Logo
Logo
×

দশ দিগন্ত

ফোনালাপ ফাঁস

ফল পাল্টাতে চাপ দেন ট্রাম্প

সেনাবাহিনীকে নিয়ে নোংরা খেলা বন্ধ করুন : সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের খোলা চিঠি

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২১, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনের জয় এখনো মেনে নেননি বিদায়ি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফলাফল উল্টে দিতে এমন কোনো কদর্য কৌশল নেই যা তিনি করছেন না। এবার আরও এক ধাপ নিচে নামলেন তিনি। নির্বাচনের ফল পাল্টে দিতে এক শীর্ষ নির্বাচনী কর্মকর্তাকে ফোন করে চাপ দিয়েছেন। এমনকি ‘কাজ’ না করলে ‘কঠোর পরিণতি’র হুমকিও দেন। ট্রাম্পের এই ফোনালাপ ফাঁস হয়ে গেছে। ফলে মার্কিন রাজনীতিতে ফের তোলপাড় শুরু হয়েছে। এদিকে নির্বাচনী ফলাফল মেনে ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানিয়ে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন সাবেক মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা। ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত ওই চিঠিতে ট্রাম্পকে উদ্দেশ করে তারা বলেছেন, নির্বাচন শেষ, আপনি হেরেছেন, এখন সেনাবাহিনীকে নিয়ে নোংরা খেলা বন্ধ করুন। এই চিঠিতে সই করেছেন ডিক চেনি, জেমস ম্যাটিস, মার্ক এসপার, লিওন প্যানেটা, ডোনাল্ড রামসফিল্ড, উইলিয়াম কোহেন, চাক হেগেল, রবার্ট গেটস, উইলিয়াম পেরি এবং অ্যাশটন কার্টার।

খবরে বলা হয়, জর্জিয়া রাজ্যের ফলাফল পাল্টে দিতে শনিবার রাজ্যস্তরের এক শীর্ষ নির্বাচনী কর্মকর্তা সেক্রেটারি অব স্টেট ব্র্যাড রাফেনসপার্জারকে ফোন করেন ট্রাম্প। ট্রাম্প ব্র্যাডকে জর্জিয়ায় জেতার মতো ভোট খুঁজে বের করতে বলেন। কারণ তিনি বিশ্বাস করেন না, জর্জিয়ায় জো বাইডেনের কাছে তিনি হেরেছেন। পরদিন রোববার প্রথম ওই ফোনালাপ ফাঁস করে দেয় প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট।

জর্জিয়ায় এবারই প্রথম কোনো ডেমোক্র্যাট প্রার্থী রিপাবলিকান প্রার্থীর চেয়ে বেশি ভোট পেয়েছে। রাজ্যটির ইতিহাসে এমন ঘটনা অভূতপূর্ব। নির্বাচনের আগে জর্জিয়া জেতার ব্যাপারে ট্রাম্প যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি। ১১ হাজার ৭৭৯টি ইলেকটোরাল ভোট বেশি পেয়েছেন বাইডেন। আর তাতেই চটেছেন ট্রাম্প। প্রাথমিকভাবে তিনি দাবি করেছিলেন, ডেমোক্র্যাটরা ভোটে কারচুপি করেছে। কিন্তু সেই দাবি ধোপে না টেকায় জর্জিয়ার রাজ্য সরকারের ওপর চোটপাট করতে শুরু করেন তিনি। ওই ফোন কলই এর প্রমাণ। ওই ফোন কলে শোনা যাচ্ছে, ব্র্যাড এবং তার আইনজীবীকে রীতিমতো হুমকি দিচ্ছেন ট্রাম্প। বলছেন, তিনি বিশ্বাস করেন না, জর্জিয়ায় তিনি হেরেছেন। যেভাবেই হোক তার জন্য ভোট জোগাড় করে দিতে হবে। প্রয়োজনে আবার গণনা করতে হবে। জর্জিয়া স্টেট তার চাই। ব্র্যাড ও তার আইনজীবী একাধিকবার ট্রাম্পকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, ওইভাবে ভোট জোগাড় করা সম্ভব নয়। ট্রাম্প যে কারচুপির কথা বলছেন, তার কোনো প্রমাণ নেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ট্রাম্প কোনো কথাই মানতে রাজি হননি।

ট্রাম্পের এই ফোন কল রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ বিষয়টিকে ছেলেমানুষি বলে উড়িয়ে দিলেও অন্যপক্ষের বক্তব্য, ট্রাম্প নিজেই আসলে কারচুপির চেষ্টা করেছেন। যেভাবে ব্র্যাডকে তিনি হুমকি দিয়েছেন তা অভূতপূর্ব ঘটনা। জর্জিয়া জিতলেও অবশ্য ট্রাম্প জিততে পারবেন না। ওই ভোট ট্রাম্পের পক্ষে গেলেও জাতীয়ভাবে বাইডেন এগিয়ে থাকবেন। আগামী ২০ তারিখ প্রেসিডেন্ট হিসাবে বাইডেনের শপথ নেওয়ার কথা। তার আগে ট্রাম্পের এই ফোন কল শেষ মুহূর্তের মরিয়া চেষ্টা হিসাবে দেখা হচ্ছে। তবে ফোনালাপ নিয়ে তোলপাড় শুরু হতেই বিষয়টি অস্বীকারের চেষ্টা করেছেন ট্রাম্প। এক টুইট বার্তায় তিনি বলেছেন, জর্জিয়ায় ভোটারদের জালিয়াতি নিয়ে কথা বলেছিলাম। তবে ব্র্যাড রাফেনসপার্জার নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো কথা বলতে রাজি হননি। ব্র্যাড রাফেনসপার্জার ফিরতি টুইট বার্তায় বলেন, ‘শ্রদ্ধার সঙ্গে বলছি, প্রেসিডেন্ট, আপনি যা বলছেন, তা ঠিক নয়।’

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম