প্রাইভেট কার চালকদের শ্রমের স্বীকৃতি ও ইউনিয়নের অধিকার দিতে হবে: সাকি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৫১ এএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
প্রাইভেট কার চালকদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানিয়ে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, তাদের কাজের জন্য সুষ্পষ্ট নীতিমালা থাকতে হবে। ইউনিয়ন করার অধিকার দিতে হবে।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকা প্রাইভেট কার চালক ইউনিয়নের এক বছর পূর্তিতে আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
সাকি বলেন, প্রাইভেট কার চালানো একটা সুনির্দিষ্ট পেশা। প্রাইভেট কার চালকরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ডিউটি করেন, শ্রম দেন। কিন্তু এ পেশা এবং শ্রমের কোনো সরকারি বা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নেই।
মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে লাখ মানুষের প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে উল্লেখ করে সাকি বলেন, এই বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি ছিল নাগরিকের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা। গত ৫৪ বছরে এই মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ফ্যাসিস্ট শিরোমণি শেখ হাসিনাকে আমাদের দেশের ছাত্র-শ্রমিক-জনতা অভ্যুত্থান করে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে। ১৯৭১ সালে আমাদের যে আকাঙ্ক্ষা ছিল, নাগরিকের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা হবে, সেটা আজকে এই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আবার নতুন করে আমরা দেখেছি।
জোনায়েদ সাকি বলেন, দেশের পঁচানব্বই ভাগ মানুষ খেটে খাওয়া মানুষ। কৃষক, শ্রমিক, খেতমজুর, দিনমজুর, শ্রমজীবী, শহরে-গ্রামে প্রতিদিন শ্রম দেন, সম্পদ তৈরি করেন। আমাদের দেশের এই খেটে খাওয়া মানুষরা বিদেশে গিয়ে প্রবাসী শ্রমিক হিসাবে দিন-রাত খেটে এই দেশে রেমিটেন্স পাঠান। আর তার ফলেই জিডিপি বাড়ে। তার ফলেই বাজেট বাড়ে। আমাদের সমৃদ্ধি বাড়ে। কিন্তু যারা শ্রম দিয়ে সম্পদ তৈরি করেন তাদের অধিকার পাওয়া যায় না। তাদের মর্যাদা দেওয়া হয় নাই।
তিনি বলেন, আজকে এই অভ্যুত্থানের পরে শ্রম সংস্কার কমিশন গঠিত হয়েছে। নতুন করে শ্রম আইন হবে। আমরা পরিষ্কার করে অন্তর্বর্তী সরকারকে বলতে চাই, যারা শ্রম দেবে তাদের শ্রমের স্বীকৃতি থাকতে হবে। আপনারা কেবলমাত্র শিল্প প্রতিষ্ঠানের একটা সংজ্ঞা তৈরি করে তারপর আপনারা ইউনিয়ন করার অধিকার দেবেন। শিল্প প্রতিষ্ঠান যদি না হয় তাহলে শ্রমের কোনো স্বীকৃতি নাই, মূল্য নাই। এটা কোনো আইন-বিধান হতে পারে না।
জোনায়েদ সাকি বলেন, আজকে প্রাইভেট কার চালকদের জন্য কোনো নীতিমালা নেই। তারা যে শ্রম দেয়, তাদের কোনো কর্মঘণ্টা নেই। তাদের কোনো নিয়োগপত্র ও সুনির্দিষ্ট বেতন নেই। তাদের কোনো সাপ্তাহিক ছুটি নেই। রাস্তায় যদি দুর্ঘটনার শিকার হন অথবা রাস্তাঘাট ব্যবস্থাপনার কাঠামোগত আয়োজনের কারণে দুর্ঘটনার নামে একটা ভয়ানক বিপদজনক ফাঁদে পড়েন- তখন তাদের মৃত্যু হয় অথবা আহত হয়ে তারা পঙ্গু হয়ে যান। তাদের পরিবারকে দেখার কেউ থাকে না।
ঢাকা প্রাইভেট কার চালক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহীদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান ও ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তাসলিমা আখতার, বাংলাদেশ বহুমুখী শ্রমজীবী ও হকার সমিতির সভাপতি বাচ্চু ভূইয়া, সংগঠনের বিশেষ উপদেষ্টা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বিলকিস নাসিমা রহমান প্রমুখ।
