Logo
Logo
×

জাতীয়

ব্যবসায়ীদের আপত্তিতে বেনাপোলে আগের নিয়মে আমদানি-রপ্তানি শুরু

Icon

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৪৮ এএম

ব্যবসায়ীদের আপত্তিতে বেনাপোলে আগের নিয়মে আমদানি-রপ্তানি শুরু

বেনাপোল স্থলবন্দর/ফাইল ছবি

ব্যবসায়ীদের আপত্তি ও সীমান্তে বাণিজ্যিক অচলাবস্থা সৃষ্টি হওয়ায় এবং গণমাধ্যমে আলোচনার পর বেনাপোল কাস্টমসের সাময়িক সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফলে দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোলে আবারও আগের নিয়ম অনুযায়ী সন্ধ্যা ছয়টার পরও আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলবে।

গত সপ্তাহে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই কাস্টমস কমিশনারের নির্দেশে সন্ধ্যা ছয়টার পর বাণিজ্য কার্যক্রম সীমিত করা হলে সীমান্তে যানজট তৈরি হয় এবং দুই দেশের ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েন। এতে বাণিজ্য ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব আয় উভয়ই ব্যাহত হয়।

বেনাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, সিদ্ধান্তের পর প্রতিদিন ট্রাক প্রবেশ কমে দাঁড়ায় ১৬০-১৮০টিতে, যেখানে স্বাভাবিক দিনে তা হয় ৪০০-৪৫০। ফল, সবজি, মাছ, ওষুধ ও শিল্পকারখানার কাঁচামালসহ দ্রুত পচনশীল পণ্য পরিবহনে বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি হয়।

বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি কারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিযাউর রহমান জিয়া বলেন, ‘বাণিজ্য পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত পক্ষগুলোকে না জানিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ব্যবসায়ীরা অনভিপ্রেত পরিস্থিতির মুখে পড়েন। সংশ্লিষ্ট মহলের গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার হওয়ায় বাণিজ্য স্বাভাবিক হচ্ছে।’

ভারতের পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘সিদ্ধান্তের প্রভাবে দুই দেশের বাণিজ্যই ধীরগতিতে চলছিল। এখন আগের নিয়মে কার্যক্রম শুরু হওয়ায় সীমান্ত বাণিজ্যে গতি ফিরবে।’

বেনাপোলের আমদানিকারক মিজানুর রহমান মত প্রকাশ করে বলেন, ‘সিদ্ধান্তটি ব্যবসায়ীদের জন্য আর্থিক চাপ তৈরি করেছিল। আগের নিয়মে কার্যক্রম ফিরে আসায় বাণিজ্যের ব্যয় ও সময় দুটোই নিয়ন্ত্রণে থাকবে। রপ্তানিকারক সমীর কান্তি দে বলেন, রপ্তানি কার্যক্রম থমকে গেলে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের মতামত বিবেচনায় রাখা হবে।’

বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাবিবুর রহমান হবি বলেন, ‘বেনাপোল দেশের প্রধান স্থলবন্দর হওয়ায় এখানে নেওয়া যেকোনো সিদ্ধান্ত বাণিজ্য, শিল্প এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় বড় প্রভাব ফেলে। স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিলে পরিস্থিতি আরও সুন্দরভাবে সামাল দেওয়া যায়।’

বেনাপোল স্থলবন্দর পরিচালক শামিম হোসেন বলেন, ‘সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের পর বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। আমরা কাস্টমসসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে বাণিজ্য নির্বিঘ্ন রাখতে কাজ করছি।’

এ বিষয়ে কাস্টমস কমিশনার খালিদ মো. আবু হোসেন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে কাস্টমসের এক সিনিয়র কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক কারণ বিবেচনায় সাময়িকভাবে কার্যক্রম সীমিত করা হয়েছিল। বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আগের নিয়মে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাণিজ্য যেন ব্যাহত না হয়, ভবিষ্যতে সে বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।’

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম