বগুড়া-৭
হারানো দুর্গ পুনরুদ্ধার করতে চায় বিএনপি
নাজমুল হুদা নাসিম, বগুড়া
প্রকাশ: ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ১০:০৮ পিএম
ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণার পরপরই বগুড়ায় ধানের শীষ আর দাড়িপাল্লার লড়াই নিয়ে আলোচনা জমে উঠেছে। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান বগুড়ায় বরাবর বিএনপির শক্তিশালী অবস্থানে ছিল। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলাম নিরবচ্ছিন্ন সাংগঠনিক কার্যক্রমের মাধ্যমে জেলা শক্তিশালী সাংগঠনিক অবস্থান তৈরি করেছে। তবে আসন্ন ভোটযুদ্ধে জামায়াতকে মোকাবিলা করতে হবে বেগম খালেদা জিয়ার।
বগুড়া-৭ আসনটি গাবতলী ও শাজাহানপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মভূমির আসনটিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বরাবরই প্রার্থী হন। তাই এটিকে ভিআইপি আসন বলেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
যদিও সংসদে এ আসনের প্রতিনিধিত্ব করেননি খালেদা জিয়া। প্রতিবার উপনির্বাচনের জন্য ছেড়ে দিয়েছেন। স্বাধীনতার পর থেকে সংসদ ও উপনির্বাচন মিলে ১৫ বার ভোট হয়েছে। এতে বিএনপি ১০ বার, আওয়ামী লীগ দুবার, জাতীয় পার্টি দুবার এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী একবার নির্বাচিত হন। আগামী নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন খালেদা জিয়া। তার হাত ধরে হারানো দুর্গ পুনরুদ্ধার করতে চায় বিএনপি। ইতিমধ্যে আসনটিতে গোলাম রব্বানীকে প্রার্থী করেছে জামায়াতে ইসলামী। বিএনপি চেয়ারপারসনের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী তিনি। আসনটিতে জেতার আশা করছেন জামায়াতের এই প্রার্থী।
স্বাধীনতার পর গত ১৫টি জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও উপনির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী ১০ বার, আওয়ামী লীগ দুবার, জাতীয় পার্টি দুবার এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী একবার নির্বাচিত হন। আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এখন পর্যন্ত বিএনপি ও জামায়াত মাঠে রয়েছে। বিপুলসংখ্যক মামলা মাথায় নিয়ে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির অনেক নেতা আত্মগোপনে রয়েছেন। অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এখনো সক্রিয় নন। জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাসদ ও গণতন্ত্র মঞ্চ একক প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। দলীয় নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা অনুযায়ী এই আসনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রার্থিতা ঘোষণা করা হয়েছে। সবাই চান তিনি বিগত নির্বাচনের মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুন। তাই কোনো নেতা এখানে প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে কিছু বলতে চান না। এরপরও কোনো কারণে তিনি প্রার্থী না হলে অন্তত দুজন বিএনপির টিকিট প্রত্যাশা করবেন বা তিনি আসনটি ছেড়ে দিলে উপনির্বাচনে তারা প্রার্থিতা চাইবেন
বগুড়া-৭ আসনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জিয়াউর রহমানের জন্মভূমির এ আসনটি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার। যদি তিনি ছেড়ে দেন তবে উপনির্বাচনে প্রার্থী হবেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, উপনির্বাচনে কয়েকবারের এমপি হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু এবং গাবতলী উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোরশেদ মিল্টন। তবু সেটা জিয়া পরিবারের ইচ্ছা অনুসারে। তবে এ আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বিএনপি ও জামায়াত প্রার্থীর মধ্যে। ভোটাররা বলছেন, গাবতলী-শাজাহানপুর আসনে আওয়ামী লীগ বা তার শরিক দলগুলোর তেমন ভোট নেই। বিএনপি ও জামায়াতের বিপুল ভোট রয়েছে। এ দুটি দলের প্রার্থীর মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। তবে খালেদা জিয়া বা তারেক রহমান প্রার্থী হলে অন্য কোনো দল বা স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচিত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
এ আসনে প্রার্থী যারা
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য গোলাম রব্বানী, ইসলামী আন্দোলনের অধ্যাপক সবুজ ইসলাম সফিক, বাসদের শহিদুল ইসলাম ও গণতন্ত্র মঞ্চের প্রার্থী জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের নেতা মনিরুজ্জামান বাচ্চু।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু এবং জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও গাবতলী উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোরশেদ মিল্টন বলেন, তাদের আসনটি জিয়া পরিবারের। এখানে চেয়ারপারসনকে প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তিনি কোনো কারণে আসনটি ছেড়ে দিলে উপনির্বাচনে তারা প্রার্থিতা চাইবেন।
বগুড়া শহর জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক আ.স.ম. আবদুল মালেক বলেন, বগুড়া-৭ আসনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গোলাম রব্বানী একক প্রার্থী। নির্বাচনে তাদের প্রার্থী জয়ী হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

