নাগরিক সংলাপে বক্তারা
‘বিআরটিএর কাজ বেসরকারি খাতে দেওয়ার চিন্তাভাবনা বাদ দিতে হবে’
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:৪১ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সড়ক পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) জনবল সংকট নিরসন করে এর সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে। বিদ্যমান কাঠামো সংস্কার ও অগ্রাধিকার কর্মসূচি নির্ধারণ করে বিআরটিএর গ্রাহকসেবা আরও সন্তোষজনক করা সম্ভব। কিন্তু সংস্থাটির কিছু কাজ বেসরকারি খাতে দেওয়ার চিন্তাভাবনা থেকে নীতিনির্ধারকদের সরে আসা উচিত।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে একক মানবিক উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘বিআরটিএর গ্রাহকসেবা বিষয়ক নাগরিক সংলাপে’ বক্তারা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে মূখ্য আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব মো. সাইফুল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান, রোড সেফটি নেটওয়ার্কের সমন্বয়ক পাহাড়ী ভট্টাচার্য, সেবক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি খান মো. বাবুল। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠন ‘একক’ এর নির্বাহী পরিচালক মো. আবদুল ওয়াহেদ।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব মো. সাইফুল আলম বলেন, বিআরটিএর মাধ্যমে সরকার যে পরিমাণ রাজস্ব পায় তার কতটুকু সড়কখাতে জনস্বার্থে ব্যবহার হচ্ছে তা খতিয়ে দেখা উচিত। কিছুদিন আগে বলা হয়েছিল, সেবা না বাড়লে সংস্থাটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। কিন্তু আমরা বলেছি, সংস্থার দোষ কি? মাথা ব্যাথা হলে মাথা কেটে ফেলে দেওয়া সঠিক সিদ্ধান্ত হতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, বিআরটিএর সেবার ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে, তদারকি বাড়াতে হবে ও ব্যবস্থাপনা ঠিক করতে হবে। এই সংস্থার আগ্রাধিকার কর্মসূচি ঠিক করা উচিত। একেক সময় একেক সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এটির লক্ষ্য অর্জন হচ্ছে না। বিআরটিএর জনবল শতভাগ সক্রিয় করার ব্যবস্থা নিতে হবে। যানজট, চাঁদাবাজি, সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে এই সংস্থার কর্মপরিধি আরও উপযোগী করতে হবে। গ্রাহক টাকা দিয়ে সেবা পেতে চায়। হয়রানি দূর করতে সেবায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে উদ্ধুদ্ধকরণ কর্মসূচিও বাড়াতে হবে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, বিআরটিএর চেয়ারম্যান বারবার পরিবর্তন করা হয়। দায়িত্ব ঠিকমতো বুঝে নেওয়ার আগে বা দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করা অবস্থায় চেয়ারম্যান পরিবর্তন হওয়ায় সংস্থার ধারাবাহিক কাজ ব্যাহত হয়েছে। মেয়াদোত্তীর্ণ বাস ও ট্রাক সড়ক থেকে সরানোর জন্য সংস্থাটি বারবার উদ্যোগ নিলেও কাজ হয়নি। কারন স্ক্র্যাপ নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়নি। এভাবে নানা ফাঁক থাকায় উদ্যোগ নিয়েও সংস্থা সফল হয়নি। এই সংস্থাকে এখনই ঢেলে সাজাতে হবে। গাড়ি চালকদের প্রশিক্ষন যেমন বাড়াতে হবে তেমনি তাদের সব দাবি ধীরে ধীরে পূরণ করতে হবে।
রোড সেফটি নেটওয়ার্কের সমন্বয়ক পাহাড়ী ভট্টাচার্য বলেন, সড়কে দুর্ঘটনা বেড়েছে। সড়ক নিরাপদ করতে হলে আন্ত:মন্ত্রনালয় ও আন্তঃবিভাগীয় সমন্বয় বাড়াতে হবে। এই খাতে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সদিচ্ছাও জরুরি।
সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক, সাংবাদিক নিখিল ভদ্র বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে সংস্কার শব্দটি বার বার উচ্চারিত হচ্ছে। বিআরটিএর সেবা বাড়াতে এখানেও সংস্কার শুরু করা দরকার। মাঠ পর্যায়ের সেবাগ্রহীতারা জনবল সংকটসহ বিভিন্ন কারণে কাঙ্ক্ষিত সেবা দ্রুততম সময়ে পাচ্ছেন না। তাই এখানে সংস্কার দরকার। বিশেষ করে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই জনবল সংকটে ধুঁকছে সংস্থাটি। এ সমস্যাও দূর করতে হবে।
অনুষ্ঠানে সড়কখাতে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি ও বিভিন্ন পর্যায়ের সেবাগ্রহীতারা উপস্থিত ছিলেন।

