Logo
Logo
×

জাতীয়

অফিস ঘুরে দেখলেন সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা

জাতি গঠনে যুগান্তর ও যমুনা টিভির ভূমিকার প্রশংসা

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১২:২০ এএম

জাতি গঠনে যুগান্তর ও যমুনা টিভির ভূমিকার প্রশংসা

ছবি: যুগান্তর

বেসরকারি গণমাধ্যম দৈনিক যুগান্তরের প্রকাশনা ও যমুনা টেলিভিশনের সম্প্রচার কার্যক্রম ঘুরে দেখলেন ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্সে (এনডিসি) অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তারা। ডিফেন্স কলেজের ২০২৫ সালের এনডিসি কোর্সের অংশ হিসাবে বুধবার দেশি-বিদেশি সামরিক ও বেসামরিক ১৪০ জন কর্মকর্তা যমুনা টিভি প্রাঙ্গণে আসেন। তারা জাতি গঠনে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সমুন্নত রেখে বস্তুনিষ্ঠ ও সাহসী সংবাদ প্রকাশ করায় দুই গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানান। আগামী দিনে এই ধারা অব্যাহত রাখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি গণমাধ্যম দুটির পক্ষ থেকে দর্শক ও পাঠকের কাছে দায়বদ্ধতা নিয়ে কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে

এদিকে কোর্সে অংশগ্রহণকারীদের আগমন উপলক্ষ্যে বুধবার যমুনা টিভি প্রাঙ্গণে যৌথভাবে অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের আয়োজন করে যুগান্তর ও যমুনা টিভি। এতে এনডিসি ফ্যাকাল্টি রিয়ার অ্যাডমিরাল গোলাম সাদেক, এয়ার ভাইস মার্শাল এম মোস্তাফিজুর রহমান, মেজর জেনারেল এএসএম বাহাউদ্দিন ও মো. মুশফিকুর রহমানকে পৃথক সম্মাননা স্মারক তুলে দেন যুগান্তর সম্পাদক আবদুল হাই শিকদার এবং যমুনা টিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফাহিম আহমেদ। অন্যদিকে ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের পক্ষ থেকেও যুগান্তর ও যমুনা টিভির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের স্মারক উপহার দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে গণমাধ্যম দুটির কার্যক্রমের ওপর পৃথক ডকুমেন্টারি উপস্থাপন করা হয়। অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তারা সম্প্রচারের বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চেয়ে প্রশ্ন করেন। তারা বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক চাপ সামাল দিয়ে সঠিক সংবাদ উপস্থাপন, গুজব ও অপপ্রচার কীভাবে যাচাই করা হয়, সেই বিষয়ে প্রশ্ন করেন। প্রশ্নের জবাব দেন দুই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে যুগান্তর সম্পাদক আবদুল হাই শিকদার বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে জসীমউদ্দীনের কবিতার দুটি লাইন মনে পড়ল, ‘ঘুম হতে আজ জেগেই দেখি শিশির-ভেজা ঘাসে, সারা রাতের স্বপন আমার মিঠেল রোদে হাসে।’ সেই প্রফুল্লতা নিয়েই এখানে এলাম। এসে হৃদয় আলোড়িত হয়েছে। বিশেষ করে এনডিসির এত উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তার উপস্থিতি দেখে। যুগান্তর সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতি আমার গভীর কৃতজ্ঞতা আছে। বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এসেছিলেন সেনাবাহিনী থেকে। ১৯৭১ সালে সেনাবাহিনীর ভেতর থেকে একজন মেজর বেরিয়ে এসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। 

তিনি জানান, মুক্তিযুদ্ধে আমাকে যিনি রিক্রুট করেছিলেন, তিনি ছিলেন সেনাবাহিনীর একজন তরুণ ক্যাপ্টেন। নাম ছিল ক্যাপ্টেন নওয়াজিশ। আজ তাকে শ্রদ্ধা জানাই যে তিনিও সেনাবাহিনী থেকে এসেছিলেন। আমাদের সেক্টর কমান্ডাররাও ছিলেন সেনাবাহিনীর সদস্য। মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর, ৯০-এর গণ-অভ্যুত্থান, এমনকি সাম্প্রতিক পরিবর্তনেও সেনাবাহিনীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চাই, বাংলাদেশের যাত্রা হোক কল্যাণ ও মঙ্গলের দিকে। আধুনিকতা মানে অতীতের অভিজ্ঞতার আলোকে বর্তমানকে যাচাই-বাছাই করে বিজ্ঞান ও জ্ঞানের সাহায্যে কল্যাণের জন্য সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। সেই আধুনিকতার পথেই আপনাদের যাত্রা শুরু হোক। আপনারা শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বের মানুষের কল্যাণে অবদান রাখুন, এই প্রত্যাশা করছি। যুগান্তর ও যমুনা টিভি সেই কল্যাণযাত্রার বিশ্বস্ত কণ্ঠস্বর।

যমুনা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফাহিম আহমেদ বলেন, যমুনা টেলিভিশন ও যুগান্তরের পক্ষ থেকে আমরা গত বছরও এমন একটি আয়োজনে অংশ নিয়েছিলাম। আজ আবারও আপনাদের স্বাগত জানানোর সুযোগ পেয়ে আনন্দিত। আমরা বিশ্বাস করি, এনডিসির কোর্সে অংশগ্রহণকারীরা ইতোমধ্যে অনেক কিছু অর্জন করেছেন, শিখেছেন। যমুনা টেলিভিশন ও যুগান্তর এই যাত্রার অংশ হতে পেরে গর্বিত ও কৃতজ্ঞ। প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি বলেন, যমুনা গ্রুপের দুটি গণমাধ্যম রয়েছে এবং মালিকপক্ষ আমাদের কাজে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়। জুলাই আন্দোলনের সময় সরকারের পক্ষ থেকে চাপ এলেও মালিকপক্ষ সেই চাপ আমাদের ওপর চাপায়নি। বরং নিজেরা সইয়ে নিয়েছেন। আমরাও সাংবাদিক হিসাবে সত্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি, সেটাই আমাদের নীতি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বাস্তবতায় রাজনীতি সবার জীবনের অংশ। তবে আমরা চেষ্টা করেছি যমুনা টেলিভিশনকে রাজনৈতিক প্রভাবের বাইরে রাখতে। ভবিষ্যতেও যেন সেই কাজ করতে পারি। আপনাদের দোয়া চাই।

এদিকে এ ধরনের আয়োজন করায় এনডিসির পক্ষে ধন্যবাদ জানান এনডিসি কোর্সে পাকিস্তান থেকে অংশ নেওয়া কমোডর ইমতিয়াজ আহমেদ। তিনি বলেন, গণতন্ত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। যুগান্তর ও যমুনা টিভি জাতি গঠনে ভ‚মিকা রাখছে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখার মাধ্যমে জাতির ঐক্য গড়ে তুলতে সহায়তা করছে। পাশাপাশি এ দুটি গণমাধ্যম জাতির স্বার্থকে সামনে রেখে সংবাদ প্রকাশ ও প্রচার করছে। তারা জাতির ঐক্য সুসংহত করছে। যুগান্তর বিস্তারিত প্রতিবেদন এবং বিশ্লেষণ দিয়ে প্রতিবেদন করায় বিভিন্ন দলনের পাঠক আকৃষ্ঠ করতে পেরেছে। দুটি প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখার সুযোগ করে দেওয়ায় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান তিনি। 

যুগান্তরের প্রধান প্রতিবেদক মাসুদ করিম বলেন, যুগান্তর ‘সত্যের সন্ধানে নির্ভীক’ স্লোগান নিয়ে ২০০০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরু করে। যুগান্তর নির্ভরযোগ্য সংবাদ, উদ্ভাবনী উপস্থাপনা ও প্রযুক্তিনির্ভর সাংবাদিকতার মাধ্যমে দেশে-বিদেশে একটি বিশেষ অবস্থান অর্জন করেছে। সত্য বলেছি, বস্তুনিষ্ঠ থেকেছি। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন যমুনা টিভির প্রধান বার্তা-সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম ও প্ল্যানিং এডিটর রোকসানা আনজুমান নিকোল প্রমুখ। যমুনা টিভির পক্ষ থেকে ডকুমেন্টারি ও প্রেজেন্টশন উপস্থাপন করেন সিনিয়র রিপোর্টার আহমেদ রেজা এবং অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন জুলহাস জুবায়ের।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম