টেকসই গণতন্ত্র-জবাবদিহিতা ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়: মাসুদ সাঈদী
পিরোজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৫৬ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পার হলেও দেশে এখনো টেকসই গণতন্ত্র, জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল রাজনৈতিক কাঠামো এবং জবাবদিহিমূলক একটি রাষ্ট্র গড়ে ওঠেনি বলে মন্তব্য করেছেন পিরোজপুর-১ আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত এমপি পদপ্রার্থী, ইন্দুরকানী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদী।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক ক্ষমতা, জবাবদিহিতা ও অর্থনৈতিক ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য আনতে না পারলে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের উন্নয়নযাত্রায় বর্তমানে সুশাসন, অর্থনীতি ও ক্ষমতার ভারসাম্যে সংস্কার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুশাসন ও কার্যকর নীতিগত সংস্কার ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।
পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার ৩নং দেউলবারি উপজেলার বিলডুমুরিয়া পদ্মডুবি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নাজিরপুর উপজেলার উন্নয়নে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বুধবার বিকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাসুদ সাঈদী এসব কথা বলেন।
মাসুদ সাঈদী বলেন, টেকসই সংস্কারের জন্য গণতান্ত্রিক পরিবেশ, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও অংশীজনদের সক্রিয় অংশগ্রহণ অপরিহার্য। সংস্কার কোনো একক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সম্ভব নয়। এটি একটি সামগ্রিক প্রক্রিয়া, যা সরকারকেই করতে হবে। এজন্য বিচার, সংস্কার ও উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী ও এগিয়ে নিতে একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রয়োজন।
তিনি বলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সরকারের জবাবদিহিতা অতি গুরুত্বপূর্ণ। জবাবদিহিতা দায়িত্বশীলতা বৃদ্ধি করে, দুর্নীতি রোধ করে, স্বৈরাচারকে প্রতিহত করে। মনে রাখা দরকার যে, কোনো সরকারই জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে নয়। জবাবদিহিতার মানসিকতা সুশাসনের ক্ষেত্রে একটি সহায়ক শক্তি। আর আল্লাহভীরু লোক ছাড়া জবাবদিহির মানসিকতা সম্পন্ন লোক পাওয়া দুষ্কর।
যেহেতু প্রশাসনের দুর্নীতি, স্বৈরাচারী মনোভাব ও আইন বহির্ভূত কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ করতে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা প্রয়োজন তাই এগুলো ছাড়া সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়, আর জবাবদিহিতা ও সুশাসন পরকালে বিশ্বাসী লোক ছাড়া বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বলে উল্লেখ করেন মাসুদ সাঈদী।
মতবিনিময় সভায় মাসুদ সাঈদী আরও বলেন, দুর্নীতি দেশে ক্যানসারের মতো ছড়িয়ে পড়েছে। দুর্নীতি বন্ধে প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও ঐক্য। রাজনৈতিক অঙ্গীকার ছাড়া দুর্নীতি বন্ধ করা প্রায় অসম্ভব। চলমান নির্বাচনি ব্যবস্থার মাধ্যমেও দেশে দুর্নীতির বিস্তার ঘটে। কারণ রাজনৈতিক দলগুলো দলীয় প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ত্যাগ, সততা ও যোগ্যতার চাইতে অর্থনৈতিক শক্তিকেই বেশি মূল্যায়ন করে বেশি। এর ফলে দুর্নীতিবাজরা সর্বস্তরে প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি বন্ধে এবার সারা দেশে সৎ ও যোগ্য প্রার্থীদের নির্বাচিত করতে হবে। মনে রাখতে হবে, সুযোগ বারবার আসে না। এবার দেশের জনগণ আর কোনো দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, স্বৈরাচারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। জনগণের এ আকাঙ্ক্ষা পূরণে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে, সমাজে ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এই লক্ষ্যে ইসলামপন্থিদের সরকার গঠনের জন্য বেশি বেশি করে সংসদে পাঠাতে হবে।
সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে উল্লেখ করে মাসুদ সাঈদী বলেন, সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। ন্যায্যতা ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে সবারই নিজেদের গণ্ডি পেরিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।
মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- নাজিরপুর উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, উপজেলা সেক্রেটারি সাবেক সেনা কর্মকর্তা কাজী মোসলেহ উদ্দিন, উপজেলা সমাজকল্যাণ সম্পাদক আনিস মল্লিক, উপজেলা যুব বিভাগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, দেউলবারি ইউনিয়ন আমির জাহাঙ্গীর হোসেন, সেক্রেটারি আব্দুল কাইয়ুম, নাজিরপুর বাজার সমিতির সভাপতি আল আমিন খান, নাজিরপুর প্রেস ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ জাহিদ হক, দেউলবারি ইউনিয়নের সাবেক আমির মো. এনামুল হক, শ্রীরামকাঠি ইউনিয়ন যুব বিভাগের সভাপতি মশিউর রহমান।
