Logo
Logo
×

রাজনীতি

‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ সনদের বাস্তবায়নকেই অনিশ্চয়তার মুখে ফেলছে’

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৪৭ পিএম

‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ সনদের বাস্তবায়নকেই অনিশ্চয়তার মুখে ফেলছে’

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) এক বিবৃতি পাঠায় গণসংহতি আন্দোলন।

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ সনদের বাস্তবায়নকেই অনিশ্চয়তার মুখে ফেলছে বলে মন্তব্য করেছে গণসংহতি আন্দোলন। 

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে দলের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, কমিশনের কিছু সুপারিশ বৈঠকের আলোচনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং কিছু সুপারিশ গণতান্ত্রিক রীতিনীতির পরিপন্থি। এতে করে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে এবং জুলাই সনদের বাস্তবায়ন আশঙ্কার মুখে পড়ছে।

নেতৃবৃন্দ জানান, শুধু গণভোটের মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়ন বা ভিন্নমতের মীমাংসা করার বিষয়ে কোনো ঐকমত্য হয়নি। এ ধরনের প্রক্রিয়া বরং অনৈক্য ও বিভেদের জন্ম দেবে এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে বাধা সৃষ্টি করবে।

তারা আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষরিত জুলাই সনদে ভিন্নমতের বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল। সেই ভিন্নমত নিরসনের উপায় হিসেবে জাতীয় নির্বাচনের ইশতেহারে এসব ইস্যু তুলে ধরে জনগণের মতামত নেওয়ার বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছিল। কিন্তু ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে ভিন্নমত বাস্তবায়নের পদ্ধতি সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট নির্দেশনা নেই। যেসব বিষয়ে মাসের পর মাস রাজনৈতিক দলগুলো আলোচনা ও বিতর্ক করেও সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি, সেসব ইস্যু গণভোটে নিরসনের চিন্তা বাস্তবসম্মত নয় বলেও তারা মন্তব্য করেন। 

গণসংহতি আন্দোলনের নেতারা বলেন, ভিন্নমত চাপিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া মোটেই গণতান্ত্রিক নয়। এতে গণতান্ত্রিক অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হবে এবং জাতীয় ঐক্য দুর্বল হবে। তারা সতর্ক করে বলেন, যদি নির্বাচিত সংসদের ক্ষমতা খর্ব করে অন্তর্বর্তী সরকারের আদেশে সংবিধান সংস্কার করা হয়, তবে তা টেকসই হবে না এবং সংবিধান সংস্কার পরিষদ নাম দিয়ে সেটিকে রাবার স্ট্যাম্পে পরিণত করার আশঙ্কা থাকবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের মূল ভিত্তি ছিল জনগণের অনুমোদন গ্রহণ। জনগণের মতামত প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে আগামী সংসদকে সংবিধান সংস্কারের ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব গণসংহতি আন্দোলন শুরু থেকেই দিয়ে আসছে। কিন্তু ঐকমত্য কমিশন সেই প্রস্তাব যথাযথভাবে বিবেচনা করেনি এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য গঠনের সুযোগ তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে।

নেতারা আরও বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান এবং এর পরবর্তী ঐকমত্য প্রক্রিয়া দলগুলোর ঐক্যের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছিল। সেই ঐক্যই ছিল বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের পথরেখা বাস্তবায়নের মূল চালিকা শক্তি। অথচ কমিশনের সুপারিশগুলোতে সেই ঐক্যের প্রতিফলন নেই। 

তারা অভিযোগ করেন, কমিশনের সুপারিশমালা দেখে মনে হচ্ছে কমিশন সনদ বাস্তবায়নে গণতান্ত্রিক পদ্ধতির প্রতি আস্থা রাখছে না। বরং কোনো বিশেষ পক্ষকে খুশি করতে জাতীয় ঐক্যকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে। এই পরিস্থিতি দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও জাতীয় স্বার্থের জন্য উদ্বেগজনক বলেও মন্তব্য করেন তারা।

শেষে গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়—দলগুলোর সঙ্গে অবিলম্বে আলোচনায় বসে উদ্ভূত পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান করতে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম