বিলুপ্ত হচ্ছে এনটিএমসি নতুন নাম সিএলআইসিপি
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ফোনে আড়ি পাতা এবং ডেটা পর্যবেক্ষণ সংস্থা বহুল আলোচিত ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) বিলুপ্ত করে সিএলআইসিপি বা সেন্ট্রাল লফুল ইন্টারসেপশন প্ল্যাটফর্ম নামকরণের প্রস্তাব করা হয়েছে প্রস্তাবিত টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশ-২০২৫ এ। এটিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দাবির মুখে আইনগত আড়ি পাতার ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তনও আনা হয়েছে। টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশ ২০২৫ ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এটি আজকের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদনের জন্য উঠতে পারে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানিয়েছে। এটি অনুমোদন হলে এনটিএমসির নাম পরিবর্তন করা হবে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে এনটিএমসিকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক এবং সামাজিকভাবে অনেককে হয়রানি করা হয়েছে। বিশেষ করে গ্রেফতার হওয়া মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানের সময়ে এনটিএমসিকে যথেচ্ছ ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ আছে। সেই এনটিএমসি এখন সিএলআইএসপি নামে হতে পারে। প্রস্তাবিত টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশের ৯৭ (গ) ধারায় বলা হয়েছে, আগের যে কোনো আড়ি পাতা সংস্থা বা প্ল্যাটফর্ম বিলুপ্ত বলে গণ্য হবে। এর সব যন্ত্রপাতি, প্রযুক্তি সিএলআইএসপিতে স্থানান্তর হবে। এর বাইরে কেউ আড়ি পাতার চেষ্টা করলে তা হবে বেআইনি। ৯৭ (ক) ধারায় বলা হয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে আড়ি পাতার সংস্থা থাকবে এবং তারা এটি পরিচালনার জন্য একটি বিধি জারি করবে।
প্রস্তাবিত টেলিযোগাযোগের ৯৭ (ক) ধারায় বলা হয়েছে, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর জন্য আড়ি পাতার সুযোগ থাকবে দেশের স্বার্থে। এজন্য মন্ত্রিপরিষদ, স্বরাষ্ট্র, বিচার এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়সহ ৫-৬টি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিকে নিয়ে একটি কাউন্সিল গঠন করা যেতে পারে। আড়ি পাতার বিষয়ে তারা চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে। এটি ঠিক করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এ অধ্যাদেশে আরও বলা হয়েছে, অনুমোদিত ব্যক্তি ছাড়া আর কেউ সিএলআইএসপিতে প্রবেশ করতে পারবে না। এ সংক্রান্ত কাউন্সিলের বাইরে কেউ আড়ি পাতলে তাকে ৫ বছরের কারাদণ্ড এবং এক কোটি টাকা জরিমানা করা যাবে।
বর্তমানে দেশের ১৮টি সংস্থা এনটিএমসিতে সুবিধা ব্যবহার করে ফোনে আড়ি পাতছে। এর মধ্যে পুলিশের সাতটি সংস্থা আছে।
এর আগে গত মাসে এটি উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উত্থাপন করা হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন পক্ষের আপত্তির কারণে সেটি ফিরিয়ে দেওয়া হয় টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে।
আগের অধ্যাদেশের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছিল, আইনগতভাবে আড়ি পাতার জন্য (লফুল ইন্টারসেপশন) সংশ্লিষ্টদের আধা বিচারিক আদালতের অনুমোদন নিতে হবে।
বিটিআরসির ক্ষমতার ব্যাপারে ৩৭ (ক) ধারায় বলা হয়েছে, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ লাইসেন্স বিটিআরসি এখন থেকে সরকারের কাছে উত্থাপন করবে।
জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ লাইসেন্স কতসংখ্যক হবে তা বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে বিটিআরসি সরকারকে সুপারিশ করবে। আর এ ধরনের লাইসেন্সের আবেদন নিষ্পত্তি করতে হবে ছয় মাসে।
এছাড়া টেলিকম খাতের শেয়ার বিক্রি, মালিকানা পরিবর্তন এবং একীভূতের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগবে।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদুল বারী যুগান্তরকে এ ধরনের উদ্যোগ কমিশনের স্বাধীনতাকে খর্ব বলে উল্লেখ করেছেন। বলেন, এটি টেলিকম খাতকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
