পাচার হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধারে দেশে-বিদেশে ৬৬,১৪৬ কোটি টাকার সম্পদ অবরুদ্ধ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:১২ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
পাচার হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধারের অংশ হিসেবে দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন শিল্পগোষ্ঠীর মোট ৬৬ হাজার ১৪৬ কোটি টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ‘সংযুক্ত বা অবরুদ্ধ’ করার তথ্য জানিয়েছে সরকার।
বুধবার (১ ডিসেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এর মধ্যে দেশে রয়েছে ৫৫ হাজার ৬৩৮ কোটি টাকার এবং বিদেশে রয়েছে ১০ হাজার ৫০৮ কোটি টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ। তবে কোন দেশে কার কত সম্পদ অবরুদ্ধ করা হয়েছে— সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়নি।
এদিন মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জাতীয় সমন্বয় কমিটির ৩০তম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
সভায় বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ও সম্পদ উদ্ধার কার্যক্রমকে ‘অধিকতর দক্ষ ও কার্যকর’ করতে বিদ্যমান মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের কয়েকটি ধারা যুগোপযোগী করে সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ও সম্পদ উদ্ধারের জন্য অগ্রাধিকার হিসেবে চিহ্নিত ১১টি ‘কেইস’-এর আওতায় গঠিত যৌথ অনুসন্ধান ও তদন্ত দলের কার্যক্রমের অগ্রগতি সভায় বিস্তারিতভাবে পর্যালোচনা করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘উল্লিখিত অগ্রাধিকার কেইসের ক্ষেত্রে ইতোমধ্যে ১০৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে, ১৪টি মামলায় চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে এবং আদালত চারটি মামলায় রায় প্রদান করা হয়েছে।’
এ ছাড়া অগ্রাধিকারের ১১টি ‘কেইস’-এর জন্য মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় ২১টি দেশে নথি পাঠানো হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। এসব মামলায় যত দ্রুত সম্ভব অভিযোগপত্র দাখিল, সংশ্লিষ্ট দেশে প্রয়োজনীয় নথি পাঠানো এবং মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে সভা থেকে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সভা শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর সাংবাদিকদের বলেন, ‘একটা কথা বলি, বিদেশ থেকে অর্থ আনতে মিনিমাম চার থেকে পাঁচ বছর লাগে। এটা এমনি হয় না। এটা একটা ফ্যাক্ট।
‘তবে উই মে বি লাকি, লন্ডন থেকে যদি মামলা, সাইফুজ্জামানের (সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ) মামলাটা যদি রিজলভ হয়ে যায়, ওটা তো তারা কন্টেস্ট করে নাই। প্রথম মামলায় তো তারা হেরেই গেছে। সেখানে আমাদেরতো ইসলামী ব্যাংক এবং ইউসিবিএল ক্লেইম বসিয়েছে। ওই ক্লেইমের হয়ত কিছু টাকা আসতেও পারে।’
তবে অর্থ কবে আসবে, তা অনিশ্চিত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাট সেটা কবে আসবে, ফেব্রুয়ারির আগে আসবে বা এপ্রিল, জুন, জুলাই, অগাস্টে আসবে আমরা তো সেটা জানি না।’
এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে লন্ডনে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের সম্পদ জব্দের কথা জানিয়েছিল যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ)।
বুধবারের এই সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, অর্থ সচিব, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (দ্বিপাক্ষিক), অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এবং সিআইডি প্রধান।

