Logo
Logo
×

রাজনীতি

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিক্রিয়া

আইনের শাসনভিত্তিক দেশ বিনির্মাণের পথে তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৫৬ এএম

আইনের শাসনভিত্তিক দেশ বিনির্মাণের পথে তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি

ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের আদেশকে স্বাগত জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। তারা বলছেন, এই রায় গণঅভ্যুত্থানোত্তর আইনের শাসনভিত্তিক কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে একটি তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি। সোমবার গণমাধ্যমে দেওয়া তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তারা এ কথা বলেন।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, এই রায় গণ-অভ্যুত্থানোত্তর আইনের শাসনভিত্তিক কাক্সিক্ষত বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে একটি তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি। বিশেষত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় নির্ধারণ জনগণের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। আন্দোলনের সময় যারা শহীদ হয়েছেন, যারা আহত হয়েছেন, যারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ও গুমে যারা নিখোঁজ হয়েছেন- তাদের পরিবারগুলোর জন্য এই রায় ন্যায়বিচারের আশ্বাসও বটে। ঘোষিত রায় আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে অবস্থান করলেও কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন-এটাই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি।

গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ সাজা হয়েছে। তবে একটি মামলার রায়েই খুশি হয়ে বসে থাকলে বা আনন্দ প্রকাশ করলে চলবে না। বাকি মামলাগুলোও দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে। কারণ অতীতে দেখা গেছে সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গে মামলাগুলোর বিচারের গতি থেমে যায়। তিনি আরও বলেন, রায়ে মামলার রাজসাক্ষী চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়াটা ঠিক হয়নি। তিনি যে অপরাধ করেছেন, সেই বিচারে তার এই সাজা খুবই নগণ্য।

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম বলেছেন, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এই রায়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের আশা-আকাক্সক্ষা পূরণ হয়েছে। তিনি বলেন, এই রায়ের মাধ্যমে শহীদ পরিবার ন্যায়বিচার পেয়েছে। শেখ হাসিনার বানানো আদালতে তার বিচার হওয়ায় এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে, অন্যায় করলে তাকে শাস্তি পেতেই হবে। শুধু শেখ হাসিনাকে সাজা দিলেই হবে না আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মী ও দল হিসাবে আওয়ামী লীগের বিচার হতে হবে।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, এই রায়ে প্রমাণিত হয়েছে, স্বৈরশাসকরাও আইনের ঊর্ধ্বে নয়। ভবিষ্যতে কেউই আর যেন রাষ্ট্রক্ষমতা ব্যবহার করে নারকীয় শাসন এবং হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত করতে না পারে, এই বিচার সেক্ষেত্রে বড় মাইলফলক হিসাবে কাজ করবে।

রায়কে শোষকের বিরুদ্ধে শোষিতের বিজয়ের ইতিহাসের পুনঃ সত্যায়ন হিসাবে উল্লেখ করেছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। তিনি বলেন, ‘অহংকার পতনের মূল’ ‘সত্য সমাগত মিথ্যা অপসৃত’ ‘চোরের দশদিন গৃহস্থের একদিন’- এসবকে যারা এতদিন শুধু ‘নীতিবাক্য’ মনে করতেন, বা মনকে ‘প্রবোধ দেওয়ার শব্দগুচ্ছ’ ভাবতেন, তারা আজ বুঝতে পারছেন এসব নীতিবাক্য বারবার ঐতিহাসিকভাবে সত্য প্রমাণিত। মনে রাখতে হবে এসব শব্দগুচ্ছ শুধু অতীত জালেমদের জন্য নয়, ভবিষ্যতে যদি কেউ জালেম হন, তাদের জন্যও সত্য হয়ে ফিরে আসবে।

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে ক্ষমতা দখলকারী স্বৈরশাসকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়েছে। গত ৫৪ বছরে শাসকগোষ্ঠীকে বিচারের মুখোমুখি করার নজির এদেশে নেই। প্রধানমন্ত্রী থেকে এখন ফাঁসির মঞ্চে শেখ হাসিনা। এই রায় আগামীতে শাসকদের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। যারা গণতন্ত্রের মুখোশে স্বৈরতন্ত্র কায়েম করে জনগণের টুঁটি চেপে ধরার চেষ্টা করবেন, তাদের জন্য এটি একটি দৃষ্টান্ত। তবে উদ্বেগের জায়গাটা হচ্ছে শুধু শেখ হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এ রকম দু’চারজনের ফাঁসি হলেই দেশ থেকে ফ্যাসিবাদ নির্মূল হবে না।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমদ বলেন, রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিফলিত হয়েছে। মজলুম জনতার প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। এই রায় আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসের মাইলফলক হয়ে থাকবে। রাষ্ট্রকে ব্যবহার করে জনতার ওপরে দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে এই রায় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও আল্লামা সাজেদুর রহমান। এক যৌথ বিবৃতিতে তারা ফ্যাসিস্টদের বিচার বানচাল করতে ইন্ডিয়ার ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে বলেও উলে­খ করেন।

ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, শেখ হাসিনার মতো ঘৃণ্য অপরাধীর বিচার না হলে দেশের মানুষ হতাশ হতো। তাই তারা এই রায়ে খুশি। এতে করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম বলেন, এই রায় বিচারিক অগ্রগতির একটা নিদর্শন এবং আশা করছি অন্যসব অপরাধের বিচারও যেন ন্যায়সংগতভাবে ও যথাসম্ভব দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করা হয়। বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক কমরেড মাসুদ রানা বলেন, জুলাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। আজকের রায়ের পর আমরা আশা করি জুলাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ছাত্রজনতাসহ নিরপরাধ মানুষকে হত্যাকারী নরঘাতকের মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রমাণ হলো যত ক্ষমতাধরই হোন না কেন জুলুম করে কেউ পার পেতে পারে না। স্বৈরাচারী দাম্ভিক হাসিনার এই পরিণাম আগামী দিনের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ছাত্রজনতাসহ নিরপরাধ মানুষকে হত্যাকারী নরঘাতকের মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রমাণ হলো যত ক্ষমতাধরই হোন না কেন জুলুম করে কেউ পার পেতে পারে না। স্বৈরাচারী দাম্ভিক হাসিনার এই পরিণাম আগামী দিনের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম বলেন, এই রায় বিচারিক অগ্রগতির একটা নিদর্শন এবং আশা করছি অন্যসব অপরাধের বিচারও যেন ন্যায়সংগতভাবে ও যথাসম্ভব দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করা হয়। বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক কমরেড মাসুদ রানা বলেন, জুলাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। আজকের রায়ের পর আমরা আশা করি জুলাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম