে বাইতের পূর্ণাঙ্গ জীবনী একসঙ্গে উপস্থাপন করে রচনা করেছেন স্মৃতি মোবারক : হজরত মুহাম্মাদ (সা.) ও আহলে বাইতের জীবনী নামক অনবদ্য এক সিরাতগ্রন্থ। 

রাহমাতুল্লিল আলামিন হজরত রাসূল (সা.) যে আল্লাহতায়ালার কত প্রিয়, তিনি যে কত পূতপবিত্র বংশধারায় আবির্ভূত হয়েছেন, তাঁর ৬৩ বছরের হায়াতে জিন্দেগি যে কত মহিমাময় ও মাধুর্যে পরিপূর্ণ, তারই পরিচয় পাওয়া যায় এ অনন্য সিরাতগ্রন্থে। লেখকের বর্ণনার কৌশল, আকর্ষণীয় লেখনী ও ভাষার সৌন্দর্য গ্রন্থটিকে অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী করে তুলেছে। এ যেন পাহাড়ি কোনো ঝিরির স্বচ্ছ পানির স্রোতধারার কলকল শব্দের মতো শ্রুতিমধুর ভাষায় রচিত রাসূলতত্ত্বের অফুরন্ত ভান্ডার।

আলোচ্য গ্রন্থখানি মৌলিকভাবে ৭টি ভাগে বিভক্ত। ১ম ভাগে আরব ইতিহাস, ২য় ভাগে হজরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর সম্মানিত পিতা-মাতা ও পূর্বপুরুষগণের জীবনী, ৩য় ভাগে হজরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর জীবনী, ৪র্থ ভাগে নবিনন্দিনী হজরত ফাতেমা (রা.)-এর জীবনী, ৫ম ভাগে শেরে খোদা হজরত আলী (কা.)-এর জীবনী, ষষ্ঠ ভাগে নবিদৌহিত্র ইমাম হাসান (রা.)-এর জীবনী এবং ৭ম ভাগে ইমাম হোসাইন (রা.)-এর জীবনী ধারাবাহিকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি ভাগেই জটিল ও কঠিন বিষয়গুলো গভীরভাবে গবেষণা করে পবিত্র কুরআন ও হাদিসের অকাট্য দালিলিক প্রমাণসহ ঐতিহাসিক বিশ্লেষণে সমৃদ্ধ করে উপস্থাপন করা হয়েছে। এ গ্রন্থ পাঠ করে পাঠক যেমন জাবালে নূর পর্বতের হেরা গুহার নিভৃত কোণে ইসলামের জন্ম সম্পর্কে জানতে পারবেন, তেমনি কারবালার প্রান্তরে নির্মম এজিদ বাহিনীর আক্রমণে ইমাম হোসাইন (রা.)-এর শাহাদতবরণের করুণ ঘটনার আদ্যোপান্ত সম্পর্কেও অবগত হবেন। গ্রন্থখানি পাঠ করে রাসুলপ্রেমিকদের হৃদয় শীতল হবে, অনুসন্ধিৎসু মন পথের দিশা পাবে, কৌতূহলী মন আল্লাহর রাসূল (সা.), আহলে বাইত এবং ইসলামের মৌলিক বিষয় সম্পর্কে বহু অজানা প্রশ্নের উত্তর লাভ করবে। 

হজরত রাসূল (সা.) ও তাঁর আহলে বাইতের অনেক দুর্লভ স্মৃতি আজও সৌদি আরব, ইরাক, ইরান, তুরস্ক এবং পাকিস্তানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। তাদের পবিত্র ব্যবহার্য জিনিস, স্মৃতিবিজড়িত স্থান, স্থাপনা ও রওজা মোবারকের ছবিসহ সর্বমোট ৫৬১টি দুর্লভ ছবি এবং ১৯টি ঐতিহাসিক মানচিত্র প্রাসঙ্গিক ঘটনাবলির পাশাপাশি এ গ্রন্থে উপস্থাপন করা হয়েছে। এক কথায় বলতে গেলে গ্রন্থটির পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে এসব পবিত্র স্মৃতি। যার ফলে জীবন্ত হয়ে ধরা দিয়েছে প্রতিটি ঘটনা, প্রতিটি অধ্যায়।

একই গ্রন্থে এত বিপুল স্মৃতির ছবিসহ হজরত মুহাম্মাদ (সা.) ও আহলে বাইতের জীবনীগ্রন্থ সমগ্র বিশ্বে এটিই প্রথম। এ যেন মহাসাগর সেচে নিয়ে আসা হয়েছে মহামূল্যবান হীরা-মনি-মুক্তা। ইতিহাসের প্রামাণ্য তথ্যনির্ভর প্রাঞ্জল বর্ণনার পাশাপাশি এ দুর্লভ স্মৃতিগুলোর ছবির সমাহার আপনাকে নিয়ে যাবে হজরত মুহাম্মাদ (সা.) ও তাঁর আহলে বাইতের জীবনের একদম কাছাকাছি, যা আপনার অন্তরকে স্পর্শ করবে, নিজের অজান্তেই হজরত রাসূল (সা.) ও তাঁর প্রিয় আহলে বাইতের ভালোবাসায় চোখের কোণ ভরে উঠবে কান্নার নোনা জলে। ৯৯৪ পৃষ্ঠার বিরাট এ গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে দেওয়ানবাগ শরীফ পাবলিকেশন।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম