Logo
Logo
×

রাজনীতি

সিপিডির সংলাপে তথ্য

আট সংকটে জ্বালানি খাত, ভুল পথে বাড়ছে বোঝা

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৫, ১১:০০ পিএম

আট সংকটে জ্বালানি খাত, ভুল পথে বাড়ছে বোঝা

দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আটটি সংকট রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- নিয়ন্ত্রক সংস্থার আর্থিক সংকট, গ্যাস সরবরাহের ঘাটতি, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে ব্যর্থতা, ভুল উপায়ে জ্বালানির মূল্য সমন্বয় এবং জ্বালানি রূপান্তরের গতি কমে যাওয়া। আর ভুল উপায়ে জ্বালানি সমন্বয়ের কারণে আর্থিক খাতে বোঝা আরও ভারি হচ্ছে। 

বৃহস্পতিবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত সংলাপে এ তথ্য উঠে আসে। সংলাপের বিষয় ছিল- ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। সংলাপে ভার্চুয়ালি অংশ নেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। বক্তৃতা করেন গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র পরিচালক ফয়সাল সামাদ, কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম এবং সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা সহযোগী হেলেন মাশিয়াত প্রিয়তি।

খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বিগত সরকারের সময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে যে বিপুল বিনিয়োগ হয়েছে, তার বিপরীতে জ্বালানি প্রাপ্যতা বেড়েছিল। কিন্তু একই সঙ্গে আমরা দেখেছি গুণমানসম্পন্ন বিদ্যুৎ-জ্বালানি পাওয়া বা জ্বালানি রূপান্তরের বিষয় নিশ্চিত হওয়া-সেই কাজগুলো হয়নি। বরং এই সময়গুলোতে ব্যাপক লুটপাট হতে দেখেছি। অর্থের অপচয় হতে দেখেছি, সুশাসনের অভাবের মতো বড় সমস্যা বিগত সরকারের আমলে দেখেছি। তিনি বলেন, আমাদের প্রত্যাশা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সুশাসনগত দুর্বলতা অন্তর্বর্তী সরকার চিহ্নিত করবে। জ্বালানি রূপান্তরের জায়গায় নেবে কার্যকর ভূমিকা। নীতিকাঠামোতে আরও বেশি ভারসাম্য ও দীর্ঘমেয়াদি টেকসই জ্বালানির বিষয়ে তারা গুরুত্ব দেবে। 

মূল প্রবন্ধে হেলেন মাশিয়াত প্রিয়তি বলেন, আমাদের বিভিন্ন জ্বালানি যেমন তেল বা গ্যাসের দাম সমন্বয় করা হচ্ছে। সেটা আমাদের কাছে মনে হয়েছে কিছুটা ভুল উপায়ে করা হচ্ছে। এতে আমাদের আর্থিক বোঝা আরও ভারী হচ্ছে। ফলে অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক ঋণের কিস্তি বকেয়া হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৮টি সংকট রয়েছে। 

প্রবন্ধ উপস্থাপনায় বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের রাজনৈতিক আকাক্সক্ষা তিনটি শূন্য (শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য নেট কার্বন নিঃসরণ)। সেদিক বিবেচনায় আমরা ২ দশমিক ৫০ শূন্যে দাঁড়িয়েছি। কারণ আমাদের বাজেট জ্বালানি খাতে কয়লার নির্ভরতার কথা বলছে, এলএমজি আমদানির কথা বলছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে প্রাধান্য দেওয়া হয়নি। বাজেটে এলএমজি আমদানির ক্ষেত্রে ভ্যাট অব্যাহতি দেখতে পেলেও নবায়নযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রে কোনো প্রণোদনা দেওয়া হয়নি। বরং নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বরাদ্দ কমেছে।

তিনি বলেন, এসব যখন আমরা দেখছি, তখন বলতে হচ্ছে শূন্য নেট কার্বন নিঃসরণের ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার উলটো পথে হাঁটছে। যেখানে এক পা এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, সেখানে এক পা পিছিয়ে যাচ্ছে। আমরা এগিয়ে যেতে পারতাম যদি বাজেটে প্রো-ফসিল ফুয়েল না হয়ে প্রো-রিনিউয়েবল ফুয়েল প্রাধান্য পেত। 

এবার মাত্র ৭টি প্রকল্পে নবায়নযোগ্য জ্বালানি দেওয়া হয়েছে, গত বছর ৪টি প্রকল্পে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ছিল। সেদিক থেকে অবশ্য ইতিবাচক বলা যায়। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নে কম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যদিও বাজেট বক্তৃতায় বিশেষ তহবিলের কথা এসেছে। যেখানে ৭০০ কোটি টাকার তথ্য এসেছে, তা যথেষ্ট নয়।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম