স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে লুৎফুজ্জামান বাবরের বৈঠক
তারেক রহমানের সার্বিক-সর্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:১৩ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবার বলেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শিগগির দেশে ফিরবেন।
রোববার সন্ধায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের করিডোরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে বিকাল চারটা ২২ মিনিট থেকে ৬ টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা (অব) লে.জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে প্রায় ২ ঘন্টা বৈঠক করেন। বৈঠকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সার্বিক ও সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে স্থান পেয়েছে বলে সাবেক প্রতিমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছে।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষে বিশেষ সহকারী খোদাবক্স চৌধুরী, সরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গণি ও পুলিশের আইজি বাহরুল আলম উপস্থিত ছিলেন। অপরদিকে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাবেক সিনিয়র সচিব কামরুজ্জাম, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক মাহবুবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, সর্বপ্রথম মহান আল্লাহর শোকরিয়া জ্ঞাপন করছি। সাড়ে সতের বছর পর মহান আল্লাহ আমাকে নির্দোষ হিসাবে জেলখানা থেকে বের হওয়ার তওফিক দিয়েছেন। সম্প্রতি বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল(বিএনপি) থেকে একটি টিম করা হয়েছে, সেই টিমে সাবেক সিনিয়র সচিব কামরুজ্জামান, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মাহববুর রহমান এবং আমি আছি। আরও একজন আছেন তিনি আজ এই বৈঠকে আসতে পারেননি।
বাবার বলেন, কিছু কিছু বিষয়ে উদ্বিঘ্ন হওয়ার প্রেক্ষিতে আজ আমরা এখানে এসছি। আন্তরিক ও সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে আমরা আমাদের উদ্বেগের বিষয়গুলো স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং তার মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেছি। দেশে বর্তমান অন্তর্বতী সরকার এই সরকারকে সাহায্যের জন্য আমরা এখানে এসেছি। উদ্বেগের জায়গুলো আমরা তাদের কাছে বলেছি। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাও আমাদের উদ্বেগের বিষয়ের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন।
কী কী বিষয়ে আপনারা উদ্বিঘ্ন এমন প্রশ্নে বাবর বলেন, পতিত সরকারের প্রধান শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। তিনি দেশের একটি শিল্পগোষ্ঠি এস আলম গ্রুপের সঙ্গে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের বৈঠক করেছেন। তিনি গভীর ষড়যন্ত্র করছেন। ভারতে বসে তারা যে ষড়যন্ত্রমূলক মিটিং করেছে সে বিষয়ে ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। ওই মিটিংয়ের উদ্দেশ্য ছিলো বাংলাদেশের দেশের নির্বাচন বানচাল করা। নির্বাচনে বিভিন্ন সংঘাত সহিংসতা ঘটানো, এটি উদ্বিঘ্ন হওয়ার একটি কারন। এ বিষয়টি সরকারকে অবহিত করেছি। আরও অনেক কিছু আলোচনা করেছি যেমন, বিভিন্ন ধরণের অবৈধ অস্ত্র এবং পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্রের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যেহেতু অবৈধ ও লুট হওয়া সম্পূর্ণ উদ্ধার হয়নি সুতরাং এটা আমাদের আরেকটি উদ্বেগের জায়গা। সে বিষয়ে কথা হয়েছে। আলোচনা ফলপ্রসু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আরেকটি বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছি সেটা হলো-সরাসরি এএসআই নিয়োগের বিষয়ে। কারণ কনস্টেবল থেকে পদোন্নাতি পেয়ে এএসআই, এসআই এবং পরিদর্শক পর্যন্ত হতে পারে। এসআই থেকে সর্বোচ্চ ডিআইজি পর্যন্ত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। এসপি থেকে আইজি হওয়ার সুযোগ রয়েছে। সরাসরি এএসআই নিয়োগের উদ্যোগে কনস্টেবলরা উদ্বিঘ্ন। তাদের পদোন্নতি কিভাবে হবে সে বিষয়ে তারা চিন্তিত। সে বিষয়টিও সরকারকে অবহিত করেছি।
সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসাবে আপনি কি মনে করছেন দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাল এমন প্রশ্নে বাবর বলেন, সরকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাল করার জন্য আন্তরিকভাবে যথেষ্ট চেষ্টা করছেন।
তারেক রহমানের দেশের ফেরা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর বলেন, তিনি শিগগিরই ফিরবেন, দ্রুত ফিরবেন-ইনশাআল্লাহ। দোয়া করেন।
বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্ট (অব) লে. জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, আমি স্যারের(লুৎফুজ্জামান বাবর) সঙ্গে তিন বছর চাকরি করেছি। আমি স্যারের অধীনে চাকরি করেছে। তার সঙ্গে আমার অনেক আগ থেকেই পরিচায়। আজ এখানে একটি সৌজন্য সাক্ষাতে এসেছেন। সৌজন্য সাক্ষাতে পারিবারিকস বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। আলোচনার মধ্যে রাষ্ট্রীয় দু’একটা বিষয় চলে এসেছে তবে সেগুলো তেমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় না।
এর আগে বিকেল ৪ টা ২২ মিনিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর।
