Logo
Logo
×

খেলা

যে ৪ কারণে রিয়ালের কাছে এমন হার বার্সেলোনার

নেয়ামত উল্লাহ

নেয়ামত উল্লাহ

প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৪৭ এএম

যে ৪ কারণে রিয়ালের কাছে এমন হার বার্সেলোনার

রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে নিজের ছায়া হয়ে ছিলেন লামিন ইয়ামাল/সংগৃহীত

মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোয় রিয়াল মাদ্রিদের কাছে পাত্তাই পায়নি বার্সেলোনা। স্কোরলাইন বলছে ২-১ ব্যবধানের হার, তবে সেটা বার্সার পারফর্ম্যান্সের প্রতি যেন সুবিচার করতেই পারছে না। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কাতালানরা ছিল নিজেদের ছায়া হয়ে, যার ফলাফল এমন এক হার। 

এই হারের কারণগুলো কী কী, চলুন দেখে নেওয়া যাক–

১। ‘হাইলাইন’ রক্ষণ আর কাজে দিচ্ছে না
গেল মৌসুমে এই হাইলাইন রক্ষণ দিয়েই কত রাজা উজির মেরেছিল বার্সেলোনা। এই রিয়াল মাদ্রিদকেই তো হারিয়েছে ৪ ম্যাচে, করেছিল ১৬ গোল।

তবে ‘নেতা’ ইনিগো মার্তিনেজের চলে যাওয়ার পর থেকেই বার্সেলোনার রক্ষণ বেশ নড়বড়ে। তবু বার্সা কোচ হানসি ফ্লিক দলকে খেলাচ্ছেন হাইলাইন রক্ষণ নিয়েই।

বিষয়টা যে কাজে দিচ্ছে না, সেটা খুব পরিষ্কার। পিএসজি ম্যাচে বার্সা ভুগেছে, এর আগে পরে লিগেও বেশ ভুগেছে। এরপর সান্তিয়াগো বার্নাবেউতেও একই দশা হলো বার্সার হাইলাইন রক্ষণের।

বার্সার হাইলাইন রক্ষণ গত রাতে বারবার ভেঙেছে রিয়াল মাদ্রিদ/সংগৃহীত

গোল দুটোকে এক পাশে রাখলেও বার্সা রক্ষণ, বিশেষ করে জুলস কুন্দে একাধিকবার খাবি খেয়েছেন এই ‘হাইলাইন’ রক্ষণ সামলাতে গিয়ে। একাধিকবার ভিনি জুনিয়র, কিলিয়ান এমবাপ্পেরা বার্সা রক্ষণের পেছনের ফাঁকা জায়গায় ত্রাস ছড়িয়েছেন। গোল হয়তো আসেনি, কিন্তু সেসব আক্রমণ বার্সার মনোবলেও আঘাত হেনেছে বেশ। 

একটা বিষয় পরিষ্কার, চলতি মৌসুমে বার্সার রক্ষণ একাট্টা হয়ে হাইলাইন সামলাতে পারছে না। তার নজির আবারও দেখা গেল এল ক্লাসিকোয়।

২। লামিন ইয়ামাল: যত গর্জে, তত বর্ষে না
ম্যাচের আগে লামিন ইয়ামাল রিয়াল মাদ্রিদকে নিয়ে বিস্ফোরক এক মন্তব্যই করে বসেছিলেন। বলেছিলেন, ‘রিয়াল শুধু চুরি করে আর অভিযোগই করতে পারে।’ 

সেই কথার পর তাকে বার্নাবেউতে তাকে কেউ ফুলেল শুভেচ্ছা নিশ্চয়ই জানাবে না! বল পায়ে গেলেই দুয়ো শুনতে হচ্ছিল তাকে। সেসব থামাতে তো বটেই, দলকে জেতাতে হলেও একটা কালজয়ী পারফর্ম্যান্স উপহার দিতে হতো। কিন্তু তিনি সেটা পারেননি। তিনি ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। 

৯০ মিনিট খেলেছেন তিনি, কিন্তু এই সময়ে তিনি ছিলেন মাঠের সবচেয়ে বাজে খেলোয়াড়। ৭৯.২ শতাংশ সফল পাস ছিল তার। ২০ বার বল হারিয়েছেন তিনি। সবচেয়ে বড় বিষয়, প্রতিপক্ষ রক্ষণে একবারের জন্যও মনে হয়নি যে তিনি কিছু একটা করতে পারেন। দলের সবচেয়ে বড় তারকা যখন এমন পারফর্ম্যান্স দেবেন, তখন দল ভুগবে, সেটাই তো স্বাভাবিক!

৩। রাফিনিয়া-লেভান্ডভস্কির অনুপস্থিতি
চোটের কারণে রাফিনিয়া আর রবার্ট লেভান্ডভস্কিদের কাউকেই এই ম্যাচে পায়নি বার্সেলোনা। ইয়ামালের নিস্প্রভ থাকার বড় কারণও এটাই। ফেররান তরেস আর মার্কাস র‍্যাশফোর্ডরা ছিলেন বটে, তবে তাদের খেলার ধরন মোটেও রাফিনিয়া-লেভাদের মতো নয়।

May be an image of football, soccer, crowd and text that says 'YAMA 7 शा 1'
রাফিনিয়া ম্যাচ শেষে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন রিয়াল ফরোয়ার্ড ভিনির সঙ্গে/সংগৃহীত 

ইয়ামালের মতো তারাও অন্যের ফেলে যাওয়া ফাঁকা জায়গা ধরে খেলতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। যার ফলও পুরো ম্যাচে মোটে ০.৬২ কাঙ্ক্ষিত গোল; মানে পুরো ম্যাচ খেলে নিজেদের গুণে এই সংখ্যক গোলের ত্রাসই সৃষ্টি করতে পেরেছে বার্সা। 

৪। হানসি ফ্লিকের অভাব
কোচের প্রভাব ফুটবলে বিশাল। তবে এই বার্সেলোনায় হানসি ফ্লিকের প্রভাবটা যেন একটু বেশিই। ডাগ আউটে তিনি ছিলেন না গতকাল। জিরোনার বিপক্ষে জোড়া হলুদ কার্ড দেখে এই ম্যাচে নিষিদ্ধ ছিলেন তিনি। তার এই অভাবটা বার্সেলোনা টের পেয়েছে হাড়ে হাড়ে। 

হানসি ফ্লিককে গত রাতে ম্যাচটা দেখতে হয়েছে গ্যালারি থেকে/সংগৃহীত

এই ম্যাচে বার্সার ডাগআউটের দায়িত্বে থাকা সহকারী কোচ মার্কাস সোর্গ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারেননি। প্রথমার্ধে রিয়ালের কাছে পাত্তা না পাওয়া দলটায় কোনোপ্রকার পরিবর্তন না এনেই খেলিয়েছেন ৭৫ মিনিট পর্যন্ত। কৌশলগত পরিবর্তনও আনতে দেখা যায়নি তাকে। 

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম