টেলিকম লাইসেন্সিং নীতিমালার গেজেট জারি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:১৬ এএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
টেলিকম খাতে নতুন কাঠামো আনতে ‘টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক অ্যান্ড লাইসেন্সিং পলিসি’র গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এ গেজেট জারি করে।
এর আগে গত ৪ সেপ্টেম্বর উপদেষ্টা পরিষদ নীতিমালাটির অনুমোদন দেয়। সেদিন সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি) ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, নতুন নীতিমালা একক নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করে মধ্যসত্ত্বভোগীদের দৌরাত্ম কমাতে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, ‘এই নীতিমালার মাধ্যমে লাইসেন্সিংয়ের ক্ষেত্রে স্তরায়ন কমিয়ে আমরা মধ্যস্বত্ত্বভোগী কমিয়ে দেব এবং প্রতিযোগিতামূলক সেবা নিশ্চিত করব। এতে সরকারের রাজস্ব না কমিয়েও গ্রাহকদেরকে সুলভ মূল্যে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।’
লাইসেন্স কমানোর ব্যাখ্যায় তিনি বলেছিলেন, ‘বিটিআরসি ২৬ ধরনের লাইসেন্স দিয়ে থাকে। ২৯৯৯টি প্রতিষ্ঠান এসব লাইসেন্স সংগ্রহ করে বিভিন্ন ধরনের সেবা দিয়ে থাকে। অর্থাৎ, এর মাধ্যমে সেবা জনগণের কাছে পৌঁছাতে অতিমাত্রায় স্তরায়ন (মধ্যসত্ত্ব) সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে এই খাতে অতিমাত্রায় বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে।এই ক্ষেত্রে লাইসেন্সিং পদ্ধতির স্তরায়ন বা মধ্যসত্ত্বভোগীদের স্তরগুলো বাদ দিয়ে মাত্র তিনটি স্তরে নিয়ে আসা হয়েছে। এর পাশাপাশি স্যাটেলাইট নির্ভর টেলিযোগাযোগ সেবার জন্য আরেকটি লাইসেন্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফলে তিন যোগ এক- চারটি লাইসেন্সের মাধ্যমে দেওয়া যাবে এই খাতের সেবা।’
নতুন নীতিমালা প্রসঙ্গে বিশেষ সহাকারী বলেন, ‘বর্তমান লাইসেন্সিং পদ্ধতিতে মধ্যসত্ত্বভোগী ব্যবস্থা রহিত করে আধুনিক ও যুগোপযোগী করা হয়েছে। এই নীতিমালার মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ খাতে যারা ব্যবসা করেন তাদেরকে সেবার মানের নিশ্চিয়তা দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। তৃতীয়ত এর মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসা সম্প্রসারণ করে ভয়েস কল ও ডেটা সার্ভিসের মূল্যকে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করা হয়েছে।’
তবে এই নতুন নীতিমালা নিয়ে নিজেদের উদ্বেগ প্রকাশ করে মোবাইল অপারেটর রবি ও বাংলালিংক।
এক বিবৃতিতে রবি বলেছে, ‘টেলিকম নেটওয়ার্ক এবং লাইসেন্সিং নীতি আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে, কারণ (সরকারের সঙ্গে) আলোচনার সময় দেওয়া কোনো প্রস্তাবকেই প্রতিফলিত করে না। এই ত্রুটি গভীর হতাশাজনক, বিশেষ করে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য যাদের এই বাজারে দীর্ঘমেয়াদে থাকার প্রতিশ্রুতি রয়েছে।’
পৃথক বিবৃতিতে বাংলালিংক সরকারের এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেও তারাও বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে উদ্বেগের কথা তুলে ধরে।
অপারেটরটি বলেছে, ‘আমরা সংশোধিত টেলিকম নীতিতে প্রতিফলিত ইতিবাচক পদক্ষেপগুলিকে স্বীকৃতি দিই, যেমন- সক্রিয় নেটওয়ার্ক এবং স্পেকট্রাম ভাগাভাগির বিধানটি।’
বাংলালিংকের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘বাধ্যতামূলক মালিকানার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কিত আমাদের কিছু উদ্বেগ রয়েছে যা বিদেশি বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করে। তবুও আমরা ডিজিটাল বিভাজন দূর করতে কর্তৃপক্ষের সাথে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
শুরু থেকেই নীতিমালার বিরোধিতা করে আসছে এ খাতের মধ্যস্তরে থাকা আইআইজি, আইজিডব্লিউ, আইসিএক্সের মতো দেশীয় ব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠানগুলো। তারা এ নীতিমালা নিয়ে আদালতে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে।
