ভূমিকম্পের বিষয়ে কুরআনে কী লেখা আছে, উঠে এলো আজহারীর পোস্টে
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৪৯ পিএম
ইসলামী বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী। ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে অনুভূত হওয়া ভূমিকম্পের ঘটনায় গভীর আবেগ ও আত্মসমালোচনামূলক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইসলামী বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী। শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ আত্মসমালোচনা করেন। ভূমিকম্প নিয়ে কুরআনে কী লেখা আছে সে বিষয়টিও তিনি পোস্টে উপস্থাপন করেন।
২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই ঢাকার আশুলিয়ার বাইপাইলে ফের ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। কম্পন রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র। আজ সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে এই কম্পন রেকর্ড করা হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল তিন দশমিক তিন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রে দায়িত্বরত পেশগত সহকারী নিজাম উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘এটি একটি মাইনর ভূমিকম্প। এর উৎপত্তিস্থল বাইপাইল।’
গতকালের ভূমিকম্পের বিষয়ে মিজানুর রহমান আজহারীর লেখাটি যুগান্তরের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলে-
‘সকালের ভূমিকম্পে যখন আমাদের বিল্ডিংটা দুলছে, তখন কিছু মূহূর্তের জন্য একেবারে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। আতঙ্কে বুকটা কাঁপছিল। আর কয়েকটা ঝাঁকুনি দিলে ঢাকায় হয়ত আজকে লাশের মিছিল হতো। নিমেষেই গোটা শহর পরিণত হতো নিস্তব্ধ এক গোরস্থানে! দয়াময় এই যাত্রায় আমাদের রক্ষা করেছেন। প্রভু হে, তুমি বড়ই মেহেরবান!
এমন অপরিকল্পিত নগরী, সারি সারি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, দুর্বল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট; আল্লাহর দয়া ছাড়া বাঁচার কোনো উপায় আমাদের নাই। এ দুর্যোগগুলো আমাদের জন্য গভীর সতর্কবার্তা। গোটা জনপদবাসীকে সামান্য এক ঝাঁকুনি দিয়ে তিনি রিমাইন্ডার দিচ্ছেন। বোঝাতে চাচ্ছেন— বাড়াবাড়ি সীমালঙ্ঘন যা-ই করো না কেন, নাটাই কিন্তু আমার হাতে। চাইলে-ই যে কোনো মুহূর্তে তোমাদের আমি ধুলিস্যাৎ করে দিতে পারি। তছনছ করে দিতে পারি তোমাদের এই চোখ ধাঁধানো সভ্যতা।
কুরআনের ভাষ্যমতে— মানুষকে দুর্বল করে সৃষ্টি করা হয়েছে। আসলে ভূমিকম্প আমাদের অহংকার মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে আসে। আমাদের অক্ষমতা দেখিয়ে দিতে আসে। আসে মহাশক্তিধর, মহাপ্রতাপশালী রাজাধিরাজ আল্লাহর সামনে আমরা কতোটা অসহায় আর নিরুপায় তার নমুনা হিসেবে। তিনি তো সেই মহাপরাক্রমশালী সত্তা যার মোকাবিলায় কেউ মাথা তুলতে পারে না, যার সিদ্ধান্তসমূহের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানোর সাধ্য করো নেই এবং যার ক্ষমতার সামনে সবাই অসহায় ও শক্তিহীন। আল্লাহু আকবার!
জুমার দিনের কতো প্ল্যান নিয়ে কিছু লোক আজ ঘর থেকে বেরিয়েছিল। কিন্তু এখন তারা না ফেরার দেশে। আমাদের বেঁচে থাকাটাই যে আমাদের প্রতি আল্লাহর কত বড় দয়া; তা আমরা উপলব্ধি করি না। আচ্ছা বলুন তো, মৃত্যু কি আমাদের জীবনের পরিকল্পনায় থাকে? জীবনের এতো এতো কাজ, ব্যস্ততা, নানা পরিকল্পনা এগুলো কি আমরা মৃত্যুকে স্মরণ রেখে করি? অথচ মৃত্যুর নির্ধারিত সময় আসলে তো আমাদের সব ব্যস্ততাই শেষ হয়ে যাবে। আমিহীন দুনিয়ায় সবকিছু চলবে ঠিক আগের মতোই।
কার মৃত্যু কখন, কীভাবে আসবে সেটা কেউ জানে না। আমাদের উচিত সর্বদা প্রস্তুত থাকা। তওবা করে রবের কাছে ফিরে আসা। একনিষ্ঠভাবে তার-ই কাছে সমর্পিত হওয়া।
এ ভূমিকম্প তো কিছুই না। আসল ভূমিকম্প তো সেটা— যখন জমীন প্রকম্পিত হবে প্রবল প্রকম্পনে। আর পর্বতমালা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে পড়বে। অতঃপর তা বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত হবে। [সূরা আল ওয়াকিয়াহ, ৪-৬]’
